খুদে কমরেড, সূর্যকান্ত মিশ্রের সভায়
জোট আবহে ভয় ভাঙার ছবি রাজ্য জুড়ে। কেশপুর-গড়বেতার মতো এলাকাতেও সিপিএমের বন্ধ কার্যালয় খুলছে, বামেদের জাঠা-পদযাত্রা, সভায় ভিড় হচ্ছে। এ সবের নেপথ্যে দলের নতুন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের ভূমিকার কথাই বলেই সিপিএম। অথচ, সূর্যবাবুর বিধানসভা কেন্দ্র নারায়ণগড়েই চাপা সন্ত্রাসের ছবি সামনে এল মঙ্গলবার।
মঙ্গলবার সকাল। সূর্যবাবুর দ্বিতীয়দিনের প্রচারের তোড়জোর চলছে। বেলদা পার্টি অফিসে বাইরে হাজির সিপিএম কর্মীরা। সূর্যবাবু নামতেই স্লোগান তুলে মিছিল শুরু হল। বেলদা বাজার পর্যন্ত সেই মিছিলের দৈর্ঘ্য অবশ্য বেশি ছিল না। পরে নারায়ণগড় বাজার থেকে চাতুরিভাড়া দলীয় কার্যালয় পর্যন্ত মিছিলেও ভিড় বিশেষ জমেনি। তবে মনোনয়ন পেশের আগে সূর্যবাবুর নেতৃত্বে খড়্গপুরের ইন্দা মোড় থেকে মহকুমাশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত বাম-মিছিল ভিড় হয়েছিল ভালই। বিকেলে ফের নারায়ণগড়ের কোতাইগড়ে কর্মিসভাও ভরা ছিল। এসেছিলেন গ্রামরাজ অঞ্চলের অলঙ্কারপুরের কয়েকজন কংগ্রেস কর্মীও। কিন্তু তাঁদের হাতে মাত্র দু’-একটি কংগ্রেসের পতাকা। এমন অবস্থা কেন? কংগ্রেস কর্মী রঞ্জিত বাগ, অনিল হাজরারা বলেন, “আমাদের অলঙ্কারপুরে কংগ্রসের প্রভাব রয়েছে। আমাদের নেতা দীপক দোলাই এখনে আসতে বলেছিলেন। আমরা জনা দশেক এসেছি। অনেকেই আসতে পারেনি। কারণ তৃণমূলের থেকে লুকিয়ে আসতে হয়েছে।”
সিপিএমের কর্মীদের অবস্থা আরও করুণ। এ দিন সভায় আসা তালডিহার সুচিত্রা মাণ্ডি, ফুলমনি হাঁসদারা বলছিলেন, “এখানে আসার আগে স্থানীয় তৃণমূল নেতা কিঙ্কর চক্রবর্তী পথ আটকেছিল। বলেছে ফিরে গেলে মারবে। আমরা ভয় পাই না বলে এসেছি। কিন্তু অনেকেই ভয় পেয়েছে।” মকরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা সিপিএমের মিঠু ভুঁইয়ার আবাক বক্তব্য, “আমার এলাকা থেকে আমি একাই এসেছি। কোনও কর্মীকে সভায় নিয়ে আসতে পারিনি। ওখানে তৃণমূলের অত্যাচার চলছে।” সিপিএমের নারায়ণগড় জোনাল সম্পাদক মদন বসুরও অভিযোগ, “কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে সন্ত্রাস এখনও রয়েছে। তবে ৭০ ভাগ মানুষ আমাদের পক্ষে রয়েছে। মানুষ এই সন্ত্রাসের বাঁধ ভেঙে আমাদের ভোট দেবেই।” এ দিনের কোতাইগড়ের সভা থেকে সূর্যবাবুও বলেন, “একটা দমবন্ধ পরিস্থিতি হয়েছে। হামলা, মামলা, জরিমানা হচ্ছে। আমরা এই পরিস্থিতি বদলাব।”
সন্ত্রাসের এই পরিস্থিতির পিছনে তৃণমূলকে দায়ী করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী শাসাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী তিনদিন থাকবে। তার পরে চলে যাবে। আমি বলছি, মুখ্যমন্ত্রী ঠিক বলেছেন। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী যাওয়ার পরে আপনাদের নিরাপত্তা আমাদের হাতে থাকবে। সেখানে পাঁচ বছরে আমাদের ওপরে যা হয়েছে তা হবেনা। নিরাপদে থাকবেন আপনারা।” তৃণমূল সরকারকে হটাতে মানুষের জোটের পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি। তাঁর কথায়, “আমাদের কোনও স্বার্থ নেই। বেঁচে আছি মানুষের জন্য। মরতে হলেও মানুষের জন্য মরব। মানুষের জয় রোখার ক্ষমতা কারও নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy