Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Suvendu and Dilip shared stage

ধর্মীয় মঞ্চে পাশাপাশি শুভেন্দু ও দিলীপ

সনাতনী জাগরণ সঙ্ঘে’র বেলদা গৌরাঙ্গ রাইস মিলে রবিবার ছিল সহস্র কন্ঠে গীতাপাঠের আয়োজন। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু ও দিলীপ।

বেলদাতে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে পাশাপাশি দুই নেতা।

বেলদাতে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে পাশাপাশি দুই নেতা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলদা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৩৪
Share: Save:

রাজনীতি নয় ধর্মীয় মঞ্চে দীর্ঘদিন পরে একসঙ্গে দেখা গেল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষকে। দু’জনে কোলাকুলি করলেন। পাশাপাশি বসলেন। কথা বললেন। দর্শকাসন থেকে আওয়াজ উঠল, ‘‘দু’জনের যুগলবন্দি যুগ যুগ জিও।’’

‘সনাতনী জাগরণ সঙ্ঘে’র বেলদা গৌরাঙ্গ রাইস মিলে রবিবার ছিল সহস্র কন্ঠে গীতাপাঠের আয়োজন। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু ও দিলীপ। পশ্চিম মেদিনীপুরে দু’জনকে একমঞ্চে অনেক দিন পরে দেখা গেল এ দিন। মেদিনীপুর দিলীপের সাংসদ এলাকা। এখানে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সচরাচর আসেন না শুভেন্দু। অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাঁকে মাঝে মধ্যে দেখা যায়। অরাজনৈতিক কর্মসূচিতেও আগে, পরে আসেন শুভেন্দু, দিলীপ। তৃণমূল ছেড়ে মেদিনীপুরে অমিত শাহের জনসভাতেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু। মঞ্চে ছিলেন দিলীপও। তিনি তখন দলের রাজ্য সভাপতি। একুশের ভোটের আগে আরও একবার খড়্গপুরে তাঁদের একমঞ্চে দেখা গিয়েছিল। তারপর আর দেখা যায়নি।

এ দিন প্রথমে উপস্থিত হয়েছিলেন দিলীপ। তাঁর বক্তৃতার মাঝেই পৌঁছন শুভেন্দু। দিলীপ বলেন," মাননীয় শুভেন্দুদা আসছেন। একবার সকলে হাততালি দিন। তাঁকে স্বাগত জানান।" দিলীপের বক্তৃতা শেষের পর মঞ্চে কোলাকুলি পর্ব শুরু হয়। দু’জনে পাশাপাশি বসে কথাও বলেন। পরে বলতে উঠে শুভেন্দু বলেন, ‘‘মান্যবর সাংসদ, রাষ্ট্রবাদী প্রচারক, আমার অগ্রজ নেতা দিলীপ ঘোষ মহোদয়। তিনি এই এলাকায় ছোটবড় সব কর্মসূচিতেই থাকেন।" এ দিন অন্য একটি কর্মসূচি থাকায় কিছুটা আগেই সভা ছাড়েন দিলীপ। তখনও ছিলেন শুভেন্দু।

মঞ্চ ধর্মীয়, তা হলে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বেরা আমন্ত্রিত কেন? উদ্যোক্তাদের দাবি, তাঁরা ‘সনাতনী সেবক’ হিসেবেই উপস্থিত ছিলেন। প্রথমে ঠিক ছিল শুভেন্দু থাকবেন। উদ্যোক্তারা শনিবার জানান, আসবেন দিলীপও। তবে সভায় তেমন ভিড় চোখে পড়েনি। এর জন্য খারাপ আবহাওয়াকে দায়ী করেছে সঙ্ঘ। আরএসএসের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত এই সঙ্ঘের প্রমুখ বাসুদেব বেরা বলেন, ‘‘ব্রিগেডের লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের কর্মসূচিতে আমরা থাকতে পারিনি। তাই এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। গীতাপাঠ মানুষের মনকে পবিত্র করে, জাগরণ ঘটায়। তাই এই কর্মসূচি গ্রহণ।’’

রাজনৈতিক মঞ্চ না হলেও এ দিন শুভেন্দুর বক্তব্য ‘অরাজনৈতিক’ হয়নি। তিনি সনাতন হিন্দুদের মধ্যে বিভাজনের কথা বলতে গিয়ে জাতভিত্তিক গণনার প্রসঙ্গ তোলেন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কেউ কেউ বলে তোমরা এক থাকো, নইলে এরা হিন্দু করে দেবে। আমাদেরকে কী বলে? জাতভিত্তিক গণনা। আমি ব্রাহ্মণ, আপনি করণ, কায়স্থ, মাহিষ্য, তফসিলি, ওবিসি হিন্দু। আপনাকে ভাগাভাগি করার জন্য এই কাজটা করে।’’ এর পরেই জাতভিত্তিক গণনাতে উৎসাহ না দেখানোর পরামর্শ দেন শুভেন্দু। বিহারে ইতিমধ্যে জাতভিত্তিক গণনা হয়েছে। এ রাজ্যেও জাতভিত্তিক গণনার পক্ষে সওয়াল করে নানা কর্মসূচি হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি হিন্দু ভোটের মেরুকরণ চায় বলেই রামমন্দির নিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ শুরু হয়েছে। হিন্দু ভোটের ভাগাভাগি আটকাতেই জাতভিত্তিক গণনা নিয়ে উৎসাহিত নন বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সুরেই কথা বলছেন শুভেন্দু।

বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক দল। তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলছেন, ‘‘শুভেন্দুর এত জ্ঞান গীতা পাঠ করে হয়নি। সিবিআইয়ের সিআরপিসি পাঠ করে হয়েছে! সেই ২০২০ সালের নভেম্বরের আগে কোথায় ছিল এই সব জ্ঞান? তখন তো তৃণমূলের লাইনে কথা বলতেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Belda Suvendu Adhikari Dilip Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE