Advertisement
E-Paper

‘হার্মাদ’দের জমিতে সভা, প্রশ্নে শুভেন্দু

সামন্ত পরিবারের জমিতে শুভেন্দু সভা করা ঘিরে কটাক্ষ করছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, নন্দীগ্রামে পায়ের নীচে মাটি ধরে রাখতে শুভেন্দু ‘হার্মাদ’দেরই আশ্রয় নিচ্ছেন।        

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:৫৫
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বিজেপি’তে যোগদানের পরে গত কয়েকদিনে একাধিকবার নন্দীগ্রামে এসেছেন শুভেন্দু অধিকারী। করেছেন সভা। প্রায় প্রতিবারই তাঁর বক্তব্যের নির্যাস বা সভাস্থল নির্বাচনে ফিরে আসছে জমি আন্দোলনের যোগ।

শুক্রবারও নন্দীগ্রামের ভাঙাবেড়ায় একটি প্রতিবাদ সভা করেছেন শুভেন্দু। যাদের জমিতে এ দিনের সভা হয়েছে, সেই সামন্ত পরিবারের নাম প্রত্যক্ষ্যভাবে জড়িত রয়েছে জমি আন্দোলনের সঙ্গে। পরিবারের এক সদস্যের বিরুদ্ধে খুনের মামলা এখনও চলছে। ঘরছাড়া ওই সামন্ত পরিবারের জমিতে শুভেন্দু সভা করা ঘিরে কটাক্ষ করছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, নন্দীগ্রামে পায়ের নীচে মাটি ধরে রাখতে শুভেন্দু ‘হার্মাদ’দেরই আশ্রয় নিচ্ছেন।

অন্যদিকে, সভা থেকে শুভেন্দু এ দিন যেমন নাম না করে যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন, তেমনই দক্ষিণ কাঁথি এলাকায় আগের নির্বাচনে বিজেপি’র হারকে জয়ে বদলে দেওয়ার হুঙ্কার দিয়েছেন।

গত ২৯ ডিসেম্বর নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর একটি অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে আসার পথে তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার প্রতিবাদেই এ দিন নন্দীগ্রাম দক্ষিণ মণ্ডল-১ বিজেপির তরফ সভা ডাকা হয়েছিল। সেখানে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আগের নির্বাচনে দক্ষিণ কাঁথিতে বিজেপি ১৯ হাজার মাইনাস ছিল। কাঁথিতে আমার ভাই সৌমেন্দু-সহ ৫ হাজার মানুষ বিজেপিতে যোগদান করবেন। তাদের পরিবারের চারজন সদস্য যদি বিজেপিকে ভোট দেন, তাহলে অন্তত ২০ হাজার ভোট পড়বে। কাঁথি দক্ষিণে বিজেপি প্লাস হয়ে গেল।’’

এর পরেই শুভেন্দু বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সিবিআই বিনয় মিশ্রর বাড়িতে ঢুকতেই তাঁর দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ সভাতে নাম না করে অভিষেককে তোলাবাজ ভাইপো বলেও কাটক্ষ করেছিলেন শুভেন্দু। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সিবিআই কাছাকাছি চলে এসেছে। আর একটা চৌকাঠ পেরোলেই তোলাবাজের বাড়ি।’’ আগামী ৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে বিজেপি’ সভায় কাউকে আসতে বাধা দিলে তাঁকে ফোন করার বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু।

শুভেন্দু এ দিন সভা থেকে যাই বার্তা দেন, স্থানীয় তৃণমূল নেতত্ব জানাচ্ছেন, ওই সবা হয়েছে ভাঙাবেড়ার বাসিন্দা সুধাংশুশেখর সামন্তের জমিতে। স্থানীয় সূত্রের খবর, নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের সময় থেকেই ওই সামন্ত পরিবার ঘরছাড়া। আন্দোলনের সময় সামন্ত পরিবারে সদস্যরা ছিলেন সিপিএমের নেতা। তাঁদের বাড়ি থেকেই গুলি চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। ২০০৭ সালে ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে তিনজন নিহত হয়েছিলেন। অভিযোগ, সে সময় সুধাংশুর ছেলে শঙ্কর সামন্তের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরেই উত্তেজিত জনতা সামন্ত পরিবারের উপরে চড়াও হয়েছিলেন এবং শঙ্কর পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল। আবার সামন্ত পরিবারের আরেক ছেলে নব সামন্তর বিরুদ্ধে খুন করার অভিযোগে মামলা চলছে।

তৃণমূলের অভিযোগ, যে পরিবার নন্দীগ্রামের মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করছিল, এ দিন সভা করার জন্য বিজেপি নেতা শুভেন্দু তাঁদের বাড়ির জায়গায় বেছে নিয়েছেন। নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘‘আসলে শুভেন্দু অধিকারীর পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই আবার হার্মাদদের উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে। রাজনৈতিক অশান্তি বাঁধিয়ে নন্দীগ্রাম দখল করতে চান উনি। এক সময় শুভেন্দুর প্ররোচনাতেই শঙ্কর সামন্তের মৃত্যু হয়েছিল। আর এ দিনের সভায় অধিকাংশ মানুষই এসেছিল খেজুরি থেকে। কারণ, উনি জানেন নন্দীগ্রামের মানুষ ওঁর সঙ্গে নেই।’’

সভাস্থল বিতর্ক প্রসঙ্গে বিজেপি’র নন্দীগ্রাম-এক দক্ষিণ মণ্ডল সভাপতি জয়দেব দাস বলেন, ‘‘সভা করার জন্য জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। যে ব্যক্তিই জমি দিতে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন, তৃণমূল তাঁকেই ভয় দেখাচ্ছেন। তাই আমরা সুধাংশুবাবুর কাছে আবেদন করেছিলাম। উনি আবেদনে সাড়া দিয়েছেন।’’

Suvendu Adhikari CPM tmc BJP nandigram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy