Advertisement
১৯ মে ২০২৪

রেল ও রাস্তা অবরোধ,  পূর্বে বন্‌ধ ঘিরে অশান্তি 

অভিযোগ, কিছুক্ষণ ধরে অবরোধ চলার পরে একদল তৃণমূল সমর্থকেরা ওই অবরোধকারীদের হঠাতে লাঠি  নিয়ে আক্রমণ চালায়।

বিতর্ক: বন্‌ধ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের বচসা। তমলুকে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে। নিজস্ব চিত্র

বিতর্ক: বন্‌ধ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের বচসা। তমলুকে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২৪
Share: Save:

বাংলা বন্‌ধ ঘিরে দু’পক্ষের বাগযুদ্ধেই অশান্তির আভাস ছিল। সেই আশঙ্কা সত্যি হল বুধবার। বিজেপি’র ডাকা বাংলা বন্‌ধের সমর্থনে সড়ক ও রেল লাইন অবরোধ ঘিরে বিক্ষিপ্ত ভাবে গোলামাল বাধল পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায়।

এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ মেচেদা স্টেশনে হাওড়া-খড়্গপুর রেল লাইন অবরোধ করেন বিজেপি সমর্থকেরা। যার জেরে আটকে পড়ে হাওড়া ও খড়্গপুরগামী কয়েকটি লোকাল ট্রেন। অভিযোগ, কিছুক্ষণ ধরে অবরোধ চলার পরে একদল তৃণমূল সমর্থকেরা ওই অবরোধকারীদের হঠাতে লাঠি নিয়ে আক্রমণ চালায়। বিজেপি’র দাবি, এতে তাদের ৬ জন সমর্থক আহত হন। আরপিএফ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’পক্ষের সমর্থকদের হটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

যদিও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা হাফিজুর খানের বক্তব্য, ‘‘স্টেশনে আটকে পড়া যাত্রীরাই বিজেপি কর্মীদের হটিয়ে দিয়েছেন। মারধরের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’

অন্যদিকে, চণ্ডীপুর বাজারের কাছে এড়াশাল স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে নন্দীগ্রাম-মেচেদাগামী রাজ্য সড়ক অবরোধ করেছিলেন বিজেপি সমর্থকেরা। অভিযোগ, সকাল ৯টা নাগাদ নন্দীগ্রাম থেকে মেচেদা রুটের একটি বেসরকারি বাসে তাঁরা ভাঙচুর চালান তাঁরা। দিঘা-কলকাতা সড়কেও অবরোধ চলে। তবে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয় এবং দু’জন বিজেপি সমর্থককে আটক করে।

কোলাঘাটের দেউলিয়া বাজারে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধের জেরে যানজট হয়। কোলাঘাট থানার পুলিশ লাঠিচার্জ করে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেয়। এতে কয়েকজন বিজেপি সমর্থক আহত হন বলে অভিযোগ। সেখানে পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করে। অবরোধ হয়েছে রাধাবল্লভপুর ও শঙ্করআড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাঁকটিয়া বাজারে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে।

১১৬বি জাতীয় সড়কের মারিশদায় সকাল ১০টা নাগাদ অবরোধ হয়। মারিশদা থানার পুলিশ তাঁদের হঠিয়ে দেয়। একই ভাবে দইসাই থেকেও বন্‌ধ সমর্থনকারীদের হঠিয়ে দেয় পুলিশ। মহিষাদলের সিনেমা হল মোড়ের কাছে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে অবরোধ ঘিরে পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এগরা ত্রিকোণ পার্কে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। দু’জন বিজেপি কর্মীকে আটক করা হয়।

হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারিজাত বিশ্বাস বলেন, ‘‘মহিষাদলে বিজেপি জোর করে বন্‌ধ করতে চাইছিল। তাই কিছু অশান্তি হয়েছে। তবে পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পাঁচ জন বন্‌ধ সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

আবার পাঁশকুড়ায় হাউর স্টেশনে সকাল ৯টা নাগাদ বন্‌ধ সমর্থকেরা রেল লাইনে অবরোধ করে। তবে প্রশাসনিক তৎপরতায় ১৫ মিনিটের মধ্যেই সেই অবরোধ উঠে যায়। ময়নার নৈছনপুরে বিজেপির বাইক মিছিল ঘিরে তৃণমূলের সঙ্গে গোলামাল বাঁধে। বিজেপি’র দলীয় অফিসে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।

অন্য ছবির দেখা মিলেছে ভগবানপুর-১ ব্লকের গোপীনাথপুর হাইস্কুলে। সেখানে স্কুলে শিক্ষকদের ঢুকতে বাধা দেয় ছাত্রছাত্রীরা। সকাল থেকে তারা স্কুলের পোশাকে দরজার সামনে অবস্থান করে। ইসালামপুরের ছাত্র খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ওই অবস্থান বলা হলেও অভিযোগ উটেছে, ছাত্রছাত্রীদের সমর্থন করেছিল বিজেপি। পরে পুলিশ অন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অশ্বিনী দে বলেন, ‘‘পুলিশ এসে আমাদের ভিতরে যেতে সাহায্য করে। তবে কোনও ছাত্রছাত্রী না আসায় দুপুরে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়।’’

বন্‌ধে ঘিরে উত্তেজনা প্রসঙ্গে বিজেপি’র তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাসের অভিযোগ, ‘‘আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপর পুলিশ ও তৃণমূলের বাহিনী অত্যাচার চালিয়ে চালিয়েছে। গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দায়ের করছে।’’ আবার মহিষাদলের ব্লক তৃণমূল সভাপতি তিলককুমার চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘জোর করে বন্‌ধ চাপিয়ে দিতে চাইছিল বিজেপি। মানুষ ওদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে, এমন সংস্কৃতি তারা মানতে রাজি নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bandh BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE