Advertisement
E-Paper

ঘাটালে বন্যার দুই কারণ জানালেন দেব, সাংসদের আশঙ্কা, ‘সবে তো জুলাই মাস, এখনও সেপ্টেম্বর বাকি’!

ফি বছর বন্যায় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রসঙ্গ এসেই পড়ে। এ বারও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের উদ্দেশে দেবের বার্তা,‘‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আমরা ২০২৪ সালে কথা দিয়েছিলাম। সেই মতো ৫০০ কোটি টাকার অনুমোদন মিলেছে। অনেকগুলো স্লুইস গেট সারানোর কাজ চলছে। অনেকগুলোর কাজ হয়ে গিয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫ ১৭:৪৯
DEV

ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতির পরিদর্শনে দেব। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ঘাটাল-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অংশে বন্যা পরিস্থিতির মাঝে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন তৃণমূল সাংসদ দেব। বুধবার বৈঠক শেষে তারকা সাংসদের দাবি, ঘাটালে বন্যা হয়েছে মূলত দুটো মূল কারণে। তাঁর দাবি, গত বছরের চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে এ বছর। দ্বিতীয়ত, ডিভিসি থেকে প্রচুর জল ছাড়া হয়েছে। তাঁর দাবি, প্রশাসন যে ভাবে কর্মদক্ষতা দেখিয়েছে,তাতে এ পর্যন্ত বড় কোনও অভিযোগ আসেনি। অন্য দিকে, বিজেপির অভিযোগ, আবার এক বছর বন্যা পরিস্থিতি রুখতে জেলা তথা রাজ্য প্রশাসন ব্যর্থ। কেন এত দিন পর এলাকা পরিদর্শনে গেলেন দেব, এই অভিযোগ করে সাংসদের বিরুদ্ধে এলাকায় পোস্টার ছড়ানো হয় বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাটের নেতৃত্বে।

দেব বলেন, ‘‘বৃষ্টির কারণে অনেক রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছে বা রাস্তা ভেঙে গিয়েছে বলে কিছু অভিযোগ এসেছে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হল, যে রাস্তাগুলো খারাপ সেগুলোর তাড়াতাড়ি মেরামতি। কিন্তু বৃষ্টি এখনও থামছে না। কুইক রেসপন্স টিম ভাল কাজ করেছে। গত কয়েক দিনে ১২১ জন সাপে কাটা রোগী এসেছিলেন হাসপাতালে। একটিও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। আমাদের কুইক রেসপন্স টিম ঠিক সময়ে পৌঁছে গিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অনেক প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গবাদি পশুদের রাখার জন্য সেফ (নিরাপদ) জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কমিউনিটি কিচেন করা হয়েছে।’’

প্রশাসন এবং সাংসদ দেব একত্রে দাবি করেছেন, এলাকাবাসীর কষ্ট সর্বনিম্ন করতে সচেষ্ট তাঁরা। কিন্তু প্রচণ্ড বৃষ্টির ফলে অসুবিধা বাড়ছে। দেবের কথায়, ‘‘যে ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা আমদের কারও নেই। এই সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কষ্ট ভাগ করে নেওয়া এবং প্রশাসনের তরফে যাতে কোনও খামতি না-থাকে আমরা সেই চেষ্টা করছি।’’

ফি বছর বন্যায় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রসঙ্গ এসেই পড়ে। এ বারও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের উদ্দেশে দেবের বার্তা,‘‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আমরা ২০২৪ সালে কথা দিয়েছিলাম। সেই মতো ৫০০ কোটি টাকার অনুমোদন মিলেছে। অনেকগুলো স্লুইস গেট সারানোর কাজ চলছে। অনেকগুলোর কাজ হয়ে গিয়েছে। এই মাসের মধ্যেই সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।’’ তিনি জানান, প্রকল্প রূপায়ণে বড় কাজ জমি অধিগ্রহণ। কিন্তু তাও মিছিল হচ্ছে। তিনি ঘাটালবাসীর উদ্দেশে জানান, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে নতুন করে প্রকল্পের নকশা হয়েছে। যাতে কম জমি লাগে এবং কম বাড়ি-ঘর, দোকানপত্র সরাতে হয়, সেটা দেখা হচ্ছে। এখন ৪০ শতাংশ কম জমি লাগবে। মানুষের কষ্ট কম হবে। তৃণমূল সাংসদ এ-ও বলেন, ‘‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কোনও সরকারের জন্য নয়, ঘাটালের মানুষের জন্য। মানুষ যেন শান্তিতে থাকতে পারে। আমরা কারও জমি জোর করে নিতে চাই না। সেই ভাবেই মানুষকে বোঝানো হচ্ছে। আমার মনে হয়, এক-দু’মাসের মধ্যে নতুন নকশা তৈরি হয়ে যাবে।’’

গত ১৯ জুন থেকে আবার ঘাটালের মানুষ জল-যন্ত্রণার মধ্যে। দেড় মাস পরেও জলবন্দি অনেক এলাকা। বন্যা প্রসঙ্গে দেবের বক্তব্য, ‘‘ঘাটালে যত বড় বন্যা হয়েছে, সব সেপ্টেম্বর মাসে। এখন জুলাই। আমরা জানি না, এটাই শেষ না এখান থেকে শুরু! তবে এর চেয়ে বেশি বৃষ্টি হলে আমরা কী ভাবে এগোব সেই প্রস্তুতি রয়েছে। ম্যাডাম (মুখ্যমন্ত্রী) তো বলেছেন তিন বছরের মধ্যে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শেষ হবে।’’ আর বিজেপি বিধায়কের প্রতিবাদ-পোস্টার প্রসঙ্গে সাংসদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আক্রমণ না করলে রাজনীতিতে টিকে থাকা যায় না, সবাই তো দেব হয় না। যিনি পোস্টার দিয়েছেন, তিনিও তো জনপ্রতিনিধি। তিনি কাকে কী সাহায্য করেছেন? কাউকে এই বন্যার মধ্যে এক মুঠো মুড়ি দিয়েছেন? মানুষের সেবা যিনি করেন, তাঁকে আক্রমণে যেতে হয় না। আর পোস্টার দেখে দেখে অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। কখনও সিনেমার পোস্টার তো কখনও ঘাটালে শীতলবাবুর পোস্টার। এটা আমি মজার ছলেও নিতে চাই না।’’

Ghatal Master Plan flood ghatal Dev TMC MP BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy