Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রাজাকে চিনে হতবাক মাইশোরা, ‘শালাবাবু’ই খুনি!

স্থানীয়দের কয়েকজন জানাচ্ছেন, ওই দিন থেকে দিন তিনেক রাজা ওই নেতার সঙ্গে গাড়িতে করে এলাকা ঘুরে দেখে।

ধৃত তসলিম আরিফ (রাজা) —ফাইল চিত্র।

ধৃত তসলিম আরিফ (রাজা) —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৩
Share: Save:

সুদর্শন চেহারার যুবকটিকে দুর্গা পুজোর আগে এলাকায় ঘুরতে দেখেছেন অনেকেই। স্থানীয়দের দাবি, এক পঞ্চায়েত সদস্য তাকে নিজের শ্যলক বলে পরিচয়ও দিয়েছিল। খুনের খবরে সংবাদমাধ্যমে সেই ‘শ্যালকে’র ছবি দেখে এবং গ্রেফতারের কথা শুনে চমকে গিয়েছিলেন স্থানীয়েরা। আপতত তা নিয়ে চলছে এলাকার চায়ের দোকান, আড্ডার আসরে জোর জল্পনা।

পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনে খড়্গপুর থেকে ধরা পড়েছে তসলিম আরিফ ওরফে রাজা। হত্যাকাণ্ডে সে অন্যতম শ্যুটার ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে মাইশোরা এলাকার বহু গ্রামবাসী দাবি করেছেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে এলাকায় দু’একবার দেখা গিয়েছিল রাজাকে। সে মাইশোরা এলাকার বিজেপি নেতা তথা কুরবান খুনের মূল অভিযুক্ত আনিসুর রহমানের ঘনিষ্ঠ এক নেতার শ্যালক বলে পরিচয় দিয়েছিল সে সময়।

কুরবান খুনে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া, সম্প্রতি মাইশোরা এলাকা থেকে আনিসুর ঘনিষ্ঠ দুই নেতা ফেরার হয়ে যাওয়ায় রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। পুলিশের দাবি, মাইশোরা এলাকার যে দু'জন নেতা ফেরার হয়ে গিয়েছেন, তাঁরা এলাকায় আততায়ীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। এ ব্যাপার এলাকার কয়েকজনও দাবি করেছেন, মাইশোরার শ্যামবল্লভপুর গ্রাম থেকে যে আনিসুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি পলাতক, তাঁর গাড়িতে করে ২৮ সেপ্টেম্বর রাজা মাইশোরা এলাকায় এসেছিল। ওই দিন মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রাধাবল্লভপুর বাজারে রাজার সঙ্গে ওই নেতাকে চা খেতেও দেখা যায় বলে দাবি স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পঞ্চায়েত সদস্য বলেন, ‘‘শ্যামবল্লভপুরের ওই ব্যক্তির সঙ্গে অচেনা যুবকের পরিচয় জানতে চাইলে, উনি বলেছিলেন যে, ওই যুবক তাঁর শ্যালক।’’

রাজা-কাহিনি

২৮ সেপ্টেম্বর আনিসুর ঘনিষ্ঠ এক নেতার সঙ্গে মাইশোরায় রাজা

নেতার গাড়িতে এলাকার ঘোরা

চায়ের দোকানে চুপচাপ রাজা

নেতা রাজাকে শ্যালকের পরিচয় দিয়েছিল বলে দাবি

২ অক্টোবর মাইশোরায় আসে রাজার সঙ্গীরা

কুরবানের গতিবিধির খবর আততায়ীদের কাছে পৌঁছে যেত ধৃত নবারুণ ও দীপকের মাধ্যমে

স্থানীয়দের কয়েকজন জানাচ্ছেন, ওই দিন থেকে দিন তিনেক রাজা ওই নেতার সঙ্গে গাড়িতে করে এলাকা ঘুরে দেখে। যেহেতু নেতা রাজাকে নিজের শ্যালক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন, তাই কারও সন্দেহ হয়নি বলে দাবি স্থানীয়দের। মাইশোরা এলাকার এক দোকানদার বলেন, ‘‘সুদর্শন চেহারার ছেলেটি স্থানীয় এক পরিচিতের সঙ্গে দু-একবার বাজারে এসেছে। তবে ওকে দেখে কোনও দিন কিছু সন্দেহ হয়নি।’’

যদিও ওই নেতার গ্রাম শ্যামবল্লভপুরের কয়েকজন বাসিন্দার দাবি, রাজা ওই ফেরার নেতার শ্যালক নয়। শ্যামবল্লভপুর গ্রামে ওই নেতার বাড়িতে রাজাকে কখনও দেখা যায়নি বলেও দাবি তাঁদের। পুলিশের একাংশের অনুমান, ২ অক্টোবর থেকে রাজা বাকি আততায়ীদের নিয়ে মাইশোরা এলাকায় থাকতে শুরু করে। রাজশহর গ্রামের যে প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ফেরার হয়ে গিয়েছেন, সম্ভবত তিনিই রাজা এবং তার সঙ্গীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন বলে অনুমান। যদিও ব্যাপারে পুলিশ এখনও কিছু প্রকাশ্যে মন্তব্য করেনি। তারা ওই নেতার খোঁজ করছে আপাতত। বৃহস্পতিবার রাজাকে নিজেদের হেফাজতে পেতে তমলুক আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। বিচারক রাজার ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kurban Shah Murder Case Crime Murder BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE