Advertisement
E-Paper

দিঘা হাসপাতালে শিকেয় পরিষেবা, ভুগছেন পর্যটকেরাও

শুধু পর্যটকেরাই নন, স্থানীয় লোকজনেরও অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালে এই সমস্যা চলছে। শুধু অস্থি বিশেষজ্ঞ নয়। নানা সমস্যা নিয়ে এই হাসপাতালে নেই-এর তালিকাও খুব ছোট নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৪১
এই হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র

এই হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র

নদিয়া থেকে সপরিবারে দিঘায় ছুটি কাটাতে এসেছিলেন তপন মিশ্র। কিন্তু সমুদ্র-স্নানে গিয়ে বাধলো বিপত্তি। সাঁতার জানেন না বলে, সৈকতে দাঁড়িয়ে স্নানের মজা নিচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ বড় ঢেউয়ের ধাক্কায় বোল্ডারের উপর আছড়ে পড়লেন বছর পয়তাল্লিশের তপনবাবু। গুরুতর জখন হল ডান পায়ের হাঁটু। শুধু তপনবাবু নন, দিঘার সমুদ্রে স্নান করতে নেমে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে জানালেন সৈকতে নজরদারিতে থাকা পুলিশ। সে ক্ষেত্রে তাঁরাই আহতদের কাছেই দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য।

কিন্তু পর্যটকদের অভিযোগ, বোল্ডারে লেগে কনুই-হাঁটুতে গুরুতর চোট পেলেও শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা করেই ছেড়ে দেওয়া হয় বা অন্য হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। কারণ দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, হাসপাতালে কোনও অস্থি বিশেষজ্ঞ নেই।

শুধু পর্যটকেরাই নন, স্থানীয় লোকজনেরও অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালে এই সমস্যা চলছে। শুধু অস্থি বিশেষজ্ঞ নয়। নানা সমস্যা নিয়ে এই হাসপাতালে নেই-এর তালিকাও খুব ছোট নয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন আশিজন রোগী ভর্তি থাকেন। দাঁত, চোখ, প্রসূতি ও শিশু বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। কিন্তু অন্য বিভাগের রোগী এলে তাদের সাধারণত প্রাথমিক চিকিৎসাই মেলে। প্রসূতি বিশেষজ্ঞ থাকলেও এক সপ্তাহ ধরে সমস্ত অস্ত্রপ্রচার বন্ধ। কারণ হাসপাতালে অ্যানাস্থেটিস্ট নেই। অথচ হাসপাতালে অত্যাধুনিক ওটি রয়েছে। কোনও জেনারেল সার্জেন নেই। ফলে কার্যত নিদিরাম সর্দারের অবস্থা ওটি-র।

অ্যানাস্থেটিস্ট নিয়ে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে নন্দীগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক স্থানীয় কর্মীকে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে এই হাসপাকালে পাঠানো হয়। কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে ফের স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে তিনি আগের জায়গায় ফিরে গিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, হাসপাতালে অস্থি বিশেষজ্ঞ এবং জেনারেল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন। কারণ, শুধু স্থানীয় রোগী বা পর্যটক নয়, পাশের রাজ্য ওডিশা থেকেও বহু রোগী হাসপাতালে আসেন।

হাসপাতাল সুপার বিষ্ণুপদ বাগ বলেন, ‘‘দিঘা হাসপাতালের সমস্যাগুলির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান হয়েছে। “

রামনগর থানার কানপুরের বাসিন্দা স্বপন বারিক নিউ দিঘার এক হোটেল কর্মী। বাইক থেকে ছিটকে পড়ে তার বাঁ পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে। দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয় বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁর আরও অভিযোগ, ভর্তি তো দূর, এক্স-রেও করা হয়নি। পরে বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হয়। পরে কাঁথির একটি নার্সিংহোমে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়।

যদিও এমন অভিযোগ মানতে চাননি সুপার বিষ্ণুপদ বাগ। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালে মাত্র একজন এক্স-রে টেকনিশিয়ান আছেন। তাই তাঁকে চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করানো যায় না। ঘটনার সময় তিনি ছিলেন না। তখন তাঁর অফ ছিল। রোগীর লোকেরা তখন বাইরে চলে গিয়েছিলেন। একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’’

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তুষার আচার্য় বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যভবনে দিঘা হাসপাতালের সমস্যা জানানো হয়েছে। আশা করা যায় কিছু দিনের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।’’

Tourist poor condition poor infrastructure Digha State General Hospital Digha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy