দিঘা।
একদিন পরেই বড়দিন। বড়দিনের ছুটিতে অনেকেই সৈকত শহরে ভিড় জমান পিকনিক করতে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে দিঘায় পিকনিক করার জায়গা পাওয়াই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। জায়গা না পেয়ে সমুদ্রের ধারে ঝাউ জঙ্গলে পিকনিকের জেরে সৈকত শহরের দূষণের মাত্রা বাড়লেও প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ পরিবেশপ্রেমীদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউ দিঘায় ‘পার্মানেন্ট পিকনিক স্পট’ এলাকায় বরাবর পিকনিক করতেন পর্যটকেরা। বছর দুয়েক আগে ওই জায়গায় পিকনিক নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। ওই এলাকায় বহুতল ভবন তৈরি ও গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা হয়েছে। ফলে পিকনিক করতে এসে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। দিন কয়েক আগে মহিষাদল থেকে ১৫ জনের একটি পর্যটক দল পিকনিক করতে দিঘায় আসে। সেই দলের একজন পিণ্টু প্রধান অভিযোগ করেন, সরকারিভাবে নির্দিষ্ট কোনও জায়গা নেই। তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে ওশিয়ানা ঘাটের কাছে খোলা আকাশের নীচে পিকনিক করেন।
স্থানীয়রা জানান, উপযুক্ত জায়গা না থাকায় ওল্ড দিঘার সরকারি হাসপাতালের সামনে বিস্তীর্ণ এলাকায় ঝাউবনে পর্যটকেরা পিকনিক করে। ওশিয়ানা থেকে উদয়পুর সীমানা পর্যন্ত সমুদ্রের কাছেই যত্রতত্র পিকনিকের আসর বসে। মেরিনা ঘাটের কাছেও ইদানীং পিকনিক হচ্ছে। এর ফলে পিকনিকের বর্জ্য এবং উচ্ছিষ্টে সৈকত শহরে দূষণের মাত্রা বাড়ছে। স্থানীয় পরিবেশপ্রেমী সত্যব্রত দাসের দাবি, দিঘায় পর্যটকেরা পিকনিক করার জন্য আসেন। ওল্ড দিঘা ও নিউ দিঘায় পৃথকভাবে পিকনিক স্পট নির্দিষ্ট করা হোক। অন্যথায় পর্যটকেরা ইচ্ছেমতো পিকনিক করায় দিঘার পরিবেশ ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসে দিঘায় পর্যটকদের পিকনিকের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু তারপরেও কোনও জায়গা নির্দিষ্ট করা বা পিকনিকের জন্য প্রাথমিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা—কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও, দিঘা -শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘হেলিপ্যাড ময়দানের উল্টোদিকে যেখানে গাড়ি পার্কিং করা হয়, সেখানে স্থায়ীভাবে পিকনিক কমপ্লেক্স করা হবে। পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হবে। আপাতত বড়দিন ও নতুন বছর উপলক্ষে পর্যটকেরা ওই জায়গাতেই পিকনিক করতে পারবেন।
পিকনিকের জন্য সৈকত শহর যাতে দূষিত না হয় সে সতর্ক ডিএসডিএ কর্তৃপক্ষ। সমুদ্রসৈকতের ধার বরাবর ঝাউ জঙ্গলে পিকনিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে থার্মোকল, প্লাস্টিক ব্যবহারের উপর কড়া নজরদারি চালানো হবে। নিয়মভঙ্গকারীদের জরিমানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসডিএ। এর জন্য ৭ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল সৈকত শহরে নজরদারি চালাবে।
জেলা সভাধিপতি এবং ডিএসডিএ-র সদস্য দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘পর্যটকরা যাতে স্বচ্ছন্দে পিকনিক করতে পারেন তার জন্য স্থান চিহ্নিত এবং পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। ওই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পর্ষদের বিধি মেনে হেলিপ্যাডের উল্টোদিকের জায়গায় পিকনিক করা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy