Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Tamluk

তৃণমূল নেতার বনভোজনে খেয়ে অসুস্থ শতাধিক

স্থানীয় সূত্রে খবর, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুর প্রতিনিধি সৌমেন চক্রবর্তীর উদ্যোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে রবিবার রূপনারায়ণ নদের তীরে বনভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল।

A person cooking for the picnic attendants

চলছে বনভোজনের রান্না। প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪৮
Share: Save:

তৃণমূলের এক পুর প্রতিনিধির উদ্যোগে এলাকার কয়েকশো বাসিন্দাকে নিয়ে রূপনারায়ণ নদের তীরে আয়োজন করা হয়েছিল বনভোজনের। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পরে রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সহ শতাধিক বাসিন্দা। তমলুক পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনায় সোমবার ভোররাত থেকেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। অসুস্থদের প্রায় প্রত্যকেরই পেট ব্যথা, পেটের যন্ত্রণাস, পায়খানা সহ শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ার লক্ষণ দেখা যায় । পরিস্থিতি সামাল দিতে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসক-কর্মীদের নিয়ে গড়া মেডিক্যাল টিম অসুস্থদের চিকিৎসা শুরু করে। অসুস্থদের চিকিৎসা শিবির পরিদর্শনে যান তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘বনভোজনে খাওয়ার পরে কয়েকজন অসুস্থ হয়েছিল। তাদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।’’

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুর প্রতিনিধি সৌমেন চক্রবর্তীর উদ্যোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে রবিবার রূপনারায়ণ নদের তীরে বনভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল। সৌমেন ছাড়াও বনভোজনে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থকরা ছাড়াও অন্য কয়েকটি ওয়ার্ডের তৃণমূল পুর প্রতিনিধিরা। মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, আলুভাজা, বাঁধা কপির তরকারি, মুরগির মাংস, চাটনি, পাঁপড় ও মিষ্টি। প্রায় পাঁচশো জন ওই খাবার খেয়েছিলেন। কিন্তু বনভোজনে যোগ দেওয়া বাসিন্দাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রবিবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। তাঁদের পরিবারের লোক প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করান। কিন্তু সোমবার সকাল পর্যন্ত অসুস্থদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকায় পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। খবর পেয়ে পুরপ্রধানের নির্দেশে এলাকায় পুরসভার মেডিক্যাল টিম গিয়ে শিবির করে অসুস্থদের চিকিৎসা শুরু করে। অসুস্থদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে পুরসভার তরফে একটি অ্যাম্বুল্যান্সও রাখা হয়। এ দিন সকালে স্বাস্থ্য শিবিরে গিয়ে দেখা যায় সেখানে বহু বাসিন্দা হাজির হয়েছেন চিকিৎসা করাতে। অসুস্থদের প্রত্যেকে জানান তাঁরা রবিবার বনভোজনে গিয়ে খাবার খেয়েছিলেন। স্থানীয় যুবক দেবার্ঘ্য সিংহ বলেন, ‘‘রবিবার দুপুরে বনভোজনে খাওয়ার পরে রাতে বার বার পাতলা পায়খানা, পেট ব্যথা ও পেটের যন্ত্রণা হচ্ছিল। শরীর খুব দুর্বল হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসার জন্য শিবিরে এসেছি।’’

ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডল সভাপতি সুকান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূলপুর প্রতিনিধির উদ্যোগে বনভোজনে খাওয়ার পরে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। খাবারে বিষক্রিয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলেই অনুমান। রান্না থেকে পরিবেশন করার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। কারও গাফিলতি ছিল কিনা সে বিষয়ে উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’’ তৃণমূল পুর প্রতিনিধি সৌমেন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এলাকাবাসীদের নিয়ে বনভোজন সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সাধারণ খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু পরে রাতে কয়েক জন বাসিন্দার অসুস্থতার খবর পাই। অসুস্থদের দ্রুত চিকিৎসা করাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।এনিয়ে রাজনীতি মোটেও কাম্য নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tamluk picnic spot Rupnarayan River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE