E-Paper

‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে, উঠছে অভিযোগ

গত চার বছর ‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করছে বিজেপি। কিন্তু এ বছর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে হাজির থাকলেও খেজুরিতে যাননি শুভেন্দু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:২৩
খেজুরির ঘোলাবাড়ে হার্মাদ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন ৩০ জন।

খেজুরির ঘোলাবাড়ে হার্মাদ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন ৩০ জন। —নিজস্ব চিত্র।

১৪ বছর পার হয়েছে। চলতি বছর 'হার্মাদ মুক্তি দিবস’-এর বর্ষপূর্তি উদ‌্‌যাপনে আয়োজিত শাসকদলের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন রাজ্য নেতৃত্ব। আবার এই প্রথম গেরুয়া শিবিরের উদ্যোগে পৃথক কোনও কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। 'হার্মাদ মুক্তি দিবস’-এর তাৎপর্য ক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

রবিবার বিকেলে খেজুরি-১ ব্লকের অন্তর্গত কলাগেছিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোলাবাড় মাঠে 'হার্মাদ মুক্ত' দিবসের সভার আয়োজন করা হয় শাসক দলের তরফে। ওই সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক। এছাড়াও তৃণমূলের দু’টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পীযূষ কান্তি পন্ডা, অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানব পড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু প্রতিরোধ আন্দোলনে যাঁরা সামনের সারিতে ছিলেন তাঁদের অনেকেই এ দিন অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে অভিযোগ।

উল্লেখ্য, নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের পরবর্তী পরিস্থিতিতে ২০১০ সালের ২৪ নভেম্বর খেজুরি পুনর্দখল করে সিপিএম। অভিযোগ, বহিরাগতদের এনে সন্ত্রাস চালানো হয়েছিল। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ঘরবাড়ি। চলেছিল গুলি। পরে তৃণমূলের তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে পাল্টা প্রতিরোধ করেন শাসকদলের কর্মীরা। পিছু হটেছিলেন সিপিএম কর্মীরা। তারপর প্রতিবছর ২৪ নভেম্বর 'হার্মাদ মুক্তি দিবস’ পালন করে আসছে শাসক দল।

২০২০ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রাম এবং খেজুরি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ভরকেন্দ্র। দুই জায়গার আন্দোলনের বিশেষ বিশেষ দিনে বরাবর হাজির থেকেছেন শুভেন্দু। গত চার বছর ‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করছে বিজেপি। কিন্তু এ বছর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে হাজির থাকলেও খেজুরিতে যাননি শুভেন্দু। কেন এ বছর পৃথক কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়াল বিজেপি? প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক বলেন,"বিরোধী দলনেতা সদস্য সংগ্রহ অভিযানে রাজ্যের নানা জায়গায় ব্যস্ত রয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও এখন সদস্য সংগ্রহ অভিযান ছাড়া অন্য কোনও কর্মসূচি নিতে বারণ করেছেন। তাই আপাতত ওই সভা হচ্ছে না।’’

আবার এ বছর তৃণমূলের কোনও মন্ত্রী কিংবা রাজ্য নেতৃত্ব ‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’-এর সভায় না আসায় দলেই গুঞ্জন ওঠা শুরু হয়েছে যে, তাহলে কি ২৪ নভেম্বর গুরুত্ব হারাচ্ছে? তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষ কান্তি পন্ডার কথায়,"আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব সময় শিখিয়েছেন, কর্মীরা দলের সম্পদ। আজকের সভায় যত কর্মী উপস্থিত ছিলেন তাতেই প্রমাণিত, হার্মাদ মুক্তি দিবসের প্রাসঙ্গিকতা আজও অটুট।"এ দিন তৃণমূলের সভায় এক মণ্ডল সভাপতি মিঠুন দাসের নেতৃত্বে ৩০ জন বিজেপি কর্মী যোগ দেন তৃণমূলে।

তবে সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য হিমাংশু দাস বলেন,"হার্মাদ মুক্তির নামে কিছু মানুষকে সেদিন খেজুরি আর নন্দীগ্রাম থেকে 'ঘরছাড়া' করেছিল শুভেন্দু এবং তৃণমূলের লোকজন। এখন তাঁরা ধীরে ধীরে ঘরে ফিরেছেন। এলাকার মানুষ বুঝতে পেরেছেন, কারা লুট করছেন। তাই হার্মাদ মুক্তি দিবস পালনে লজ্জা পেয়েছে তৃণমূল-বিজেপি দুই দলই।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC BJP Suvendu Adhikari CPIM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy