পুরপারিষদের ঘরের দরজায় ঝুলছে তালা। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল পরিচালিত পুরসভায় প্রকাশ্যেই কোন্দল দলের অন্দরে। একদিকে শাসক দলের নেতা ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে তির্যক মন্তব্য করার অভিযোগে পুর-পারিষদের ঘরে তালা লাগালেন দলীয় কাউন্সিলরদের একাংশ। অন্যদিকে, পুর-পারিষোদের বসার ঘরে তালা খোলা হবে কিনা তা নিয়ে ডাকা দলীয় কাউন্সিলরদের জরুরি বৈঠকে গরহাজির থাকলেন ভাইস চেয়ারম্যান সহ অনেকে। পুরবোর্ড গঠনের পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল পরিচালিত কাঁথি পুরসভা।
গত জুন মাসে কাঁথি পুরসভায় বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সুবল মান্না এবং ভাইস চেয়ারম্যান হন মন্ত্রী অখিল গিরির ছেলে সুপ্রকাশ গিরি। একই সঙ্গে তিন পুর-পারিষদের নামও ঘোষণা করে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। পরে তিন পুর-পারিষদকে একটি করে ঘর দেওয়া হয়েছিল পুরসভায়। গত সপ্তাহে পুর-পরিষদ রিনা দাসের ঘরে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাঁর দাবি, ‘‘কে বা কারা ঘরে তালা দিয়েছে জানি না। পুরপ্রধান সহ আধিকারিকদের কাছে গিয়েছি। কিন্তু কেউই কিছু বলতে পারেননি। তবে দলেরই কেউ কেউ এই কাজ করেছে। আমি মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’
প্রসঙ্গত, রিনা বছরখানেক আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এবার তাঁকে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তিনি বিজেপির বিধায়ক সুমিতা সিংহকে হারিয়ে দেন। পুরপ্রধান হওয়ার দৌড়েও ছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত শিকে ছেড়েনি। তবে চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানের সাথে পুর পারিষদ হিসেবে রিনার নাম ঘোষণা করেছিল রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও পরে কখনও মন্ত্রী অখিল গিরি কিংবা যুব-নেতা সুপ্রকাশ গিরি, কখনও জেলা সভাধিপতি উত্তম বারিকের নাম ধরে প্রকাশ্যে দুর্নীতি এবং স্বজন-পোষণ নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে রিনাকে। কিছুদিন ধরেই রিনার একাধিক বক্তব্যে দলের অন্দরে অস্বস্তি বাড়ছিল। তাই তাঁকে কিছুটা চাপে রাখতেই তাঁর ঘরে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূলের একাংশ সূত্রে খবর।
এদিকে পুর-পারিষদদের ঘর দেওয়া নিয়ে আপত্তি তোলেন তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশ। বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে জরুরি বৈঠক ডাকেন পুরপ্রধান। সেখানেও পুর পারিষদদের জন্য বরাদ্দ ঘর প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার করার দাবি জানান কয়েক জন কাউন্সিলর। যদিও বৈঠকে ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্রকাশ গিরি সহ আরও ৬ জন দলীয় কাউন্সিলর গরহাজির ছিলেন। ভাইস চেয়ারম্যানের অবশ্য দাবি, তিনি নন্দীগ্রামে দলীয় কর্মসূচিতে ছিলেন। কিন্তু বাকিরা কেন হাজির হননি তা নিয়ে দলের অন্দরে গোষ্ঠীকোন্দল ইস্যুতে জল্পনা বেড়েছে। এ ব্যাপারে পুরপ্রধান সুবল মান্না বলেন, ‘‘দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে ঠিকই। তবে এ ব্যাপারে যা বলার সমস্ত কিছুই সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বলবেন।’’ বিতর্কিত ওই পুরপারিষদকে তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তরুণ মাইতি ডেকে পাঠিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। যদিও তরুণের দাবি, ‘‘দলের সমস্ত কাউন্সিলর ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন। কী সমস্যা হয়েছে তা সবার কাছ থেকে জেনে সমাধানের চেষ্টা চলছে।’’
গোটা ঘটনাকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘‘ভাগের বখরা নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা। তাই মহিলা পুরপারিষদ যাতে প্রকাশ্যে কোনও কথা না বলে বসেন তার জন্য আগেভাগে লাগাম পরিয়ে দেওয়া হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy