লোকসভা ভোটে নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে দুই লোকসভা আসন কাঁথি আর তমলুক তাঁর পাখির চোখ। দলের বিজয়া সম্মেলনের সভায় বিষয়টি আরও একবার স্পষ্ট করলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি, ওই সভা থেকে নাম না করে ফের তাঁর ‘পড়শি’ তথা কারা মন্ত্রী অখিল গিরিকে ফের আক্রমণ করলেন।
রবিবার বিকেলে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির উদ্যোগে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দলের নির্বাচিত জন প্রতিনিধি এবং সাংগঠনিক পদাধিকারীদের উদ্দেশ্যে শুভেন্দু বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী এনডিএ জোটের ঘোষিত প্রধানমন্ত্রী। তৃতীয় বার তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য ৪০০ আসন জেতাতে হবে। আর সেই ৪০০ আসনের মধ্যে কাঁথিকে থাকতেই হবে।’’ একই সঙ্গে তিনি কাঁথি লোকসভা আসনের জন্য দলের প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান বেঁধে দেন। বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে কাঁথি লোকসভাতে আমরা ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছি। এই ব্যবধান ছ’গুণ বাড়াতে হবে। তিন লক্ষ ভোটের ব্যবধানে কাঁথিকে মোদিজীর হাতে তুলে দিতে হবে।’’ শুভেন্দু এ দিন দাবি করেছেন, তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী তাঁর সঙ্গে যোগযোগ রেখে চলছে। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের চারটা- পাঁচটা গোষ্ঠী। তার মধ্যে তিনটি গোষ্ঠী সব সময় আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। তারা দুর্নীতি পরায়ণ তাই, তাদের বিজেপিতে জয়েন করাব না। কিন্তু তাদের সমর্থন কীভাবে আমরা পেতে পারি, সে দায়িত্ব আমার কাঁধে ছেড়ে দিন।’’
দুর্নীতি নিয়ে জেলার শাসকদলের মন্ত্রী-বিধায়কদেরকেও এদিন আক্রমণ করেন বিরোধী দলনেতা। নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘একজন হাফ মন্ত্রী এদিক-ওদিক লাফালাফি করছে। চার কোটি টাকা দিয়ে কাঁথিতে একটা হাসপাতাল কিনেছেন। আর কলকাতার সিঁথির মোড়ে এক কোটি টাকার বেশি মূল্যে একটা ফ্ল্যাট কিনেছেন। সব হিসাব আমার কাছে রয়েছে। আয়কর দফতর নেমন্তন্ন করেছে।’’ উল্লেখ্য, এক দিন আগেই শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, আয়কর কারা মন্ত্রী অখিল গিরিকে নোটিস পাঠিয়েছে। এদিন তিনি নাম না করে জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিককেও নিশানা করেন। শুভেন্দু বলেন, ‘‘দুটো জেলায় এখন ঘুরছে। সমস্ত মোবাইলের টাওয়ার থেকে তেল চুরি করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে চিঠি লিখে জানিয়েছি।’’ যদিও, উত্তম বলছেন, ‘‘তমলুক আর কাঁথির দুটোতেই তৃণমূল জয়ী হবে। একথা নিশ্চিত জানেন বিরোধী দলনেতা। দলের কর্মীরা যাতে হতাশা না হয়ে পড়েন, সে জন্য এমন কথাবার্তা বলেছেন।’’
শুভেন্দু সন্ধ্যায় এ দিন তমলুক শহরের পদুমবসানেও হাজির ছিলেন। সেখানে জেলা বিজেপি কার্যালয় প্রাঙ্গণে দলের তমলুক নগর মণ্ডলের উদ্যোগে বিজয়া সম্মিলনী হয়। সেখানে তিনি বিজেপি বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক দলের নেতা উদয়নিধি স্ট্যালিনের সমালোচনা করেন। ওই বিজয়া সম্মিলনীতে উপস্থিত শুভেন্দু দীপদান কর্মসূচিও পালন করেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)