Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Nandigram

নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝোলাতে গেল বিজেপি! পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, উত্তেজনা

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে নন্দীগ্রামের ২টি ব্লকের ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের একচেটিয়া ভাবে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। সে সময় নেতৃত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই শুভেন্দুই এখন বিজেপি বিধায়ক।

পঞ্চায়েতের সামনে বিজেপি কর্মী এবং সমর্থকদের বিক্ষোভ। বাধা দিচ্ছে পুলিশ।

পঞ্চায়েতের সামনে বিজেপি কর্মী এবং সমর্থকদের বিক্ষোভ। বাধা দিচ্ছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:৩৮
Share: Save:

সরকারি প্রকল্পের টাকা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়েছেন পঞ্চায়েতের দায়িত্বে থাকা জনপ্রতিনিধিরা। এই অভিযোগে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝোলাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ালেন বিজেপি কর্মী এবং সমর্থকেরা। শুক্রবার নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের আমদাবাদ ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে এ নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়।

নন্দীগ্রামে আবাস যোজনা-সহ একাধিক সরকারি কাজে দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু করে বিজেপি। গেরুয়া নেতাদের দাবি, পুলিশ দিয়ে এই আন্দোলন দমিয়ে দিতে চাইলে মানুষ এর জবাব দেবে। কারণ, নন্দীগ্রামের দুই ব্লকের সমস্ত পঞ্চায়েতেই লাগামছাড়া দুর্নীতি হয়েছে। এর পর প্রয়োজনে বিডিও অফিসের সামনে গিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ করবে বিজেপি। এ নিয়ে তৃণমূলের কটাক্ষ, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে লড়াইয়ের লোক না পেয়ে এ ভাবে ঝামেলা পাকিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে বিজেপির লোকজন।’’

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে নন্দীগ্রামের ২টি ব্লকের ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে একচেটিয়া ভাবে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। সে সময় দলের নেতৃত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই শুভেন্দুই এখন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও বটে। স্বাভাবিক ভাবে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে নন্দীগ্রামের এই ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল নেওয়া যেমন বিজেপির লক্ষ্য, তেমনই গড় রক্ষা করতে মরিয়া তৃণমূল।

পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা না হলেও একাধিক দুর্নীতি ইস্যুতে একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। বৃহস্পতিবার বিরুলিয়া পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পর শুক্রবার আমদাবাদ পঞ্চায়েতে তালা ঝোলানোর পরিকল্পনা নিয়ে সেখানে হাজির হয় তারা। তবে বিক্ষোভের আঁচ পেয়ে আগেভাগে বিশাল পুলিশবাহিনী ছিল আমদাবাদ পঞ্চায়েত ভবনে। বিজেপির নেতাকর্মীরা মিছিল করে সেখানে পৌঁছতেই পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে হট্টগোল চলে। এ নিয়ে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি প্রলয় পালের মন্তব্য, “এখানকার ১৭টি পঞ্চায়েতে গায়ের জোরে দখল করেছিল তৃণমূল। সমস্ত আসনে বিরোধীশূন্য করে ক্ষমতায় এসেছিল ওরা। সেই বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েতে প্রধান-সহ অধিকাংশ পঞ্চায়েত প্রতিনিধি লাগামছাড়া দুর্নীতিতে যুক্ত। রাস্তার গাছ কেটে টাকা না দেওয়া, রাস্তা করার নামে টাকা তুলে নিতেন। এ বার নতুন সংযোজন আবাস যোজনায় দুর্নীতি।’’ প্রলয় জানান, পঞ্চায়েতে দুর্নীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে বিডিও অফিসে দরবার করেছে বিজেপি। কিন্তু তার পরেও আবাস যোজনায় ভুয়ো লোকেদের ঘর পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এই কারণে তাঁদের বিক্ষোভ।

তবে বিজেপির এই বিক্ষোভে আমল দিতে নারাজ শাসক শিবির। তৃণমূল নেতা স্বদেশ দাস বলেন, “নন্দীগ্রামের পঞ্চায়েতগুলির ক্ষমতা দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু বহু বুথে বিজেপি প্রার্থীই খুঁজে পাবে না। তাই ভুয়ো অভিযোগ তুলে একের পর এক পঞ্চায়েত এলাকাকে অশান্ত করতে চাইছে ওরা। সবাই বুঝে গিয়েছে, এটা নিছক ভোটের জন্য কৌশল। এ ভাবে অশান্তি পাকিয়ে একটিও পঞ্চায়েতে বিজেপি জয় পাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nandigram TMC BJP police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE