পাঁচশো-হাজারের নোট বাতিলের ধাক্কা ছিলই। এ বার একশো টাকার নোটে ছাপার সাল না থাকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াল পশ্চিম মেদিনীপুরে।
লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে চন্দ্রকোনার এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলেছিলেন চন্দ্রকোনা কলেজের শিক্ষক মনমোহন গুরু। ফের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মেদিনীপুর প্রধান ডাকঘরের মাসিক আমানতে সেই একশোর নোট জমা দিতে গিয়ে বিপদে পড়েন তিনি। ডাকঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, ওই নোট নেওয়া যাবে না। কারণ, ১৪টি একশো টাকার নোটের মধ্যে ১০টিই ২০০৫ সালের আগের নোট। যা ‘নন ইস্যু’ নোট বলে চিহ্নিত করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
ওই ডাকঘর থেকে টাকা তুলে বেরিয়ে আসা বিপ্লব সেনও দেখলেন, তাঁর কাছে থাকা একটি একশো টাকার নোটও সন্-বিহীন। বিপ্লববাবু আবার মনমোহনবাবুর বন্ধু। দু’জনে মিলে প্রধান ডাকঘরের আধিকারিক বিকাশকান্তি মিশ্রের গিয়ে প্রশ্ন তোলেন, “যে নোট নিজেরা নিচ্ছেন না, তা দিচ্ছেন কেন?” অবশেষে বিকাশবাবুর হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে। বিকাশবাবু বলেন, “আমরা যে নোট পাচ্ছি তার মধ্যে এ রকম নোট থেকে যাচ্ছে। পরে পদ্ধতি মেনে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে পাঠাবো।”
কিন্তু ২০০৫-এর আগের নোট ব্যাঙ্ক থেকে দেওয়া হচ্ছে কেন?
চন্দ্রকোনার ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার গজানন প্রধানের জবাব, “মেদিনীপুর শাখা যে নোট দিয়েছে, তা-ই গ্রাহকদের দিয়েছি।” মেদিনীপুর শাখার চিফ ম্যানেজার প্রদীপ কেশরীর পাল্টা প্রশ্ন, “আমাদের শাখা থেকেই গ্রাহক ওই নোট পেয়েছেন, এমন নিশ্চয়তা কোথায়? গ্রাহকও তো পুরনো নোট বের করে এ সব বলতে পারেন।”
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মেদিনীপুর শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার শক্তিকুমার ঘোষ অবশ্য জানাচ্ছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২০০৫ সালের আগে ছাপা সব নোট (যাতে কোনও সালের উল্লেখ নেই) বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঠিকই। তবে ওই নোট অচল নয়। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের ব্যাঙ্কে ওই নোট ফেরত নিয়ে নতুন নোট দেওয়া হয়। প্রতি বৃহস্পতিবার এ জন্য আলাদা কাউন্টার খোলা হয়।’’ তবে এই নোট-সঙ্কটের এই মুহূর্তে ওই পরিষেবা আপাতত দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান এই ব্যাঙ্ক-কর্তা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের তা শুরু হবে। এবং তখন চাইলে যে কেউ সাল-বিহীন পুরনো নোট পাল্টে নিতে পারেন।