অস্বাভাবিক মৃত্যু নয়, খুন। এই দাবিতে দোষীদের গ্রেফতার চেয়ে থানায় চড়াও হয়ে ভাঙচুর ও পুলিশ কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে মৃতের আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। হলদিয়ার ভবানীপুর থানায় বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনায় চারজন পুলিশ কর্মী আহত হন। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। খোকন অধিকারী নামে ওই পুলিস কর্মীকে রাতেই কলকাতায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পাল্টা পুলিশের লাঠিতে তাঁদের কয়েকজন জখম হয়েছেন দাবি করে রাতেই হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে বিরাট বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। থানায় যারা হামলা চালিয়েছে, সিসি টিভির ফুটেজ দেখে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২১ জুন ভোরে ভবানীপুর থানার বারঘাসিপুরের বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি সোলেমান সেখের (২৩) দেহ বাড়ির কাছে পুকুর থেকে উদ্ধার হয়। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। ১৯ জুন থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। মৃতের পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ করা হলে তদন্তে নামে পুলিশ।
গোলমালের সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। মেদিনীপুরে ময়নাতদন্তের পর দেহ ভবানীপুর থানায় আনা হয়। কিন্তু দেহ নিতে গিয়ে মৃতের পরিবারের লোকজন দাবি করেন, সোলেমানকে খুনের ঘটনায় দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। এরই মধ্যেই গ্রামে খবর পৌঁছে গেলে আরও লোকজন এসে থানায় হামলা করে। ভাঙচুরের পাশাপাশি চলে ইটবৃষ্টি। বাধা দিতে গেলে ইটের আঘাতে চার জন পুলিশ কর্মী জখম হন। খবর পেয়ে হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্ব বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিক্ষোভকারীদের পাল্টা দাবি, তাঁরা খুনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করলে পুলিশ তাঁদের উপরে চড়াও হয়। তারই প্রতিবাদে তাঁরা পথ অবরোধ করেন। পুলিশের মারে কয়েক জন জখমও হয়েছেন।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, থানার সিসি টিভির ফুটেজ দেখে মনে হয়েছে হামলার পরিকল্পনা করেই ইট আনা হয়েছিল। এ দিন ধৃত তিনজনকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।