Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Theft

Theft: যেন ক্রাইম থ্রিলার! যন্ত্রাংশ চুরি করে তা ফেরত পাওয়ার উপায় চিরকুটে লিখে গেল চোর

গল্পে শোনা, রঘু ডাকাত নাকি চিঠি লিখে ডাকাতি করতে আসত। ডেবরার চোর বা চোরের দল পদ্ধতি একটু বদলে নিল!

যন্ত্রাংশ চুরির পরে পাওয়ার টিলারের কাছে এমনই চিরকুট রেখে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

যন্ত্রাংশ চুরির পরে পাওয়ার টিলারের কাছে এমনই চিরকুট রেখে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। নিজস্ব চিত্র।

দেবমাল্য বাগচী
ডেবরা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২১ ০৭:১৩
Share: Save:

গল্পের রঘু ডাকাত! নাকি টানটান ক্রাইম ওয়েব সিরিজের নয়া প্লট! চুরির ধরন আর খোওয়া যাওয়া জিনিস ফেরত পাওয়ার শর্তাবলি দেখে এমনটা মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার পশং এলাকা থেকে বুধবার রাতে চুরি গিয়েছে পাঁচজন চাষির পাওয়ার টিলারের যন্ত্রাংশ। এটুকু শুনে মনে হতে পারে এ আর নতুন কি! নেহাতই মামুলি চুরি। কিন্তু চমক রয়েছে এর পরে। বৃহস্পতিবার সকালে পাঁচজন চাষি মাঠে গিয়ে দেখতে পান, পাওয়ার টিলারে ঝুলছে ছোট্ট চিরকুট। তাতে লেখা— চুরি যাওয়া যন্ত্রাংশ ফেরত পেতে কাঠ চেরাই মিল মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

গল্পে শোনা, রঘু ডাকাত নাকি চিঠি লিখে ডাকাতি করতে আসত। ডেবরার চোর বা চোরের দল পদ্ধতি একটু বদলে নিল! নাকি তারা অভিনেতা হৃতিক রোশনের ‘ধুম’ সিরিজে অনুপ্রাণিত। যেখানে চুরির পর নায়ক নিজের নামের আদ্যক্ষর লেখা চিহ্ন ছেড়ে আসত।

চমক রয়েছে পরতে পরতে। কারণ, সুকুমার দলপতি, রবীন্দ্রনাথ ওঝা, কালীপদ ওঝা, বাপি দাস ও তপন গাঁতাইত নামে ওই পাঁচজন চাষি চিরকুট অনুয়ায়ী কাঠ চেরাই মিলের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে অন্য এক ব্যক্তির সন্ধান পান। সূত্র ধরে এগোতে এগোতে মেলে ফোন নম্বর। পর্দার আড়ালে থেকে এক ব্যক্তি ওই ফোন নম্বরে কথা বলতে থাকেন। তিনি জানান, অনলাইনে টাকা হস্তান্তর করলে বলে দেওয়া হবে কোথায় রাখা রয়েছে চুরি করা যন্ত্রাংশ। এতদূর এগিয়ে ইতি টানেন ওই পাঁচ চাষি। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা পুলিশের লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।

সব দেখে-শুনে পুলিশ তাজ্জব। এক পুলিশ আধিকারিক তো বলেই ফেললেন, ‘‘মনে হচ্ছে কোনও ক্রাইম ওয়েব সিরিজ দেখছি মশাই। সন্ত্রাসবাদীরা তো এ কায়দায় কাজ করে। ডেবরার এসডিপিও দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা এমন অভিযোগে কড়া পদক্ষেপ করছি।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের নরঘাট এলাকার কয়েকজন চোর দীর্ঘ বছর ধরেই এমন কারবারে যুক্ত। বিভিন্ন এলাকায় থাকা স্থানীয় মানুষের সঙ্গে মিলে তাঁরা এই কারবার চালাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় ভুয়ো নম্বর। চুরির পরে ওই নম্বরেই যোগাযোগ করতে বলা হয়। তবে চোরদের সঙ্গে থাকেনা সামগ্রী। নির্দিষ্ট এলাকায় সামগ্রী লুকিয়ে রেখে তাঁরা টাকার দাবি করে। অনলাইন মাধ্যমে টাকা দিলে তবে গোপন জায়গা বলে দেয় চোরেরা। সেখানে গেলেই মেলে চুরি যাওয়া সামগ্রী। অধিকাংশ ঘটনা পুলিশের কাছে না জানিয়ে মীমাংসা করে নেয় বহু মানুষ। তবে এ বার অভিযোগ মেলায় কড়া পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।

সিনেমার পর্দায় হৃতিকের ছিল চোখের পলকে উধাও হওয়া মোটরবাইক। এখানে রঘু ডাকাতের উত্তরসূরিরা চুরির জন্য বেছে নিয়েছে পাওয়ার টিলারকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Theft
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE