E-Paper

সমাজের ডাকে পথে তৃণমূলের আদিবাসী নেতা

রবিন টুডু মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানে আদিবাসী ছাত্রী খুন এবং আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের চরম শাস্তির দাবিতে পথে নামলেন। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের পরে শাসকদলের আরেক নেতার এই ভূমিকায় শোরগোল পড়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৪ ০৯:০৫
ঝাড়গ্রাম শহরের পাঁচমাথা মোড়ে অবরোধ-বিক্ষোভে বক্তৃতা করছেন রবিন টুডু। মঙ্গলবার সকালে।

ঝাড়গ্রাম শহরের পাঁচমাথা মোড়ে অবরোধ-বিক্ষোভে বক্তৃতা করছেন রবিন টুডু। মঙ্গলবার সকালে। —নিজস্ব চিত্র।

তাঁর দুটি সত্তাই সত্যি। তিনি রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক, আবার সাঁওতাল সামাজিক সংগঠনের সুপ্রিমো ‘দিশম পারগানা’। সেই রবিন টুডু মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানে আদিবাসী ছাত্রী খুন এবং আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের চরম শাস্তির দাবিতে পথে নামলেন। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের পরে শাসকদলের আরেক নেতার এই ভূমিকায় শোরগোল পড়েছে।

আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের চরম শাস্তি এবং পূর্ব বর্ধমানে আদিবাসী ছাত্রী হত্যায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এ দিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এক ঘণ্টার প্রতীকী পথ অবরোধের ডাক দিয়েছিল নিত্যানন্দ হেমব্রম প্রতিষ্ঠিত সাবেক আদিবাসী সামাজিক সংগঠন।মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে ঝাড়গ্রাম শহরের পাঁচমাথা মোড়ে ঘণ্টা খানেক পথ অবরোধে নেতৃত্ব দেন রবিন। অথচ শনিবার আর জি কর কাণ্ডে তৃণমূলের মিছিল ও রবিবার অবস্থান-বিক্ষোভে রবিনকে দেখা যায়নি। রবিন জানিয়েওছেন, সামাজিক সংগঠনের কর্মসূচির প্রস্তুতির ব্যস্ততায় দলের কর্মসূচিতে থাকতে পারেননি। তবে সোমবার সাঁকরাইলের রোহিণীতে রাখিবন্ধনের সরকারি ও দলীয় কর্মসূচিতে ছিলেন রবিন।

রবিন বলেন, ‘‘আর জি করের জঘন্য ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। তবে পূর্ব বর্ধমানে আদিবাসী ছাত্রী খুনে কেবল আদিবাসী সম্প্রদায়ই সরব হয়েছে।’’ রবিনের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘সমাজের সঙ্গে আছি। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সমাজের সঙ্গে থাকব। সমাজ মানে রাজনীতি নয়, রাজনীতি মানে সমাজ নয়।’’ এ দিন পাঁচমাথার মোড়ে প্রতীকী অবরোধে স্কুলের গাড়ি, দুধের গাড়ি ও অ্যাম্বুল্যান্সকে ছাড় দেওয়া হয়।

২০১৮ সালে সামাজিক সংগঠনের আন্দোলন করায় পেশায় স্কুল শিক্ষক রবিনকে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা-২ ব্লক থেকে পূর্ব মেদিনীপুরে বদলি করা হয়েছিল। এর পরই ২০১৯ থেকে তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে রবিনের। ওই বছর লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে সামান্য ভোটে হারেন রবিনের স্ত্রী বিরবাহা সরেন টুডু। এরপরই তৃণমূলে সস্ত্রীক রবিনের উত্থান। বিরবাহা জেলা তৃণমূলের সভাপতি হন। বর্তমানে তিনি জেলা তৃণমূলের চেয়ারপার্সন, জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ এবং রাজ্য মহিলা কমিশনের ভাইস চেয়ারপার্সন। ২০২১ সাল থেকে রবিন পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ ও শিক্ষা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আছেন। ২০২২ সালের ৭ মার্চ থেকে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন রবিন।

এ দিন রবিনের কর্মসূচিতে তাঁর স্ত্রী বিরবাহা ছিলেন না। ফোনে তাঁর দাবি, ‘‘আমি অসুস্থ। এখন বাইরে বেরোচ্ছি না।’’ আর জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি প্রসূন ষড়ঙ্গী বলছেন, ‘‘রবিনবাবু দলের নেতা হলেও সামাজিক সংগঠনের শীর্ষ পদে আছেন। সামাজিক সংগঠনের অবরোধ কর্মসূচিতেই তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rabin Tudu R G Kar Medical College And Hospital Incident R G Kar Medical College and Hospital Tribal girl

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy