E-Paper

পরপর খুন, তৃণমূল দুষছে নব্য বিজেপিকে

রাজনৈতিক ভাবে স্পর্শকাতর নন্দীগ্রামে পরপর খুনে সাধারণ মানুষের মধ্যে শঙ্কা এবং ভয় বাড়ছে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, কেন বারবার এখানে খুন হচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা?

সৌমেন মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:২২
নন্দীগ্রামের বৃন্দাবনচকে পুলিশি টহল।

নন্দীগ্রামের বৃন্দাবনচকে পুলিশি টহল। নিজস্ব চিত্র ।

এক মাসের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার! ফের রাজনৈতিক খুন নন্দীগ্রামে। ৮ ডিসেম্বরের ১৭ দিনের মাথায় গত বুধবার অর্থাৎ বড়দিনের রাতে নন্দীগ্রাম খুন হলেন এক তৃণমূল কর্মী।

নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বৃন্দাবনচকে তৃণমূল কর্মী মহাদেব বিষয়ীকে (৪৬) খুন করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও বিজেপি তা অস্বীকার করেছে। এর আগে ৮ ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম ১ ব্লকেই কালীচরণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ নম্বর জলপাই গ্রামে তৃণমূল কর্মীর ভাই বিষ্ণুপদ মণ্ডলকে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে।

রাজনৈতিক ভাবে স্পর্শকাতর নন্দীগ্রামে পরপর খুনে সাধারণ মানুষের মধ্যে শঙ্কা এবং ভয় বাড়ছে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, কেন বারবার এখানে খুন হচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা?

রাজনৈতিক মহলের অনেকেরই মত, নন্দীগ্রামে বিজেপির উত্থানের পরে সিপিএমের হার্মাদরা অনেকেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এঁরাই মূলত ‘নব্য বিজেপি’ হিসাবে পরিচিত। অতীতে তৃণমূলের হাতে নানা ভাবে অত্যাচারিত হওয়ার রাগ তাঁরা মনে পুষে রেখেছিলেন। মূলত সেই আক্রোশ মেটাতেই তাঁরা বেছে বেছে তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা করছেন। এঁদের উপর বিজেপির ‘আদি গোষ্ঠী’র তেমন নিয়ন্ত্রণও নেই। ফলে তাঁরা আটকাতে পারছেন না।

সম্প্রতি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে বিজেপির শোচনীয় হার এবং তৃণমূলের জয়ী হওয়ায় পর পর তৃণমূল কর্মীদের খুনের জন্য দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে নরসিংহ পুর আসদতলা কৃষি সমবায় উন্নয়নের নির্বাচন। তার আগে বিজেপির একাংশ এ ভাবে সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করতে চাইছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

নন্দীগ্রাম ভূমি উচ্ছেদ কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের কথায়,"শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামের আন্দোলনের কায়দায় হত্যার পরিকল্পনা করছেন এবং হত্যা করছেন। বারবার বিজেপি শাসিত গ্রাম পঞ্চায়েতে খুন হচ্ছেন তৃণমূলের কর্মীরা। মানুষ জোটবদ্ধ হচ্ছেন জবাব দেওয়ার জন্য।"

সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পরিতোষ পট্টনায়েকের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল এই খুনকে মূলধন করে ভোট আদায়ে রাস্তায় বেরোবে। আসলে পুরোটাই বিজেপি-তৃণমূলের ‘গটআপ’। সেটা নন্দীগ্রামের মানুষ বুঝতে পেরেছে।’’

পাল্টা বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন,"সিপিএমের সিংহভাগ নেতা এখন তৃণমূলের নেতা হয়েছেন। অধিকাংশ হার্মাদ এখন তৃণমূলে। যে ঘটনা ঘটেছে সেটা দুঃখজনক। কোনও মৃত্যুই কাঙ্ক্ষিত নয়। প্রশাসনের কাছে দাবি রাখবো নিরপেক্ষ তদন্ত করে যাতে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হয়। রাজনীতির রঙ না দেখে প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দেওয়ার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। আমরা সবরকম সহযোগিতা করব।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy