Advertisement
E-Paper

মনের কথাতেই সাত পাকে বাঁধা  

স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পঁচিশের অনুপ দরবার ময়নার দক্ষিণ আনুখা গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় চানাচুর কারখানার শ্রমিক অনুপের সঙ্গে ময়নার রাসের মেলায় আলাপ হয়েছিল পূর্ব দক্ষিণা গ্রামের বাসিন্দা সুমিত্রা বর্মনের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:১৮
নব দম্পতি: শনিবার অনুপ ও সুমিত্রা। নিজস্ব চিত্র

নব দম্পতি: শনিবার অনুপ ও সুমিত্রা। নিজস্ব চিত্র

দু’জনেরই মুখে কথা ফোটে না। শুনতেও পান না। কিন্তু ভালবাসার মানুষটাকে মনের কথা ‘বলতে’ কোনও রকম কষ্ট হয়নি ময়নার বাসিন্দা অনুপের। আর অনুপের সেই কথা শুনতেও কোনও অসুবিধা হয়নি সুমিত্রার। শনিবার তমলুকের নিমতৌড়িতে এক হল অনুপ এবং সুমিত্রার চার হাত। নব দম্পতিকে আশীর্বাদ করলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে কয়েকশো আমন্ত্রিত।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পঁচিশের অনুপ দরবার ময়নার দক্ষিণ আনুখা গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় চানাচুর কারখানার শ্রমিক অনুপের সঙ্গে ময়নার রাসের মেলায় আলাপ হয়েছিল পূর্ব দক্ষিণা গ্রামের বাসিন্দা সুমিত্রা বর্মনের। সুমিত্রা বাড়িতেই টেলারিংয়ের কাজ করে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। মেলার আলাপের পর থেকেই একে অন্যের প্রতি জন্মায় ভাললাগা। এ দিন তাঁদের বিয়ে হল নিমতৌড়ি উন্নয়ন সমিতি চত্বরে। পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণেই সাত পাকে বাঁধা পড়লেন দু’জনে।

নিমতৌড়ির প্রতিবন্ধীদের ওই সংস্থার সম্পাদক যোগেশ সামন্ত বলেন, ‘‘দুজনে দুজনকে চিনতেন। একে অপরকে ভালও লাগত। কিন্তু বলার সুযোগ ছিল না। পরে অবশ্য পারিবারিক কথাবার্তার মাধ্যমে বিয়ে পাকা হয়।’’ অনুপের বাবা দুলাল দরবার এ দিন বলেন, ‘‘ছেলের বিয়ে দেব বলে মেয়ে খুঁজছিলাম বহু দিন ধরে। কিন্তু ও মূক-বধির। এমন ছেলের জন্য পাত্রী কোথায় পাব সে নিয়ে চিন্তুত ছিলাম।’’ কিন্তু এ দিন ছেলেকে বিয়ের পিঁড়িতে বসে খই পোড়ানো, সিঁদুর দেওয়ার মতো সমস্ত নিয়ম পালন করতে দেখে সেই চিন্তা দূর হয়েছে দুলালের।

অনুপ-সুমিত্রার বিয়েতে আমন্ত্রিত ছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী থেকে কয়েকশো এলাকাবাসী। তাঁদের পাতে ছিল মাছ- মাংস-দই-মিষ্টির মত হরেক পদ। বিয়েতে আলমারি, বিছানা সামগ্রী-সহ সোনার গয়না তুলে দেওয়া হল নিমতৌড়ি উন্নয়ন সমিতির পক্ষ থেকে।

মেয়ের বিয়ের এত আয়োজন দেখে সুমিত্রার বাবা বিকাশ বর্মন বলেন, ‘‘মেয়ে শুনতেও পায় না। কথাও বলতে পারে না। ওর ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় ছিলাম। আজ তা দূর হল।’’

আর এত লোকের ভিড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে হাসির রেখা দেখা গেল অনুপ আর সুমিত্রা মুখে।

Marriage Physically impaired Tamluk Suvendu Adhikary
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy