Advertisement
E-Paper

‘যে মেয়ে দড়িতে গিঁট দিতে পারে না, সে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলল কী ভাবে’

মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে। এমনটাই দাবি করলেন মেদিনীপুর কলেজের মৃত ছাত্রী রচনা দাসের বাবা-মায়ের। পুলিশের কাছে এসে মেয়ের মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করার আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৭ ১৩:২০
শোকাহত: কোতোয়ালি থানায় রচনার বাবা-মা। নিজস্ব চিত্র

শোকাহত: কোতোয়ালি থানায় রচনার বাবা-মা। নিজস্ব চিত্র

মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে। এমনটাই দাবি করলেন মেদিনীপুর কলেজের মৃত ছাত্রী রচনা দাসের বাবা-মায়ের। পুলিশের কাছে এসে মেয়ের মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করার আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা।

রচনার বাবা রামশঙ্কর দাস বলেন, “আমার মনে হয় না এটা আত্মহত্যা। মেয়ের এই মৃত্যু আমার কাছে রহস্যজনক। আমরা চাই পুলিশের তদন্তে মেয়ের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সামনে আসুক।’’ রচনার মা রীতা দাসও কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, “যে মেয়ে দড়িতে গিঁট দিতে পারে না, সে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়তে পারে না।’’ সোমবার দুপুরে বাবা-মায়ের সঙ্গে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় এসেছিলেন রচনার দাদা রাজেশ দাস। রাজেশও বলছিলেন, “বোন এ ভাবে আত্মহত্যা করতে পারে না।’’

এ দিন কোতোয়ালি থানায় লিখিত ভাবে ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করেন রামশঙ্করবাবু। মেয়েহারা বাবার কথায়, “ওকে তো আর ফিরে পাব না। আমি চাই, অন্য কোনও মেয়ে যেন এ ভাবে না চলে যায়। পুলিশ সঠিক তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’’ রামশঙ্করবাবু আরও বলেন, “মেয়ে বলত, যারা কলেজের শিক্ষকদের কাছে টিউশন নেয় তারাই বেশি নম্বর পায়।’’ রচনা কলেজের শিক্ষকদের কাছে টিউশন নিতেন না। তাই তিনি কম নম্বর পেয়েছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন রামশঙ্করবাবু। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে সব দিক দেখা হচ্ছে।

গত শনিবার সকালে গোলকুয়াচকে মেদিনীপুর কলেজের গার্লস হস্টেলের ঘরে মেলে রচনার ঝুলন্ত দেহ। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির কিশোরনগরের বাসিন্দা রচনা মেদিনীপুর কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। শুক্রবার প্রথম সেমেস্টারের ফলপ্রকাশ হয়। তাতে প্রত্যাশিত নম্বর পাননি রচনা। সেই অবসাদেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছিল। রচনার মৃত্যুর তদন্তের দাবিতে এ দিন মেদিনীপুর কলেজে বিক্ষোভ-কর্মসূচি করেছে টিএমসিপি, ডিএসও। ছিলেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরিও।

কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরাকে ঘেরাও করেই বিক্ষোভ চলে। অভিযোগ, কলেজে টিউশনরাজ চলছে। কলেজের শিক্ষকদের কাছে টিউশন না নিলে নম্বর কম দেওয়া হয়। স্বশাসিত কলেজের কথা বলে ছাত্রছাত্রীদের উপরে অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল— ‘রচনার মৃত্যুধ্বনি পৌঁছক টাকা পিপাসু শিক্ষকদের কর্ণকুহরে।’ টিএমসিপি নেতা বুদ্ধ মণ্ডলও বলেন, “আমরা অবিলম্বে কলেজ শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ, ছাত্রছাত্রীদের উপর মানসিক নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়েছি।’’

অধ্যক্ষ গোপালবাবু অবশ্য বলেন, “তেমন কোনও বিক্ষোভ হয়নি। ছাত্রছাত্রীরা কিছু কথা জানিয়েছে।” সত্যি কি শিক্ষকদের টিউশনরাজ চলছে? অধ্যক্ষের জবাব, “ছাত্রছাত্রীদের কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে বলেছে। খতিয়ে দেখছি।”

Student Death Police Station
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy