ভোররাতে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চে নিথর পড়েছিলেন অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি। অনেকক্ষণ ধরে দেহ পড়ে থাকলেও রেলের তথা স্টেশন মাস্টারের তরফে কাউকে দেখা যায়নি। শেষ পর্যন্ত যাত্রীদের কাছ থেকে ঘটনা জানার পর স্টেশন কর্তৃপক্ষ ও রেলপুলিশ যখন ব্যবস্থা নিল ততক্ষণে পাঁচ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। রেলের তরফে চিকিৎসক ডাকা হলে তিনি এসে পরীক্ষা করে প্রৌঢ়কে মৃত ঘোষণা করেন।
সোমবার সকালে কোলাঘাট ষ্টেশনের ৩ নম্বর প্লাটফর্মে এমন ঘটনায় রেলের বিরুদ্ধে অমানবিকতার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ উগরে দেন যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, স্টেশনে দেহ পড়ে থাকলেও তাঁরা না জানানো পর্যন্ত রেলের তরফে কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। জানার পর যখন চিকিৎসক ডাকা হল, ততক্ষণে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আরও আগে যদি রেল ব্যবস্থা নিত তাহলে হয়তো প্রৌঢ় বেঁচেও যেতে পারতেন বলে অনেকে মনে করছেন।
বেশ কিছুক্ষন ধরে স্টেশনে প্রৌঢ়ের দেহ পড়ে থাকার কথা স্বীকার করেছেন কোলাঘাটের ষ্টেশন ম্যানেজার শঙ্কর ঘোষদস্তিদার। যদিও এ বিষয়ে তাঁর সাফাই, ‘‘প্ল্যাটফর্মে থাকা ওই ব্যক্তিকে দেখে আমাদের মৃত বলে মনে হয়েছিল। তাই রেলের নিয়মানুযায়ী ওই ব্যক্তি মৃত কিনা পরীক্ষা করে ঘোষণার জন্য আমরা দফতরের চিকিৎসক ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। চিকিৎসক এসে পরীক্ষা করে ওই ব্যক্তিকে মৃত বলার পর তা ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।’’
রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, দক্ষিণ পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় কোলাঘাট স্টেশন সংলগ্ন ফুল বাজারকে কেন্দ্র করে ভোর রাত থেকেই জমজমাট থাকে। সোমবার ভোর ৪টে নাগাদ ষ্টেশনের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের একটি বেঞ্চে বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তিকে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় কয়েকজন। তাঁর নাক দিকে রক্ত পড়ছিল বলে জানান স্থানীয়রা। তাঁরা ষ্টেশনে থাকা রেলপুলিশকে ঘটনাটি জানান। জানানো হয় ষ্টেশন ম্যানেজারের অফিসেও। এরপর ষ্টেশন ম্যানেজার ওই ব্যক্তিকে দেখতে যান। ওই ব্যক্তিকে মৃত ভেবে নিয়মানুযায়ী চিকিৎসক ডাকা হয় তাঁকে মৃত ঘোষণার জন্য। কিন্তু কোলাঘাট ষ্টেশনে রেলের নিজস্ব কোনও চিকিৎসক না থাকায় খড়্গপুর থেকে রেলের চিকিৎসক আসার অপেক্ষায় থাকতে হয়। এ ভাবেই কেটে যায় প্রায় ৫ ঘণ্টা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস মাইতি বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকার সময় দেখি নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য ষ্টেশন কর্তৃপক্ষ বা রেল পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। এ নিয়ে রেলের যুক্তি একেবারেই অমানবিক। আগে ব্যবস্থা নিলে কে বলতে পারে উনি বেঁচে যেতেন না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy