Advertisement
E-Paper

প্রাণহানি কমেছে, রাশ নেই গতিতে

পরিবহণমন্ত্রীর জেলায় পথ নিরাপত্তার হাল কেমন। জাতীয় সড়কগুলিতে যানবাহনের গতিতে রাশ টানতে পেরেছে প্রশাসন? পথচারীদের হুঁশ কি ফিরল? রইল তিন পর্বের নজরদারি। পরিবহণমন্ত্রীর জেলায় পথ নিরাপত্তার হাল কেমন। জাতীয় সড়কগুলিতে যানবাহনের গতিতে রাশ টানতে পেরেছে প্রশাসন? পথচারীদের হুঁশ কি ফিরল? রইল তিন পর্বের নজরদারি।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:১৩
বেপরোয়া: হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে ট্রাফিক নির্দেশ অমান্য করে এ ভাবেই চলে পারাপার। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

বেপরোয়া: হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে ট্রাফিক নির্দেশ অমান্য করে এ ভাবেই চলে পারাপার। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

গতি কমাও, জীবন বাঁচাও। পথ নিরাপত্তায় নয়া স্লোগান তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের সূত্র বলছে, পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে জীবন বাঁচছে। গত তিন বছরে জেলায় কমেছে দুর্ঘটনায় সংখ্যা। কমেছে প্রাণহানি। কিন্তু গতি কমছে কি? জেলার দু’টি জাতীয় সড়কে টহল দিলে মিলবে উত্তর।

চিত্র এক: তমলুকের কাকগেছিয়া বাজারের কাছে শঙ্করআড়া খালের উপর রয়েছে সেতু। সেই সেতু সংলগ্ন হলদিয়া–মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের বাঁক দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত। লেখা আছে সতর্কবাণী— গাড়ির গতি কমান। সতর্কবাণী থোড়াই কেয়ার। পণ্যবাহী লরি, তেল-গ্যাসভর্তি ট্যাঙ্কার, যাত্রীবাহী বাস ছুটছে গতি না কমিয়েই। কাকগেছিয়া বাজারে যাওয়া সাইকেল, মোটরসাইকেল আরোহী, পথচারীরা জাতীয় সড়ক পারাপার করছেন ঝুঁকি নিয়েই।

চিত্র দুই: কোলাঘাটের হলদিয়া মোড়ের কাছে হাওড়া–মুম্বই ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে বাঁকের কাছে রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের গার্ডরেল। রয়েছে সাবধানবাণী— ‘দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা ধীরে চালান’। সড়কের দু’ ধারেই রয়েছে একাধিক খাবারের হোটেল, ধাবা। আড়াআড়ি সড়ক পারাপার করছেন মোটর সাইকেল, সাইকেল আরোহীরা। কিন্তু পণ্যবাহী বড়-ছোট লরি, যাত্রীবাহী বাস, ট্যাক্সি ছুটছে বেপরোয়া গতিতে। এমনকী, ডিভাইডারের ভাঙা অংশ দিয়ে সাইকেল, মোটরসাইকেল আরোহীরা আড়াআড়ি ভাবে সড়কের লেন বদল করছেন। এভাবে সড়ক পার হচ্ছেন কেন? মোটরসাইকেল আরোহী শেখ নাজিমুল বলেন, ‘‘কাছেই বাড়ি। প্রায়ই সড়কের এদিক-ওদিক হতে হয়। তাই এ ভাবে পারাপার করি।’’

দুর্ঘটনার খতিয়ান

সাল দুর্ঘটনা মৃত আহত

• ২০১৫ ৮১৪ ৩৯ ৭৯৮

• ২০১৬ ৮১০ ৩৮৪ ৭১৫

• ২০১৭ ৭২৮ ৩৫১ ৫৪৩

পরিসংখ্যান পূর্ব মেদিনীপুরের

তথ্যসূত্র: জেলা পুলিশ

শুধু কাকগেছিয়া কিংবা হলদিয়া মোড় নয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এই দুই গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেই প্রচণ্ডগতিতে গাড়ি চলাচল করছে। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে মেচেদার কাছে হলদিচক, রামতারক বাজার, নেতাজিনগর বাজার, রাধামনি বাজার, কাকগেছিয়া বাজার, কামারদা বাজার, খঞ্চি বাজার, হাসগেড়িয়া প্রভৃতি এলাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। কাকগেছিয়া বাজারের কাছে বাড়হাটগেছিয়া গ্রামের বাসিন্দা মদনমোহন পাত্র, ‘‘এখানে সড়কে আড়াআড়ি পার হওয়া বন্ধ করতে খালের সেতুর নীচ দিয়ে যাতায়াতের জন্য পাকা রাস্তা আছে। সড়কে পারাপারে রাশ টানতে ট্রাফিক পুলিশ থাকে । তা সত্ত্বেও লোকজন বিপজ্জনক ভাবে সড়ক পারাপার করে।’’ পথচারী থেকে চালক— হাজার প্রচারেও হুঁশ ফেরেনি কারও। কিন্তু যানবাহনের গতিতে রাশ টানতে কী করছে প্রশাসন? পূর্ব মেদিনীপুরে পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন, ‘‘গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে চালকদের সঙ্গে বারবার বৈঠক করছি। নজরদারি ক্যামেরা রয়েছে। মাঝেমাঝে অভিযান চালানো হয়। নিয়মভঙ্গকারীদের জরিমানা করা হচ্ছে।’’ তথ্য বলছে, ক্রমশ কমছে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি। বাস্তব বলছে, হয়তো স্রেফ বরাত জোরে এ়ড়ানো যাচ্ছে দুর্ঘটনা।

Purba Medinipur Road safety Accident পথ নিরাপত্তা পূর্ব মেদিনীপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy