Advertisement
০২ মে ২০২৪

এক জন্মেই তিন জেলা

ফের ভাঙছে মেদিনীপুর। পূর্ব-পশ্চিমের পরে এ বার আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় নতুন জেলা ঝাড়গ্রাম। শিক্ষা-স্বাস্থ্য-আইন-আদালত, জেলা ভাঙলে পরিষেবা সহজে মেলার কথা। প্রশাসনিক কাজকর্মেও হবে সুবিধা। মেদিনীপুরের বিশিষ্টজনেরা কী চোখে দেখছেন এই জেলা ভাগকে, নতুন জেলার কাছে তাঁদের চাহিদাই বা কী— তাঁদের কথা তাঁদেরই কলমে।

সৌতিক হাতি
শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০০
Share: Save:

ঝাড়গ্রাম নতুন জেলা হচ্ছে- এটা সাঁকরাইল ব্লকের মানুষজনের কাছে অবশ্যই ভাল খবর। এর ফলে অনেক সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। নতুন জেলা হলে মানুষ অনেক সমস্যা থেকেও মুক্তি পাবে।

অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার রগড়া গ্রামে ১৯৮৯ সালে আমার জন্ম। শৈশব থেকে গ্রামের অনেক উন্নয়ন দেখে বড় হয়েছি। যদিও আমাদের গ্রাম ছিল বিদুৎহীন। ছিল অন্য অনেক সমস্যাও। জেলা সদর-মেদিনীপুর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরের প্রত্যন্ত গ্রাম বলেই হয়তো এলাকাটি উপেক্ষিত ছিল। ২০০২ সালে মেদিনীপুর ভাগ হলে আমি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দা হলাম। ২০০৪ সাল নাগাদ আমাদের গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ এল।

রগড়া আরএনএম অ্যাকাডেমি হাইস্কুলে পড়াকালীন মাধ্যমিক পর্যন্ত হ্যারিকেনের আলোয় পড়াশোনা করেছি। আপৎকালীন চিকিৎসার জন্য এলাকাবাসীকেও নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বাবা-মার মুখে শুনেছি, ২ বছর বয়সে আমার একবার প্রবল জ্বর হয়েছিল। লোধাশুলি যাওয়ার পথে নৌকোয় ডুলুং নদী পেরিয়ে বাসে করে বাবা-মা-কাকু আমাকে ঝাড়গ্রাম মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। তখন ঝাড়গ্রাম জেলা হলে হয়তো সেতু, হাসপাতালের জন্য এত ভুগতে হত না। বেঁচে যেত অনেক সর্পদষ্ট, দুর্ঘটনায় আহত বা মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ।

পরিজনেদের মুখে আরও শুনেছি, সত্তরের দশকের শেষের দিকে জাতিগত শংসাপত্র, জমি সংক্রান্ত কোনও কাজ এমনকী সামান্য ডাক্তার দেখাতেও মেদিনীপুরে যেতে হত। বর্তমান সরকারের আমলে ঝাড়গ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। আগের চেয়ে ভাল চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। আশা করা যায় জেলা ভাগের পরে সমস্যা আরও কমবে। কাজ ও চাকরির সুযোগও বাড়বে৷ সাঁকরাইল ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে বিদুৎ এলেও অর্ধেক সময়ই লোডশেডিং, লাগাতার লো ভোল্টেজের অসুবিধা নিত্যদিনের। আশা করি এসবেরও সমাধান হবে।

নতুন জেলার জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইল। এক জীবনে তিনটে জেলার বাসিন্দা হওয়ার অনুভূতিও বেশ অন্যরকম।

লেখক বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ। পেশা গৃহশিক্ষতা। কবিতাও লেখেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sautik Hati Midnapore new districts
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE