Advertisement
E-Paper

ঝড়ে লন্ডভন্ড ১৫টি গ্রাম

রবিবার সকাল থেকে শুরু হয় উদ্ধার কাজ। স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে যে সব গাছ ভেঙে পড়েছিল সেগুলি সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৩ ০৮:১২
 ত্রাণের-আশায়: ঝড়ে পড়ে গিয়েছে ঘর। রবিবার রামনগরের মৈতনায়। নিজস্ব চিত্র

ত্রাণের-আশায়: ঝড়ে পড়ে গিয়েছে ঘর। রবিবার রামনগরের মৈতনায়। নিজস্ব চিত্র

বিকেল সাড়ে তিনটে। নিজের বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে সবে মাত্র একটু চোখ বুজিয়েছিলেন সুরেশ গিরি। হঠাৎই দমকা হাওয়ায় তাঁর দোতলা বাড়ির অ্যাজবেস্টসের ছাউনি উড়ে যায়। ভয়ে বাড়ির ভিতরে সিঁটিয়ে থাকেন পরিবারের লোকজন। সাত মিনিট ধরে চলে ঝড়ের তাণ্ডব। শুধু সুরেশের বাড়ির ছাদই ওড়েনি। ভেঙে পড়েছে দেদার বড় বড় গাছ।

ঝড়ের পর শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। শনিবার বিকেলে রামনগর-২ ব্লকের ভুঁইয়া ঝিবাড়, দক্ষিণ মৈতনা, খিদিরপুর, দক্ষিণ তেঁতুলতলা, কল্যাণপুর, শিখরপুর এবং সাহাপুরের মতো বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত। শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ে দেড়শোরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অধিকাংশ বাড়ির ছাউনি উড়ে গিয়েছে। বৃষ্টিতে একটি শিশু সহ বেশ কয়েক জন জখম হয়েছে। বেশ কয়েকটি গবাদি পশু মারা গিয়েছে। বিঘার পর বিঘা জমির পানের বরজ, বোরো চাষ নষ্ট হয়েছে। সাত মিনিটের ঝড়ে সব লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে বলে দাবি দাবি এলাকার বাসিন্দাদের।

রবিবার দিনভর কার্যত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল আশপাশের প্রায় ২০টি গ্রাম। রামনগর-২ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও সৈকত দত্ত বলেন, ‘‘এদিন সকালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। বহু বাড়িঘর ভেঙেছে। গাছপালা উপড়ে রাস্তার উপরে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতির উপরে আমরা নজর রাখছি।’’

এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য পিনাকি ডিন্ডা বলেন, ‘‘শনিবার বিকেলে হঠাৎ করে জোরে বাতাস বইতে শুরু করে। কয়েক মিনিট পর বাড়ির বাইরে গিয়ে দেখি সমস্ত চাষের জমিতে ধান গাছ একেবারে নুয়ে গিয়েছে। জমিতে যে লঙ্কা চাষ করা হয়েছিল সেই সব গাছের শুধুমাত্র কান্ডটা দাঁড়িয়ে রয়েছে। বড় বড় গাছ সমূলে উপড়ে রাস্তার উপরে পড়েছে।’’

রবিবার সকাল থেকে শুরু হয় উদ্ধার কাজ। স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে যে সব গাছ ভেঙে পড়েছিল সেগুলি সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ত্রিপল দেওয়া হচ্ছে। যদিও গোটা এলাকা শনিবার বিকেল থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। ফলে বহু মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। এদিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে প্রশাসনিক আধিকারিকদের পাশাপাশি পৌঁছে যান স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তমালতরু দাস মহাপাত্র, কাঁথি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্রকাশ গিরি। তমালতরু বলেন, ‘‘দেড়শোরও বেশি বাড়ির ছাউনি উড়ে গিয়েছে। বেশ কয়েক জন শিলাবৃষ্টিতে আহত। এদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। কয়েকটি ছাগল মারা গিয়েছে। বোরো এবং লঙ্কা চাষ ও পানের বরজের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে।’’

ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এগরা-১ ব্লকের জেড়থান এলাকা। প্রচুর পানের বরজ, বাদাম এবং ৫০ বিঘার মতো জমিতে বোরো চাষ নষ্ট হয়েছে। এদিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান এলাকার বিধায়ক তরুণ মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চলছে।’’

Ramnagar storm East Midnapore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy