পুরনো মামলার অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে গিয়ে বিজেপি সমর্থকদের পরিবারকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল পুলিশের ওসির বিরুদ্ধে। যা নিয়ে সমাজ মাধ্যমে সরব হলেন খোদ নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি ওসির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার জন্য জাতীয় তফসিল কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। ওই দিন দুপুরে ভগবানপুর-২ ব্লকের জুখিয়া পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এক্তারপুর গ্রামে যায় ভূপতিনগর থানার পুলিশ। গত বছর ওই এলাকায় একাধিক অশান্তির ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল বিজেপির স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুজিত দেবনাথ-সহ বেশ কয়েকজনের। তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি রয়েছে। পুলিশ সোমবার দুপুরে এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালান। স্থানীয় বিজেপির দাবি, অনুপ দেবনাথ এবং মঙ্গল দেবনাথ নামে দুজনের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। সে সময় তাঁরা কেউই ছিলেন না। তাঁদের না পেয়ে বাড়িতে পুলিশ হামলা চালায় বলে অভিযোগ। পরিবারের লোকজনের লোকজনের খাবার ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। বাধা দিতে গেলে মহিলাদের নানা কটুক্তিও করা হয় বলে দাবি।
স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলছেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে ওই এলাকায় বিজেপির রাজনৈতিক কর্মকান্ডকে স্থগিত করার চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। মিথ্যে মামলায় দলের কর্মীদের ফাঁসাচ্ছে। এখন কয়েকজন কর্মীর বাড়িতে ঢুকে ভূপতিনগর থানার ওসি গোপাল পাঠক অত্যন্ত নোংরা আচরণ করেছেন। ওঁদের খাবারের থালা ছুড়ে দিয়েছেন। মারধরও করা হয়েছে।’’ যদিও অভিযোগ প্রসঙ্গে ওসি গোপাল পাঠক বলছেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে, এরকম লোকজনেরা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ এলাকায় ঢুকতে সমর্থ হতেই এ ধরনের মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।’’
মঙ্গলবার সকালে পুলিশি অভিযানের একটি ভিডিয়ো নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন টুইটার) পোস্ট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তিনি লেখেন, ‘‘দলিতেরা সুরক্ষিত নয়। মমতার পুলিশ আইন ভেঙে তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের লোকেদের মারধর করছে।’’ এই পোস্টে শুভেন্দু দাবি করেন, তাঁদের দলের কর্মী অনুপ দেবনাথ এবং মঙ্গল দেবনাথকে বাড়িতে না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত পুলিশ হামলা চালিয়েছে। তারা শুধুমাত্র রান্না করা খাবার ছুড়ে ফেলে দেয়নি, বাড়ির মহিলা সদস্যদের মারধর করেছেন। এটা একটা সংগঠিত অপরাধ। এর জন্য ভূপতিনগর থানার ওসি গোপাল পাঠকের বিরুদ্ধে এফআইআর করার দাবি জানিয়েছেন শুভেন্দু। আজ, বুধবার সকালে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলাকায় যাওয়ার কথা রয়েছে বিরোধী দলনেতার।
এমন ঘটনার পর পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েছে শাসকদল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক বলছেন, ‘‘যাঁরা এলাকায় অশান্তির সঙ্গে যুক্ত, সেই সব হার্মাদদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছিল। বিজেপি নেতা এবং বিধায়করা যে রকম অভিযোগ করছেন, তাতে মনে হচ্ছে গোটা ভগবানপুরে একজনই মাত্র বিজেপি কর্মী রয়েছেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)