Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
রয়েছে আইনি জটিলতাও

নজরদারি সত্ত্বেও দাঁড়ি পড়ছে না পোস্ত চাষে

পোস্ত চাষ রুখতে অভিযান চলছে। আবগারি দফতর বিশেষ নজরদারিও চালাচ্ছে। কিন্তু তার ফাঁকে ঘাটাল মহকুমা জুড়ে চলছে পোস্ত চাষ। ঘটনায় উদ্বিগ্ন আবগারি দফতরও।

ঘাটালের একটি গ্রামের পোস্ত খেতে অভিযান পুলিশের। নিজস্ব চিত্র।

ঘাটালের একটি গ্রামের পোস্ত খেতে অভিযান পুলিশের। নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:১৭
Share: Save:

পোস্ত চাষ রুখতে অভিযান চলছে। আবগারি দফতর বিশেষ নজরদারিও চালাচ্ছে। কিন্তু তার ফাঁকে ঘাটাল মহকুমা জুড়ে চলছে পোস্ত চাষ। ঘটনায় উদ্বিগ্ন আবগারি দফতরও। দফতরের জেলা আধিকারিক অশোক দে বলেন, “খবর পেলেই অভিযান চালিয়ে পোস্ত গাছ নষ্ট করে দিচ্ছি।” ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান বলেন, “পোস্ত চাষের কড়া আইন সমন্ধে ধারণা দিতে শিবির করা হবে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পোস্ত চাষ যে বেআইনি সে কথা কারও অজানাও নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন ব্লকে প্রকাশ্যে পোস্ত-গাঁজা চাষ হচ্ছে। মাঝে মধ্যে আবগারি দফতর খবর পেয়ে অভিযানে নামে। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতির কোনও বদল হয় না। গত কয়েক দিনে ঘাটালের চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বান্দিপুর পঞ্চায়েত এলাকায় অভিযান চালিয়ে কয়েক বিঘা জমির পোস্ত চাষ নষ্ট করা হয়েছে। বিডিও শ্বাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী আবগারি দফতর, পুলিশ ও কৃষি দফতরকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় বান্দিপুর, চাদা, মেঠানি, জামবেড়, রামগড়-সহ বিভিন্ন গ্রামে অভিযানও চালান।

পোস্ত চাষ বন্ধ করতে গত বছর থেকেই বিশেষ উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। পঞ্চায়েত অফিস থেকে ব্লক, মহকুমা শাসকের কাযার্লয়, থানা-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে টাঙানো হয়েছে ফেস্টুনও। বড় বড় হোর্ডিংয়ের মাধ্যমেও চলছে প্রচার। পোস্ত চাষের অপরাধে অভিযুক্তের দশ বছর থেকে সবার্ধিক কুড়ি বছর কারাদণ্ডের কথাও উল্লেখ রয়েছে।

এখন প্রশ্ন, কড়া আইন সঙ্গে অভিযান ও প্রচার করা সত্ত্বেও কেন বন্ধ হচ্ছে না এই বেআইনি চাষ?

আবগারি দফতর সূত্রে খবর, পোস্ত গাছের ফল চিরে তার রস সংগ্রহ করে নানা ধরনের মাদক তৈরি হয়।চড়া দামেও বিক্রি হয়। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেই ফেললেন, “মাদক কারবারিরাই চাষিদের এই চাষে সাহায্য করেন। চাষের সমস্ত উপকরণ-সহ পদ্ধতি সবই ওই চক্রের সদস্যরাই সরবরাহ করে। চাষিরা জমি দিলেই হাতে নগদ মোটা টাকা পেয়ে যান। প্রশাসনের একাংশও জড়িত।” আবার, কড়া আইন থাকলেও মামলা করার আগে রয়েছে বিস্তর জটিলতাও। আইন এমনই যে অভিযানে গিয়ে জমির মালিককে গ্রেফতার করা খুব কঠিন।

নিয়মানুযায়ী, অভিযানের পর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে জমির দাগ নম্বর দিয়ে জমির মালিকের নাম পাওয়ার পর তবেই মামলা করা যায়। এছাড়াও নষ্ট করার পর তার নমুনা নিয়ে দিল্লিতে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়। আর এই দীর্ঘ জটিলতার কারণেই মামলা করতেও দেরি হয় ।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবগারি দফতরেরই এক কর্তার কথায়, “এই আইন কিছুটা শিথিল করা জরুরি। অভিযানের সময়ই জমির মালিককে যদি গ্রেফতার করা যায়, তবে কিছুটা হলেও এই চাষ বন্ধ করা সম্ভব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Poppy Seeds surveillance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE