প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানা হয়নি। বদলে হয়েছে সিমেন্ট কারখানা। জিন্দলরা এ বার বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির ঘোষণা করেছে। ফের স্বপ্ন দেখছে শালবনি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে নিজেদের অধিগ্রহণ করা জমিতেই জিন্দলরা একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তুলবে। ফেব্রুয়ারির গোড়ায় কলকাতায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকেই এই ঘোষণা করেছেন জিন্দল গোষ্ঠীর কর্ণধার সজ্জন জিন্দল। পুরো পরিকল্পনাটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমোদন বা 'লেটার অব অ্যাওয়ার্ড' পেয়েছে বলে দাবি করেছেন জিন্দল কর্তৃপক্ষ। ১৬০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্যে জিন্দলরা শেয়ার বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের জন্য সেবির কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছে বলে সংস্থার দাবি।
জিন্দল গোষ্ঠীর তরফে জানানো হয়েছে, প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে প্রাথমিক ভাবে ৮০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট স্থাপন করা হবে যার সামগ্রিক উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১৬০০ মেগাওয়াট। পরবর্তীতে এই ক্ষমতা বাড়িয়ে ৩,২০০ মেগাওয়াট করা হবে। জিন্দল গোষ্ঠীর তরফে শালবনির প্রকল্পের এক দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, "আমাদের জমির কোনও সমস্যা নেই। প্রায় সাড়ে চার হাজার একর জমি আমরা আগেই অধিগ্রহণ করেছিলাম। তারই একটা অংশে আমাদের সিমেন্ট কারখানা রয়েছে। বাকি অংশের প্রায় ১৫০০ একর জমি ব্যবহৃত হবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য।" তিনি আরও বলেন, "উৎপাদিত বিদ্যুৎ পুরোটাই কিনে নেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যুৎ দফতর। ফলে, আমাদের বাজার ধরার সমস্যা থাকছে না।" সূত্রের দাবি, এই প্রকল্পে প্রত্যক্ষ ভাবে ২৫০-৩০০ জনের কর্মসংস্থান হবে। আর পরোক্ষে উপকৃত হবেন ১২০০ জন। শীঘ্রই সংস্থার তরফে জনশুনানির আয়োজন করা হবে। আর তিন-চার মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে।
জিন্দলদের এই ঘোষণায় শালবনিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ২০০৮ সালে প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানার শিলান্যাস হয়েছিল একানে। কিন্তু পরে ২০১৮ সালে সেখানে সিমেন্ট উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি হয়। জিন্দালদের ঘোষণা মতো পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান না হওয়ায় জমিদাতাদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ রয়েছে। পরে সিমেন্ট কারখানার সম্প্রসারণ ও রঙের কারখানা গড়ার কাজ শুরু হলেও অধিগৃহীত জমির মাত্র প্রায় ২০ শতাংশ ব্যবহৃত হয়েছে। জিন্দলদের নতুন ঘোষণায় কর্ম সংস্থানের আশা-নিরাশার দোলাচলে জমিদাতাদের।
জিন্দল প্রকল্পের জমিদাতা কমিটির সম্পাদক পরিষ্কার মাহাতো বলেন, "এর আগেও অনেক বার বিনিয়োগের ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। আশা করি, এ বারের ঘোষণা নিশ্চয়ই বাস্তবায়িত হবে।" জমিদাতাদের একটাই দাবি, শীঘ্রই কাজ শুরু করা হোক। সহ-প্রতিবেদন: বরুণ দে
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)