বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বহু দিন ধরেই তাঁদের আন্দোলন চলছে। সেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা এ বার রাজ্যের এক মন্ত্রীকে আঙুল উঁচিয়ে বললেন, “আপনাদের বেতন কত বেড়েছে? সবার বেতন বাড়ছে। এমএলএ-এমপিদের ভাতা বৃদ্ধি হচ্ছে। আইসিডিএসের ভাতা বাড়াতেই জ্বালা ধরে!” ‘পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা কল্যাণ সমিতি’-র গড়বেতা ৩ ব্লক কমিটির স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি ছিল শুক্রবার চন্দ্রকোনা রোডে ব্লকের সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের (সিডিপিও) অফিসে। সেখানেই স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের উপভোক্তা দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোকে সামনে পেয়ে সরব হন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। সেই মুহূর্তের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে।
শ্রীকান্ত বলেন, “ঘেরাও, বিক্ষোভ কিছু নয়। ওঁরা স্মারকলিপি দিচ্ছিলেন। কাছে গিয়ে বললাম, ‘আপনাদের কী সমস্যা বলুন।’ ওঁরা বলেছেন। শুনেছি। যথাস্থানে জানাব।” অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের সংগঠনের গড়বেতা ৩ ব্লক সভানেত্রী স্মৃতিকণা রামানি বলেন, “নিজেদের ন্যায্য দাবিগুলো মাননীয় মন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেছি।”
অভিযোগ, সিভিক এবং আশা কর্মীদের ভাতা বাড়ানো হলেও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের ক্ষেত্রে হয়েছে উল্টো। মাসে সাম্মানিক এক হাজার টাকা বাড়িয়েও পরে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ৬০০ টাকা ও সহায়িকাদের ৪০০ টাকা করে কেটে নেওয়া হয়। এখন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা মাসে ন’হাজার টাকা, আর সহায়িকারা মাসে ৬৮৫০ টাকা পান। অন্য দিকে, ২০২৪ সালের মার্চে রাজ্যের বিধায়ক ও মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধির আইনে সই করেন রাজ্যপাল। সেই বছর মে থেকে বিধায়ক ও মন্ত্রীদের ৪০ হাজার টাকা করে মূল বেতন বেড়েছে। ভাতা ও অন্য সুযোগ মিলিয়ে এক জন বিধায়ক এখন মাসে পান এক লক্ষ ২১ হাজার টাকা, মন্ত্রী পান প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।
এই প্রসঙ্গ তুলেই সরব হন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকারা। মন্ত্রীকে তাঁরা বলেছেন, “ক্লাবগুলোকে দুর্গাপুজোর জন্য ৮৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে এক লক্ষ টাকা করে দিয়েছে। আমাদের টাকা কেন কমবে? বাজেটে ফোন দেওয়ার কথা বললেও পাইনি। আমরা কি এতই অবহেলার পাত্রী?” মন্ত্রীও পাল্টা বলেন, “কেন্দ্র বাজেটে আইসিডিএস প্রকল্পে টাকা কমিয়ে দিয়েছে। যেটুকু ভাতা বেড়েছে, তা রাজ্য সরকারের প্রকল্পের উপরে দাঁড়িয়ে। আপনাদের চাহিদাগুলো নিশ্চয়ই রাজ্য সরকার পূরণ করবে।” তবে বিজেপির মেদিনীপুর জেলার সহ-সভাপতি শঙ্কর গুছাইতের দাবি, “কেন্দ্র যে টাকা দিচ্ছে, তার থেকেও কাটমানি নিচ্ছে তৃণমূল।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)