Advertisement
E-Paper

জল মেপে খুলবে হল

খুলছে না পূর্ব মেদিনীপুরে কাঁথির ‘শ্রীরূপা’ এবং সাতমাইলের ‘প্রফুল্ল’-ও, জানাচ্ছেন দুই হলের মালিক নন্দদুলাল দাস। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধীরে ধীরে মানুষ হলমুখী হবেন, এমনটাই মনে করছেন অভিনেতা তথা মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র অনির্বাণ ভট্টাচার্য।

আরুণি মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০০:২৭
হলদিয়ার শপিং মলে বন্ধ অবস্থায় মাল্টিপ্লেক্স। নিজস্ব চিত্র

হলদিয়ার শপিং মলে বন্ধ অবস্থায় মাল্টিপ্লেক্স। নিজস্ব চিত্র

হল তো খুলবে। দর্শক আসবেন তো! সিনেমাওয়ালা তাকিয়ে একে অন্যের দিকে। টানা সাড়ে ছ’মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর অবশেষে সিনেমা হল খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে শর্ত হল, হলের মোট আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি আসন ভর্তি করা যাবে না। সঙ্গে মেনে চলতে হবে সামাজিক দূরত্ববিধি। হল নিয়মিত স্যানিটাইজ়ও করতে হবে।

সরকারের অনুমতি মিললেও, এখনই হল খোলার ব্যাপারে আশার কথা শোনাচ্ছেন না পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের হল মালিকরা। তাঁদের যুক্তি, ‘অন্য’ হলের ব্যবসার অঙ্কটা একটু দেখে নিয়ে, তারপর হল খোলার সিদ্ধান্ত নেবেন। বুধবার রাত পর্যন্ত তমলুকের ‘শ্যামাশ্রী’, চন্দ্রকোনার ‘রয়্যাল’ এবং রামজীবনপুরের ‘দেবলিন’ ছাড়া দুই মেদিনীপুরের আর কোনও হল মালিকই ‘ইতিবাচক’ সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।

আনলক পর্বে প্রশাসনিক কড়াকড়ি ধীরে ধীরে শিথিল হলে, অনেকেই মনে করেছিলেন এ বার সম্ভবত সিনেমা হলগুলি খুলবে! কিন্তু দুই মেদিনীপুরের প্রায় প্রতিটি হল মালিকেরই সংশয়— ৫০ শতাংশ আসন নিয়ে সিনেমা হল খোলার যে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাতে টাকা উঠবে তো? মেদিনীপুর শহরের ‘হরি’ সিনেমার মালিক নাওয়াল থারড সাফ জানাচ্ছেন, আপাতত হল খোলার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই। নাওয়ালের কথায়, ‘‘করোনা-কালে দর্শক সিনেমা দেখতে আসবে না। তাই খরচও উঠবে না। আমরা বেশিরভাগ সময় হিন্দি ছবি চালাই। কিন্তু এখন কোনও হিন্দি ছবি মুক্তি হচ্ছে না।’’ একই মত রেলশহরের গেটবাজারের ‘বম্বে সিনেপ্লেক্স’-এর মালিক অশ্বিন গোকুলদাসের। তিনি বলছেন, ‘‘এখানে হিন্দি ছবি তুলনায় ভাল চলে। এই সময় কোনও হিন্দি ছবি মুক্তি পাচ্ছে না। ফলে হল খুললেও দর্শক হবে না।’’

খুলছে না পূর্ব মেদিনীপুরে কাঁথির ‘শ্রীরূপা’ এবং সাতমাইলের ‘প্রফুল্ল’-ও, জানাচ্ছেন দুই হলের মালিক নন্দদুলাল দাস। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধীরে ধীরে মানুষ হলমুখী হবেন, এমনটাই মনে করছেন অভিনেতা তথা মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তিনি বলছিলেন, ‘‘এই মুহূর্তে সিনেমা হল এবং চলচ্চিত্র ব্যবসার ভবিষ্যৎ পুরোটাই নির্ভর করে রয়েছে দর্শকের উপর। দর্শক যদি চান, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ফের ঘুরে দাঁড়াবে। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওটিটি কনটেন্টের জনপ্রিয়তা একটু কমবে। মানুষও হয়তো বাইরে বার হবেন। সরকারের কাছে আমার অনুরোধ, সিনেমা হলেও কিন্তু মানুষ কাজ করেন। সেটা একটা কর্মসংস্থানও বটে। তাই হলগুলি যে খোলে এবং চলে— সেটা নিশ্চিত করা হোক।’’ (তথ্য সহায়তা: দেবমাল্য বাগচী, কৌশিক সাঁতরা, সৌমেশ্বর মণ্ডল, কেশব মান্না, রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য)সাম্প্রতিক সময়ে ওয়েব সিরিজ এবং ওয়েব ফিল্মের জনপ্রিয়তার দেখে অনেক সিনে-বিশেষজ্ঞেরই প্রশ্ন তুলেছিলেন, হল খুললেও সিনেমার সেই পুরনো বাজার থাকবে তো? এই প্রসঙ্গে ‘প্রিয়া এনটারটেনমেন্ট’-এর কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত মনে করেন, পর্দায় সিনেমা দেখা এবং স্মার্টফোনে ওয়েব সিরিজ দেখার মধ্যে কোনও তুলনাই আসতে পারে না। বলছিলেন, ‘‘হলে বড় পর্দায় সিনেমা দেখে দর্শক যে মজা পাবেন, সেটা স্মার্টফোনে পাওয়া সম্ভব নয়। ‘সাউন্ড অফ মিউজিক’, ‘শোলে’ কিংবা ‘বাহুবলী’— এই ছবিগুলি বড় পর্দাতেই দেখতে হবে। কিছু হাতেগোনা ছবি হয়তো স্মার্টফোনে মানুষ দেখছেন। কিন্তু লার্জার-দ্যান-লাইফ কোনও চরিত্রকে দেখতে গেলে হলেই যেতে হবে।’’ আগামিকাল শুক্রবার থেকে কলকাতার ‘প্রিয়া’-সহ বিভিন্ন জেলায় ‘বায়োস্কোপ’-এর কিছু হল খুলে গেলেও হলদিয়ার বায়োস্কোপ এখনই খুলছে না, জানালেন অরিজিৎ। তিনি বলছিলেন, ‘‘আশপাশের হলগুলির কী অবস্থা হয়, সেটা একটু দেখে নিয়ে হলদিয়ার বায়োস্কোপটা খোলার কথা ভেবেছি। আর খুললেও যতটা সম্ভব কম কর্মী দিয়ে চালানোর চেষ্টা করব। গত কয়েক মাসে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতি কোনও দিন পূরণ হবে না।’’

Cinema Hall Pandemic
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy