Advertisement
E-Paper

বরাত জোরে রক্ষা, বাড়ি ফিরছেন পর্যটকেরা

পরে ঘোড়ার মালিকদের কাছ থেকে ওই এলাকার কিছু ভিডিয়ো মোবাইলে দেখার পরে বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

পহেলগামে সেনার কড়া পাহারা (বাঁ-দিকে)। জম্মুর পথে কোলাঘাটের পর্যটকেরা।

পহেলগামে সেনার কড়া পাহারা (বাঁ-দিকে)। জম্মুর পথে কোলাঘাটের পর্যটকেরা। ছবি: পর্যটকদের সৌজন্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:০০
Share
Save

ভূস্বর্গ যে ভয়ঙ্কর রূপ নেবে, তা ঘূণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি মধুমিতা, নটরাজ, রবীন্দ্রনাথরা। তীব্রদাহ থেকে বাঁচতে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে। ছুটি কাটাতে। কিন্তু জেলার পর্যটকদের একটা দল কার্যত ফিরেছে মৃত্যুর দোর থেকে। যে পহেলগামে জঙ্গিরা ২৬ জন পর্যটককে মেরেছে, সেখানে ওই ঘটনার ঠিক অল্প সময় পরেই পৌঁছে ছিল ওই দল। আতঙ্ক নিয়ে ওই পর্যটকেরা বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন।

কোলাঘাটের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে ৩৫ জন পর্যটক কাশ্মীরে গিয়েছেন। সংস্থার তরফে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার তাদের পর্যটকদের গাড়ি পহেলগাম পৌঁছেছিল। পহেলগাম বাজারে গাড়ি ছেড়ে কথা ছিল পর্যটকেরা ঘোড়া ভাড়া করে চার কিলোমিটার দূরে কাশ্মীরের ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ বৈসারণ ভ্রমণে যাবেন। তবে পৌঁছেই পর্যটকেরা দেখেন কাশ্মীরি সহিসেরা ঘোড়া নিয়ে কার্যত দলে দলে পালিয়ে আসছেন পহেলগাম বাজারের দিকে এবং নিরাপদে পালিয়ে যেতে বলছেন অন্যদের। পর্যটকেরা তখনও জানতেন না যে, গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছেন তাঁদেরই মতো অন্য পর্যটকেরা। পরে ঘোড়ার মালিকদের কাছ থেকে ওই এলাকার কিছু ভিডিয়ো মোবাইলে দেখার পরে বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

কোলাঘাটের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ দাস বলেন, ‘‘গাড়ি থেকে আস্তে আস্তে বেশ কিছু আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলাম। তখনও বুঝতে পারিনি এত বড় কাণ্ড ঘটে গিয়েছে। জানতে পেরে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। তাদের পরামর্শেই গাড়ি নিয়ে সমতলের উদ্দেশ্যে রওনা শুরু করি।’’ ওই দলেই রয়েছেন কোলাঘাটের বিবেকানন্দ মোড়ের বাসিন্দা মধুমিতা সিংহ পান। স্বামী আর আড়াই বছরের পুত্রকে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। মধুমিতার কথায়, ‘‘আমরা ঘটনা চাক্ষুষ করতে পারিনি। তবে বাড়ি থেকে বাবা ফোন করে কান্নাকাটি করছেন। বলছেন যে ভাবে হোক ফিরে আয়। প্রয়োজনে প্লেনের টিকিট কেটে বাড়ি আয়।’’

মধুমিতারা জানান, অল্প সময়ের মধ্যেই এলাকার পরিবেশ পাল্টে গিয়েছিল। একের পর এক সেনার গাড়ি ঢুকতে শুরু করে। পর্যটক খালি করা শুরু হয়। বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট। অনেক পর্যটক আবার অন্য হোটেলে সাময়িক আশ্রয় নেন। সে সময় স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য পর্যটকদের পাশে দাঁড়ান। বিনামূল্যে খাবারের ব্যবস্থা থেকে থাকার বাড়ি পর্যন্ত ছেড়ে দিতে শুরু করেন। বুধবার পহেলগাম থেকে সোজা জম্মু স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে কোলাঘাটের মোট তিন ভ্রমণ সংস্থার শতাধিক পর্যটক। কিন্তু তাঁদের ফেরার টিকিট আরও দু’দিন পরের। তাই স্টেশন সংলগ্ন ধর্মশালা অথবা রেলের বিশ্রামাগারই তাঁদের ভরসা।

জঙ্গি হামলার দিনই ভোরে পহেলগাম ছেড়েছিলেন তমলুকের বাসিন্দা নটরাজ সামাই-সহ আটজন। গত সোমবার তাঁরা পহেলগামে গিয়েছিলেন। গিয়েছিলেন হামলাস্থল বৈসারণে। মঙ্গলবার ভোরে পহেলগাম ছেড়ে গাড়িতে কাটরার উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। তাঁরা পড়েছেন অন্য বিপাকে। নটরাজ বলেন, ‘‘পহলেগাম থেকে কাটরা আসার রাস্তায় ধস নেমেছে। প্রায় ৬০০ কিলোমিটার ঘুরপথে এসেছি। এখন খবরে হামলার কথা শুনে চমকে গিয়েছি। বুধবার এলাকায় বন্‌ধ। হোটেলেই বসে। বৃহস্পতিবার কাটরা থেকে বাড়ি রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। জানি না পথে আর কোনও বিপত্তি ঘটবে কি না।’’

(কাশ্মীর সংক্রান্ত আরও খবর, পৃ: ২)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kolaghat

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}