Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

সভা ভরাতে ভাড়া হাজার খানেক বাস

সরকারি উদ্যোগে মুখ্যমন্ত্রীর সভা। মঙ্গলবার মেদিনীপুরের সভা থেকে জঙ্গলমহল কাপের খেলোয়াড়দের পুরস্কার বিতরণ করা হবে। শুধু সফল প্রতিযোগীরাই নন, অনুষ্ঠানস্থলে থাকবেন জঙ্গলমহল কাপে যোগদানকারী সকলেই। সবমিলিয়ে ৪২ হাজার খেলোয়াড় মেদিনীপুরে আসবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৬ ০১:০৮
Share: Save:

সরকারি উদ্যোগে মুখ্যমন্ত্রীর সভা। মঙ্গলবার মেদিনীপুরের সভা থেকে জঙ্গলমহল কাপের খেলোয়াড়দের পুরস্কার বিতরণ করা হবে। শুধু সফল প্রতিযোগীরাই নন, অনুষ্ঠানস্থলে থাকবেন জঙ্গলমহল কাপে যোগদানকারী সকলেই। সবমিলিয়ে ৪২ হাজার খেলোয়াড় মেদিনীপুরে আসবেন। মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানস্থল কানায় কানায় ভরাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না পুলিশ- কর্তারা। ভাড়া করা হয়েছে ১১০০ বাস। পশ্চিম মেদিনীপুরের পাশাপাশি ঝাড়গ্রাম, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া থেকেও আসবে বাস। সব মিলিয়ে খরচের বহরও অনেক। যা রাজকোষে চাপ আরও বাড়াবে বলেই অভিযোগ বিরোধীদের।

প্রথমে বাস ভাড়ার কথাই ধরা যাক। জানা গিয়েছে, দেড় দিনের জন্য বাসগুলো ভাড়ায় নেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার সারাদিন। দিনপিছু ১,৬৬০ টাকা করে দেড় দিনের জন্য ভাড়া বাবদ মালিকদের বাসপিছু দেওয়া হচ্ছে ২,৪৯০ টাকা। বাসপিছু একজন চালক ও একজন সহযোগীর পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে। দিনপিছু ১৫০ টাকা করে অর্থাৎ দেড় দিনের জন্য একজনকে পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে ২২৫ টাকা। অর্থাৎ বাসপিছু পারিশ্রমিক বাবদ দেওয়া হচ্ছে ৪৫০ টাকা। এ ছাড়া তেলের খরচ তো রয়েইছে। মেদিনীপুরের এক বাস মালিকের কথায়, “ধরে নেওয়া যেতে পারে বাসপিছু খরচ হবে গড়ে ১০- ১২ হাজার টাকা।” সেই হিসেবেই ১,১০০ বাসের জন্য খরচ হওয়ার কথা ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা! সভা শেষ হলে খেলোয়াড়দের নিয়ে বেলপাহাড়িতে পৌঁছে দেবে ওসেখান থেকে মেদিনীপুরে ফিরে আসবে।”

পড়ুন : কাজে গতি চায় দুই শহর

জানা গিয়েছে, ৪২ হাজার খেলোয়াড়কেই খেলার পোশাক দেওয়া হচ্ছে। থাকছে তাঁদের টিফিন এবং দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও। থানাগুলোকেই টিফিন এবং খাবার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। টিফিন প্যাকেটে থাকার কথা পাউরুটি, কলা, আপেল, বিস্কুট, মিষ্টি এবং জলের বোতল। খাবারের প্যাকেটে থাকার কথা স্যালাড, ভাত, ডাল, তরকারি, ডিম ও চাটনি। তার খরচও কম নয়।

এই বিপুল খরচ নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক সরকার বলেন, “মেলা আর উৎসব করেই তো লক্ষ লক্ষ টাকা ধ্বংস করা হচ্ছে। উনিও গান- বাজনা নিয়ে মেতে আছেন!” বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “উৎসব আর মেলা করে সরকারি অর্থের অপচয়ই করা হচ্ছে। যে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে উৎসব, অনুষ্ঠান আর মেলা করা হচ্ছে, সেটা কার টাকা? মানুষের টাকা।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “এই উৎসব- প্রতিযোগিতা জঙ্গলমহলের সামাজিক উন্নয়নেরই অঙ্গ। ওদের (বিরোধীদের) কুৎসা- অপপ্রচারের জবাব মানুষই দেবেন।”

পুরস্কারের তালিকাতেও থাকছে অভিনবত্ব। থাকছে মোটর সাইকেল, স্কুটি, সাইকেল, প্যাডেস্টাল ফ্যান, ট্রফি প্রভৃতি। মোটর সাইকেল ৫টি, স্কুটি ৫টি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “বিতর্কের কী আছে! জঙ্গলমহল কাপে এত ছেলেমেয়ে যোগ দিয়েছেন। শুধু পশ্চিম মেদিনীপুরেই ৩০০-রও বেশি ফুটবল দল খেলেছে।” জেলা তৃণমূলের এক নেতা যোগ করছেন, “বিরোধীরা যতই কুৎসা- অপপ্রচার করুক। কিচ্ছু যায় আসে না! এখন কোনও শক্তিই তৃণমূলকে ধ্বংস করতে পারবে না! জঙ্গলমহল হাসছে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আবার
ক্ষমতায় ফিরছেন!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mamata medinipore rally bandopadhaya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE