Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Specially Abled Student

Specially abled Children: পড়া ভুলেছে প্রতিবন্ধী পড়ুয়ারা

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য ৪টি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল আছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:৩৫
Share: Save:

ওদের অনেকেই কানে শোনে না। কথাও বলতে পারে না। কয়েকজন ভুগছে মানসিক প্রতিবন্ধকতায়। সঙ্গে অভাব। সেই সব কিছু দূরে সরিয়েই চলছিল পড়াশোনা। করোনা সেটুকুও কেড়ে নিয়েছে। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় পুষ্টিকর খাবার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়ারা।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য ৪টি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল আছে। তার মধ্যে খড়্গপুরের নিমপুরায় চলা প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রে মূক-বধির পড়ুয়াদের সঙ্গে মানসিক প্রতিবন্ধী পড়ুয়ারাও আছে। সেখানে সব মিলিয়ে পড়ুয়া সংখ্যা ১৯০ জন। ডেবরায় রয়েছে মূক ও বধিরদের শশাঙ্কশেখর বোধ নিকেতন। বাকি দু’টি স্কুল রয়েছে দাসপুরে ও বেলদার খাকুড়দায়। দাসপুরের স্কুলটি মূলত দৃষ্টিহীনদের জন্য। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগেও এরকম কয়েকটি স্কুল চলে এই জেলায়। তাদের মধ্যে গড়বেতার মা সর্বমঙ্গলা প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রে শতাধিক ছাত্রছাত্রী আছে। মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি সংস্থা গোলকুয়াচকে এমন স্কুল চালায়। পাশের জেলা ঝাড়গ্রামে মূক ও বধিরদের একটি বেসরকারি স্কুল রয়েছে। তবে এই ধরনের কোনও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল সেখানে নেই।

গড়বেতার মা সর্বমঙ্গলা প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ মাইতি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় আমাদর অনেক পড়ুয়াই পড়া ভুলে গিয়েছে। তাদের বাড়িতে গিয়ে ও খোঁজ নিয়ে দেখছি, অনভ্যাসের জন্য সাধারণ বিষয়ও বলতে পাচ্ছে না তারা।’’ খড়্গপুরের প্রতিবন্ধী নিমপুরার পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষক সুজিত মণ্ডল জানান, দূরের পড়ুয়ারা কী অবস্থায় রয়েছে তার খোঁজ নেওয়ার পরিকল্পনা হয়ছে। বহু পড়ুয়া স্কুলছুট হয়ে যাবে বলেই আশঙ্কা তাঁর। ডেবরার মূক-বধির স্কুলের প্রধান শিক্ষক জগদীশচন্দ্র প্রামাণিকর গলাতেও শোনা গেল সেই আশঙ্কা। তাঁর খেদ, ‘‘স্কুল বন্ধ থাকায় প্রতিবন্ধীদের প্রতিবন্ধকতা আরও বাড়ছে।’’ গোলকুয়াচকের স্কুলটি যারা চালায় সেই সংস্থার সম্পাদক অলোক ঘোষ বলেন, “আমাদের স্কুলে প্রায় ৪০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তাদের অনেক কিছু শেখানো হত। থেরাপির মাধ্যমে। সে সব কী আর মনে আছে তাদের!’’

শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পড়ানোর সরঞ্জামগুলিও নষ্ট হতে বসেছে। বই-খাতা উইপোকায় কাটছে। ওই কেন্দ্রগুলিতে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হতো। দরিদ্র পরিবার থেকে আসা প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের কাছে যা খুবই জরুরি ছিল। স্কুল বন্ধ থাকায় সেসবও দেওয়া যাচ্ছে না সেভাবে। ফলে দুর্বল হচ্ছে তারা। খড়্গপুরের নিমপুরায় প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘আমরা স্থানীয় পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল দিচ্ছি। কিন্তু আবাসিক পড়ুয়াদের তা দিতে পারছি না। ওদের অনেকেরই বাড়ির অবস্থা ভাল নয়। পুষ্টিকর খাবার না পাওয়াটা সত্যিই চিন্তার।” (চলবে)

(তথ্য সহায়তা: বরুণ দে, দেবমাল্য বাগচী, রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য, কিংশুক গুপ্ত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Specially Abled Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE