বার্তা: শিবিরে হাজির কচিকাঁচারা। নিজস্ব চিত্র
স্পর্শের ভাল-মন্দ বোঝা উচিত কচি বয়সেই। বিশেষ করে শরীরের চারটি অংশে অন্য কারও স্পর্শ কখনওই মেনে নেওয়া যাবে না। সতর্ক তো থাকতেই হবে। তা সত্ত্বেও এমনটা ঘটলে কীভাবে আত্মরক্ষা করবে শিশুরা, সেই সচেতনতারই বার্তা দিলেন আইআইটির পড়ুয়ারা।
খড়্গপুর শহরের পিছিয়ে পড়া এলাকা পাঁচবেড়িয়ার এক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শনিবার এই সচেতনতা শিবিরের আয়োজক খড়্গপুর আইআইটির কিছু পড়ুয়া। এঁরা সকলেই শিশুর অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘চাইল্ড রাইটস অ্যান্ড ইউ’ বা ‘ক্রাই’-এর অধীনে স্বেচ্ছাসেবক। শিশুর যৌন নিগ্রহ রুখতে দেড় বছর ধরে তাঁরা ‘বালরক্ষক’ নামে একটি প্রকল্প গড়ে প্রচার করছেন। পড়ুয়া ও অভিভাবকদের সচেতন করছেন আইআইটির পড়ুয়ারা।
ক্রাই-এর অধীনে ২০০৯ সাল থেকে খড়্গপুর আইআইটিতে শিশুর অধিকার নিয়ে নানা কাজ করছেন পড়ুয়ারা। মূলত গবেষক পড়ুয়াদের সঙ্গে এই কাজে এখন যুক্ত হয়েছেন বিটেক ও এমটেক পড়ুয়ারা। সব মিলিয়ে খড়্গপুর আইআইটির প্রায় ৫০জন পড়ুয়া ক্রাই-এর স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন পড়ুয়া ‘বালরক্ষক’ নামে একটি প্রকল্প গড়ে গত দেড় বছর ধরে শিশুর যৌন নিগ্রহ রোধে প্রচার অভিযান চালাচ্ছে। ইতিমধ্যেই তাঁরা খড়্গপুর গ্রামীণের বেশ কয়েকটি পিছিয়ে থাকা এলাকার স্কুলে গিয়ে খুদে পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতা প্রচারে কাজ করেছেন। সম্প্রতি তাঁরা আমলাতোড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, আরাশোলি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বলরামপুর হাইস্কুল, হিরাডি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হিরাডি উচ্চ প্রাথমিক, হিজলি জুনিয়ার বেসিক স্কুলে এই শিবির হয়েছে। ভাল সাড়া মেলায় এ দিন তাঁরা পাঁচবেড়িয়ার ‘খড়্গপুর মিশন লিভিং স্কুলে’ শিবির করে। যোগ দেয় নার্সারি থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকেরা।
মানুষের শরীরের মুখ, বুক, পেটের নিচ, কোমরের পিছন— এই চারটি অংশ খুব স্পর্শকাতর। তাই এই সব অংশে কাউকে হাত দিতে না দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। কেউ এমন স্পর্শ করলে চিৎকার করে আত্মরক্ষা তারপর অভিভাবককে সব জানাতে বলা হয়েছে। এ দিন ‘কোমল’ নামে একটি ভিডিয়ো দেখানো হয়েছে শিবিরে। ‘বালরক্ষক’ প্রকল্পের আহ্বায়ক আইআইটির ম্যানেজমেন্ট স্কুলের গবেষক ছাত্র রাজর্ষি দেবনাথ বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে ৬টি স্কুলে এমন শিবির করে সাড়া পেয়েছি। যতটা সহজ উপায়ে শিশুদের যৌন নিগ্রহ ঠেকানো যায় তার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই অভিযানে আমরা প্রাথমিকভাবে পিছিয়ে পড়া এলাকা বেছে নিচ্ছি।” পাঁচবেড়িয়ার শিবিরে এসেছিল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শেখ ফারদিন, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আফিয়া পারভিনরা। তাদের কথায়, “অনেক সময় আমরা বুঝিও না যে কেউ ওই সব অংশে স্পর্শ করছে। এর পরে কেউ এমন কাজ করলে যা করার করব!” স্কুলের অধ্যক্ষ অলোক আরিক মানছেন, “এই শিবির বড় পাওনা। সকলেরই এই সচেতনতা খুব জরুরি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy