Advertisement
E-Paper

নজরদারি বা নুলিয়া, নেই কিছুই

পরিকাঠামো, বিনোদনের বন্দোবস্ত থেকে নিরাপত্তা— সব আয়োজনই যেন দিঘায়। অথচ পূর্ব মেদিনীপুরের বাকি সৈকতেও এখন বছরভর ভিড় লেগে রয়েছে। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটছে। তবু মন্দারমণি, শঙ্করপুর, তাজপুরে তেমন নজর নেই প্রশাসনের। অসন্তুষ্ট পর্যকেরাও। ঠিক কেমন অবস্থা এই সব দুয়োরানি সৈকতের— খোঁজ নিল আনন্দবাজার। আজ মন্দারমণি।প্রশ্ন উঠেছে পর্যটকদের আর এক প্রিয় সৈকত মন্দারমণির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনিক উদাসীনতায়। দুই সৈকত নিয়ে প্রশাসনের ভিন্ন দৃষ্টির অভিযোগ তুলে অনেকে সুয়োরানি ও দুয়োরানির তুলনা টানছেন।

রাজকুমার গিরি

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৮ ০১:০৭
মন্দারমণির সৈকতে পর্যটকেরা। দেখা নেই টহলদারি পুলিশের। নিজস্ব চিত্র

মন্দারমণির সৈকতে পর্যটকেরা। দেখা নেই টহলদারি পুলিশের। নিজস্ব চিত্র

পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে রাজ্যের অন্যতম সেরা দিঘা। গত এক মাসে সেখানেই পর পর সমুদ্রে মৃত্যুর ঘটনায় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের তৎপরতা তুঙ্গে। আর সেখানেই প্রশ্ন উঠেছে পর্যটকদের আর এক প্রিয় সৈকত মন্দারমণির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনিক উদাসীনতায়। দুই সৈকত নিয়ে প্রশাসনের ভিন্ন দৃষ্টির অভিযোগ তুলে অনেকে সুয়োরানি ও দুয়োরানির তুলনা টানছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা, হোটেল মালিক থেকে পর্যটকদের অধিকাংশের অভিযোগ, দিঘায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে প্রশাসন যে ভাবে তৎপর হয়, মন্দারমণিতে তার ছিটেফোঁটাও থাকে না। অথচ দিঘার ভিড় এড়াতে দিন দিন এই সৈকতে পর্যটকদের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। সম্প্রতি এই সৈকতে সমুদ্রে দুই পর্যটকের মৃত্যুর পর নিরাপত্তার বিষয়টি আরও বেশি করে ভাবাচ্ছে পর্যটকদের। অনেকের অভিযোগ, দিঘায় সমুদ্রে বিপদ ঠেকাতে নুলিয়া থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে পুলিশও। রাতে সৈকতে আলোর ব্যবস্থা-সহ অন্য পরিকাঠামোরও অনেক উন্নতি হয়েছে। তা ছাড়া কোনও বিপদ হলে রয়েছে দিঘা হাসপাতাল। সে দিক থেকে মন্দারমণির অবস্থা দুয়োরানি ছাড়া কিছু নয়। পর্যটকদের একাংশের অভিযোগ, সন্ধ্যের পর এখানে হোটেলের আলো ভরসা। সৈকতে পুলিশের নজরদারি চোখে পড়ে না। কোনও পর্যটক অসুস্থ হয়ে পড়লে কাছকাছি প্রাথমিক চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেই। সে ক্ষেত্রে ভরসা বেশ কিছুটা দূরের বালিসাই স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল। এমনকী সেখানেও পৌঁছনোর জন্য নেই অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা।

যদিও নিরাপত্তা নিয়ে পর্যটকদের অভিযোগ মানতে নারাজ মন্দারমণি উপকূল থানা। তাদের দাবি, সাম্প্রতিক ঘটনা ছাড়া গত দেড় বছরে মন্দারমণিতে সমুদ্রে স্নান করতে নেমে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও কেউ মারা যাননি। উপকূল চত্বরে ২৪ ঘণ্টা পুলিশি টহলদারি থাকে। এ ছাড়া লাইফ বোটেও সমুদ্রে টহল চলে। নুলিয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। সৈকতে পর্যটকেরা কী করবেন, আর কী করবেন না সে বিষয়েও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া রয়েছে। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে পর্যটকদের একাংশই দায়ী। পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সমুদ্রের অনেকটা ভিতরে চলে যাওয়া, মদ্যপ অবস্থায় সমুদ্রে নামার কারণেই অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনকী অনেক সময় পর্যটকদের নিষেধ করলে তাঁরা পুলিশকেই গালিগালাজ করেন। তবে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে পর্যটকদেরও যে অনেকে দায়ী তা জানা গেল স্থানীয় এক হোটেলকর্মীর কথায়। তিনি বলেন, ‘‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে পর্যটকরাই কথাই শোনেন না। অনেক সময় রাতের অন্ধকারেই সমুদ্রে নেমে যান। যদিও সন্ধে ৬টার র সমুদ্র সৈকতে যাওয়া নিষেধ।’’

তবে প্রশাসনিক তৎপরতার পাশাপাশি সৈকতে দুর্ঘটনা রুখতে পর্যটকদের সচেতনতাও যে জরুরি তা শোনা গেল এক পর্যটকের গলায়। কলকাতার নিউ টাউন থেকে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে এসেছেন অম্বরীশ মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘সমুদ্রে বেড়াতে এসে স্নান করব না, তা কী হয়! তবে নিয়ম মেনে সচেতন হলে দুর্ঘটনাও আটকানো যায় আবার আনন্দও উপভোগ করা যায়।’’ তবে সৈকতে আলো, রাস্তা, প্রাথমিক চিকিৎসার মতো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার উপরেও জোর দিয়েছেন তিনি।

(চলবে)

Digha Mandarmani মন্দারমণি দিঘা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy