বড়বাজারে যানজটের এই ছবি নিত্যদিনের। নিজস্ব চিত্র
যানজটের গেরোয় মার খাচ্ছে ব্যবসা। পুজোর আগে কেনাকাটা করতে এসে বিপাকে পড়ছেন ক্রেতারাও। যানজটে রাশ টেনে ব্যবসা সচল রাখতে এ বার উদ্যোগী হলেন মেদিনীপুরের বড়বাজারের ব্যবসায়ীরাই। ‘কনফেডারেশন অব পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’-র মেদিনীপুর ইউনিটের উদ্যোগে যানজট নিয়ন্ত্রণে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। খোলা হয়েছে অনুসন্ধান কেন্দ্র। বাজারের বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছে পানীয় জলের ব্যবস্থাও।
কেন এই উদ্যোগ? ইউনিটের সম্পাদক চন্দন রায় বলেন, “ক্রেতা-বিক্রেতা সকলের সুবিধার্থেই আমরা কিছু পদক্ষেপ করেছি। পুজোর সময় বড়বাজারে যানজট হলে খুব সমস্যা হয়। যানজটের সমস্যা এড়াতেও সব রকম পদক্ষেপ করা হয়েছে।”
পুজোর কেনাকাটার অন্যতম গন্তব্য মেদিনীপুরের বড়বাজার। শুধু শহর নয়, জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষও এখানে আসেন কেনাকাটা করতে। বড়বাজারে যানজট রোজকার সমস্যা। যানজট আর ভিড়ে সমস্যায় পড়ছেন ক্রেতারাও। দিন দু’য়েক আগেই সন্ধ্যায় বছর সাতেকের মেয়েকে নিয়ে পুজোর কেনাকাটা করতে মেদিনীপুরের বাজারে এসেছিলেন এক মহিলা।
বড়বাজারে নামী এক শাড়ির দোকানে ঢুকেছিলেন তিনি। হঠাৎ দেখেন পাশে মেয়ে নেই। দোকানের এ দিক-সে দিক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়ের দেখা মেলেনি।
খবর পৌঁছয় ব্যবসায়ী সংগঠনের ওই অনুসন্ধান কেন্দ্রে। মেয়েটির নাম-উচ্চচা-পরনের পোশাকের রং জেনে ওই মাইকে ঘোষণা করা হয়। মেয়েটিকে খুঁজতে তৎপর হন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকেরা। অনুসন্ধান কেন্দ্রের এই ঘোষণাতেই মুশকিল আসান হয়। মিনিট কয়েক পরে খানিক দূরে অন্য এক দোকানের সামনে খোঁজ মেলে ওই মেয়ের। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন ওই মহিলা। চন্দনবাবু বলছিলেন, “বাবা-মায়ের উচিত বাচ্চার উপর সব সময় নজর রাখা। ভিড়ের মধ্যে বাচ্চা হাতছাড়া হয়ে গেলেই সমস্যা। আমরা মাইকেও এ নিয়ে ঘোষণা করছি। সব সময় সকলকে সতর্ক থাকতে বলছি।”
শহর মেদিনীপুরে যানজটের অন্যতম কারণ অটো-টোটো দাপট। বড়বাজারেও অটো-টোটো ঢোকার ফলে যানজট হয়। সমস্যা এড়াতে পুজো পর্যন্ত বড়বাজারে ঢোকার বিভিন্ন জায়গায় নো-এন্ট্রি বোর্ড লাগিয়েছে পুলিশ। বাজারের মধ্যে গাড়ি পার্কিংও বন্ধ করা হয়েছে। পুলিশের এই পদক্ষেপে খুশি ব্যবসায়ীরাও। বড়বাজারের ব্যবসায়ী অশোক তাপড়িয়া বলছিলেন, “যানজট এড়াতে এলাকায় নো-এন্ট্রি করাটা জরুরিই ছিল।”
পুজোর আগে এই সময় বড়বাজার জমজমাটই থাকে। শহরের এই বাজারে হাল ফ্যাশনের পোশাকের শতাধিক দোকান রয়েছে। চন্দনবাবু বলছিলেন, “বড়বাজারে এখন সকাল থেকেই ভিড় থাকছে। বেলা বাড়লে ভিড়ও বাড়ছে। পুজোর আগে ভিড় আরও বাড়বে। তাই বড়বাজারকে সচল রাখতে যে যে পদক্ষেপ করার আমরা সেটাই করেছি। গাড়ি পার্কিং থেকে শুরু করে সর্বত্র নজরদারি চলছে। পুলিশও নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy