Advertisement
E-Paper

বাঁধের মেরামতি শুরু ঘাটালে

সেচ দফতর সূত্রে খবর, গত বুধবার রাতে শিলাবতী নদীর ১৫ মিটার বাঁধ জলের চাপে ভেঙে গিয়েছিল। পরে জলের স্রোতে সেই ভাঙা অংশ লম্বায় ১৫০ মিটার বেড়ে গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০৮:০০
নির্মাণ: পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘাটালের প্রতাপপুরে  চলছে নদীবাঁধ মেরামতির কাজ। বুধবার তোলা ছবি। কৌশিক সাঁতরা

নির্মাণ: পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘাটালের প্রতাপপুরে চলছে নদীবাঁধ মেরামতির কাজ। বুধবার তোলা ছবি। কৌশিক সাঁতরা

ঘাটালের প্রতাপপুরে ভাঙা বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হল। বুধবার সেচ দফতরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের উপস্থিতিতে মেরামতির কাজ শুরু হয়। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাঁধ ভাঙার পরই আমরা তা সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছিলাম। দফতরের সিনিয়র বাস্তুকাররা প্রতাপপুরে গিয়ে কাজের তদারকি করছেন।”

সেচ দফতর সূত্রে খবর, গত বুধবার রাতে শিলাবতী নদীর ১৫ মিটার বাঁধ জলের চাপে ভেঙে গিয়েছিল। পরে জলের স্রোতে সেই ভাঙা অংশ লম্বায় ১৫০ মিটার বেড়ে গিয়েছে। আপতত বাঁধের দুই দিকেই আরও বাড়তি পাঁচ মিটার অংশ শক্তপোক্ত করা হবে। সব মিলিয়ে ১৬০ মিটার বাঁধ মেরামত করা হবে। শাল কাঠের সঙ্গে নাইলনের নেটের উপর মাটির বস্তা ফেলা হবে। এখনও ঘাটাল ও দাসপুরের দু’টি ব্লকের বিভিন্ন এলাকা জলের তলায়। বাঁধ মেরামত করতে প্রচুর মাটি প্রয়োজন। তাই উঁচু এলাকা থেকে মাটি কাটার জন্য এদিন বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন সেচ দফতরের আধিকারিকরা। মহকুমা সেচ আধিকারিক উত্তম হাজরা বলেন, “মাটির সমস্যা হবে না। ওই বাঁধ মেরামতির জন্য যে কোনও এলাকা থেকে মাটি আনার ব্যবস্থা হয়েছে। দ্রত বাঁধ সংস্কার করা হবে।”

এদিকে সাত দিন কেটে গেলেও ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। মঙ্গলবার রাত থেকে ঘাটাল শহর থেকে ধীর গতিতে জল নামতে শুরু করলেও দাসপুর-১ ও ২ ব্লকের প্লাবিত এলাকাগুলি থেকে জল নামার কোনও লক্ষণ নেই। বুধবার সারাদিনই ঘাটালের আবহাওয়া মেঘাচ্ছন্ন ছিল। এতেই চিন্তা বেড়েছে ঘাটালের প্লাবিত এলাকার মানুষের। যদিও সেচ দফতরের দাবি, সব কিছু ঠিকঠাক চললে পাঁচ-সাত দিনের মধ্যেই ঘাটাল শহরের সিংহভাগ এলাকা থেকে জল সরে যাবে।

দাসপুরের গোপীগঞ্জের বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার জল নামার জন্য যে লকগেট রয়েছে তার ১৬টি দরজার মধ্যে ১১টি খোলা। বাকি ৫টি খারাপ হওয়ায় খোলা যায়নি। ফলে জল নামতে দেরি হচ্ছে। ঘাটাল শহর এবং নিমতলায় এখনও কোমরসমান জল থাকায় ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কে বুধবারও যান চলাচল শুরু হয়নি। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল ও শহরের নার্সিংহোমগুলিতেও এক অবস্থা। জল না নামার কারণে চিকিৎসায় অসুবিধা হচ্ছে বলে হাতপাতাল সূত্রে খবর। অথচ প্রতিদিনই সর্পদষ্টের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে জ্বর, ডায়েরিয়া ও জলবাহিত নানা রোগের প্রকোপ। চন্দ্রকোনা-১ ও ২ ব্লকের বেশিরভাগ গ্রামের অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা করাতে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের ছুটতে হচ্ছে। ঘাটালের বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতালেও বহু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। প্রসূতি এবং বয়স্ক রোগীরা সমস্যায় পড়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

ত্রাণ নিয়ে এ দিনও বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্ষোভ-বিক্ষোভের খবর এসেছে। প্লাবিত ঘাটালে এখনও হাহাকার বেশি পানীয় জলের। নৌকারও অভাব থাকায় বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ত্রাণ নিয়ে এসেও দুর্গত এলাকায় ঢুকতেই পারছে না। সমস্যায় পড়ছে ব্লক প্রশাসনও।

ঘাটালের মহকুমা শাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান বলেন, “এখনও কিছু নৌকা পেলে ভাল হতো। কারও সন্ধানে নৌকা থাকলে আমাদের কাছে যোগাযোগ করতে পারেন।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “নৌকার অভাবে গ্রামে গ্রামে মেডিক্যাল টিমও ঠিকঠাক পাঠানো যাচ্ছে না।”

Master plan Ghatal Flood Dam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy