জয়োল্লাস: মেদিনীপুরের চাঁদড়ায়। নিজস্ব চিত্র
ভোটে জেতার পরে মাস খানেক আত্মগোপন করে ছিলেন। সেখান থেকে ফিরেই পঞ্চায়েতের প্রধান। পূর্ণিমা সিংহ মানছেন, “ভাগ্য সঙ্গে ছিল। না হলে এটা হত না।” ধেড়ুয়ায় তখন ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ঘুরপাক খাচ্ছে, উড়ছে গেরুয়া আবির।
তবে শুধু ভাগ্য নয়, কাজে এসেছে কৌশলও। সোমবার মেদিনীপুর সদর ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের নজর ছিল ধেড়ুয়ায়। কারণ, এখানে তৃণমূল-বিজেপি দু’দলই ৪টি আসনে জেতায় ‘টাই’ হয়েছিল। দল ভাঙাতে পারে তৃণমূল, এই আশঙ্কায় দলের জয়ীদের গোপন ডেরায় রেখেছিল বিজেপি। এ দিন বেলা বারোটায় বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শুরুর ঠিক আগে একটি গাড়িতে বিজেপির ৪ জন জয়ী সদস্য পঞ্চায়েত কার্যালয়ে আসেন। ততক্ষণে সেখানে পৌঁছেছেন তৃণমূলের ৪ জন। অশান্তি এড়াতে নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল চারপাশ। হাজির ছিলেন ডেপুটি পুলিশ সুপার উৎপল পুরকাইত। গোড়ায় প্রধান-উপপ্রধান নির্বাচনে ভোটাভুটির ফলও ‘টাই’ হয়। শেষে লটারিতে প্রধান হন বিজেপির পূর্ণিমা সিংহ আর উপপ্রধান বিজেপিরই ভবেশ বিশুই।
গড়বেতা ২ অর্থাৎ গোয়ালতোড় ব্লকের ত্রিশঙ্কু পাথরপাড়া পঞ্চায়েতেও বাজিমাত করেছে বিজেপি-র কৌশল। এখানে ১০টি আসনের ৫টিতে তৃণমূল, ৪টিতে বিজেপি ও একটিতে নির্দল প্রার্থী জিতেছিলেন। নির্দলকে কাছে টেনে বাজিমাত করতে চেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু তৃণমূলের নির্বাচিত সদস্য রুমা মান্নাকে প্রধান পদে প্রার্থী ঠিক করে বিজেপি। ভোটাভুটিতে ৬-৪ ব্যবধানে প্রধান হয়ে যান রুমা, উপপ্রধান হন বিজেপির দীননাথ মাহাতো। পরে বিজেপি নেতা পশুপতি দেবসিংহের অভিযোগ, ‘‘পুলিশের সাহায্য নিয়ে তৃণমূল রুমা মান্নাকে তুলে নিয়ে গিয়েছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
জেলার অন্যত্র অবশ্য ভোটের ফল আর বোর্ডের সমীকরণে বিশেষ ফারাক হয়নি। ১৪-৬ ব্যবধানে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে প্রত্যাশা মতোই চাঁদড়ায় বোর্ড গড়েছে বিজেপি। পাশের মণিদহে ভোটাভুটিতে প্রধান হন তৃণমূলের অঞ্জলি সরেন, উপপ্রধান তৃণমূলেরই অঞ্জন বেরা। শালবনির যে তিনটি পঞ্চায়েতে এ দিন বোর্ড হয়েছে, তার মধ্যে ভীমপুর এবং লালগেড়িয়ায় প্রত্যাশিত ভাবেই বোর্ড পেয়েছে বিজেপি। আর দেবগ্রামে বোর্ড গড়েছে তৃণমূল। গোয়ালতোড়ের জিরাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে আবার বিজেপির নির্বাচিত সদস্য পুষ্প মাল তৃণমূলের পক্ষে ভোট দেওয়ায় প্রধান হয়েছেন তৃণমূলের লক্ষ্মীমণি হেমব্রম। উপপ্রধান অবশ্য বিজেপি-র। তবে মাকলিতে বোর্ড গড়েছে বিজেপি। পিংবনিতে বিজেপি বোর্ড গড়লেও উপপ্রধান তৃণমূলের। গোয়ালতোড়, গোহালডাঙা এবং চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের নয়াবসত ও রসকুণ্ডু পঞ্চায়েতেও বোর্ড গড়েছে তৃণমূল। পশ্চিম মেদিনীপুরের ২১টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি। তৃণমূলের দাবি ছিল, এই সংখ্যক গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়তে পারবে না বিজেপি। সেই দাবি অবশ্য ধাক্কা খেয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘তৃণমূল দল ভাঙানোর চেষ্টা করেছিল। আমাদের সকলে এককাট্টা থাকায় ওদের কৌশল কাজে আসেনি।’’ আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, ‘‘আমরা কোথাও জোরজবরদস্তি করিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy