E-Paper

মঞ্চে উত্তম ‘প্রতিবাদী দাদা’, বিধায়কে মুগ্ধ গ্রামবাসী 

উত্তম জানাচ্ছেন, ছোটবেলা থেকেই যাত্রাপালায় অভিনয়ের শখ রয়েছে তাঁর। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বেশ কয়েকবার যাত্রায় অভিনয় করেছেন।

কেশব মান্না

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৩ ০৯:০৯
যাত্রা মঞ্চে উত্তম বারিক।

যাত্রা মঞ্চে উত্তম বারিক। —নিজস্ব চিত্র।

রাজনাীতির মঞ্চ সামলে অভিষেক যাত্রার রঙ্গমঞ্চে!

রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলে অভিনেতা নেতানেত্রী-বিধায়কের অভাব নেই। দেব, জুন মালিয়া, সোহম চক্রবর্তী থেকে শুরু করে মিমি চক্রবর্তী, সায়নী ঘোষ, নুসরত জহানের মতো বহু অভিনেতা-অভিনেত্রীকেই দেখা গিয়েছে সিনেমার পর্দার জগৎ থেকে রাজনীতির ময়দানে নামতে। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরে ছবিটা উল্টো। এখানের জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা বিধায়ক উত্তম বারিককে দেখা যাচ্ছে রাজনীতি থেকে অভিনয়ের জগতে যেতে।

বুধবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচিত হয়েছেন উত্তম। আর বৃহস্পতিবার রাতেই দেশপ্রাণ ব্লকে নিজের আদি বাড়ি গোটসাউড়ি গ্রামে আয়োজিত একটি যাত্রাপালায় তাঁকে অভিনয় করতে দেখা গেল। স্থানীয় সূত্রের খবর, স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে গ্রামের একটি ক্লাবের উদ্যোগে যাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। যাত্রার নামও অভিনব— ‘মা রেখেছি মাইনে করে, বউ রেখেছি পায়ে ধরে’। এই যাত্রাপালায় সংসারে পুত্রবধূর দাপট এবং শাশুড়ি দুর্দশার বিষয় দেখানো হয়েছে। সেখানে প্রতিবাদী এক দাদার চরিত্রে যাত্রায় অভিনয় করেছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি।

উত্তম জানাচ্ছেন, ছোটবেলা থেকেই যাত্রাপালায় অভিনয়ের শখ রয়েছে তাঁর। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বেশ কয়েকবার যাত্রায় অভিনয় করেছেন। কয়েক মাস আগে শাসকদলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের সঙ্গে 'কন্যাশ্রী' সিনেমায় দিঘায় গিয়ে শ্যুটিং করেছেন উত্তম। তবে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক কাজকর্ম সামলে গত চার-পাঁচ বছর ধরে যাত্রায় অভিনয় করার সুযোগ হচ্ছিল না। এবার গ্রামে আয়োজিত যাত্রায় অভিনয়ের ডাক পেয়ে তিনি আ তা ফেরাননি। সবেমাত্র পঞ্চায়েত ভোট শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই ব্যস্ততা কাটিয়ে উত্তম স্থানীয় শিল্পীদের সঙ্গে একাধিকবার মহড়া সেরেছেন। উত্তম বলছেন, ‘‘বিধায়ক এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি হলেও সমাজের একজন হয়ে বুঝতে পেরেছি মানুষের নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। তাই সাংসারিক জীবনে মানুষ যাতে বাবা-মা এবং পরিবারের সকলকে উপযুক্ত সম্মান দেন, সেই বার্তা তুলে ধরতে এবার যাত্রাপালায় অভিনয় করলাম।’’

দীর্ঘদিন বাদে ঘরের ছেলের অভিনয় দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন গ্রামবাসীও। বৃহস্পতিবার তাঁর আসার খবর নিশ্চিত হতেই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। হুড খোলা গাড়ি চাপিয়ে উত্তমকে কাঁথি থেকে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়িতে। রাস্তার দুদিকে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি লোক জেলা পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানান।

তবে যাত্রার মঞ্চে জেলা পরিষদের সভাধিপতির অভিনয় দেখার পর মুগ্ধ দর্শকরা। নেপাল ভূঁইয়া এবং আবেদ আলি খানের মতো গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘দাদার মুখে রাজনীতির বক্তৃতা অনেক শুনেছি। তবে মঞ্চে দাঁড়িয়ে যাত্রায় যে এত সুন্দর ডায়ালগ এবং গান গাইতে পারেন, তার অভিজ্ঞতা এই
প্রথমবার হল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Contai

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy