Advertisement
E-Paper

বেড়াতে গিয়ে ফেরা হল না

মন্দারমণিতে হোটেল ব্যবসার কথা ভাবছিলেন তরুণ। পূর্ব মেদিনীপুরের ওই পর্যটন কেন্দ্রে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়ানোর পাশাপাশি সেখানে হোটেল ব্যবসার সম্ভাবনা, লাভ-লোকসানের খোঁজ নেওয়াও অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল বলে জানাচ্ছেন প্যারাগ্লাইডিং করতে গিয়ে মৃত তরুণ ঘোষের (৩৬) বাবা তপনবাবু।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৫ ০২:২৯
তরুণবাবুর স্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

তরুণবাবুর স্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

মন্দারমণিতে হোটেল ব্যবসার কথা ভাবছিলেন তরুণ। পূর্ব মেদিনীপুরের ওই পর্যটন কেন্দ্রে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়ানোর পাশাপাশি সেখানে হোটেল ব্যবসার সম্ভাবনা, লাভ-লোকসানের খোঁজ নেওয়াও অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল বলে জানাচ্ছেন প্যারাগ্লাইডিং করতে গিয়ে মৃত তরুণ ঘোষের (৩৬) বাবা তপনবাবু।

মুর্শিদাবাদের রেজিনগর থানার পিলখানায় ঘোষ পরিবার সম্পন্ন ব্যবসায়ী পরিবার বলেই এলাকায় পরিচিত। রবিবার সকাল ন’টায় ছেলের তরুণের এক বন্ধুর মারফৎ তপনবাবু জানতে পারেন প্ল্যারাগ্লাইডিং করতে গিয়ে তাঁর ছেলের চোট লেগেছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বললাম দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যা। কয়েক মিনিট পরের ফোনে শুনলাম সব শেষ!’’

এ দিন দুপুরে জোড়া সিংহের মূর্তি বসানো ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ঘটনার আকষ্মিকতায় সকলেই বাকরুদ্ধ। বাম দিকের উঠোনে তরুণবাবুর মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া মৌমিতা সমানে কেঁদে চলেছে। কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে তার ভাই, দশম শ্রেণির ছাত্র ঋত্বিক। মূল ভবনের প্রবেশ দ্বারে প্রতিবেশি, আত্মীয়দের ভিড়। বারান্দা পেরিয়ে বড় একটি ঘরে জন পঞ্চাশেক মহিলা-পুরুষ তখন সদ্য পুত্রহারা মা চায়নাদেবীকে ঘিরে রয়েছেন। কী বলে তাঁকে সান্ত্বনা দেবেন বুঝতে পারছেন না কেউই। থেকে থেকেই চায়নাদেবী ডুকরে কেঁদে উঠছেন। বলছেন, ‘‘তরুণ এ ভাবে চলে গেল!’’

চয়নাদেবীর ডান পাশে স্ত্রী টুম্পা নিথর হয়ে বসে। চোখের পলক পড়ছে না! চোখ থেকে জলের ধারা অনর্গল গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে। বারান্দার এক ধারে একটা ছোট ঘরে বসেছিলেন তপনবাবু। তাঁরও চোখ-মুখ থমথমে, শূন্য চোখে চেয়ে রয়েছেন সিলিংয়ের দিকে। তিনি বলছেন, ‘‘ছেলেটা তো আমার উপরে সব ভার দিয়ে পালাল। ওর ছেলেমেয়েদের এখন আমাকেই দেখতে হবে। সবই নিয়তি!’’ গলা বুঁজে আসে তাঁর। কিছুটা নিশ্বাস নিয়ে বলেন, ‘‘গত শুক্রবার বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে ছিল। আমাদের অনেক রকমের ব্যবসা। সেই কাজে কোথায় কখন থাকত সব সময় জানতামও না। মন্দারমণিতে হোটেল করার কথা ভেবেছিল। ২৫ জুন বিদেশে ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনেছিলাম।’’

এ দিন ঘোষ বাড়িতে যান রেজিনগরের ওসি মৃণাল সিংহ। পরিবারের সঙ্গে কিছু সময় কাটান, তপনবাবুকে সান্তনা দেন। প্রতিবেশিরা জানাচ্ছেন, তপনবাবুর দুই ছেলে তরুণ ও বরুণ। রেজিনগরে ও করিমপুরে তাঁদের দুধের বড় ব্যবসা রয়েছে। মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ায় বেশ কয়েক’টি হোটেল-লজও রয়েছে। নদিয়ার পলাশিতে রয়েছে
হার্ডওয়্যারের ব্যবসা।

Tarun Mandarmoni Tarun ghosh Tapan ghosh Paraglider
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy