Advertisement
০৫ মে ২০২৪

আদিবাসী ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ

কলেজ হস্টেলে প্রথম বর্ষের এক আদিবাসী ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল তাঁরই রুমমেট, দ্বিতীয় বর্ষের দুই ছাত্রীর বিরুদ্ধে। রবিবার মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন মেদিনীপুর শহরের নরেন্দ্রলাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের (গোপ কলেজ) ওই ছাত্রীটির বাবা। পুলিশ ছাত্রীর পাশাপাশি কলেজের অধ্যক্ষা ও কয়েক জন শিক্ষিকার সঙ্গেও কথা বলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৪ ০২:৩৯
Share: Save:

কলেজ হস্টেলে প্রথম বর্ষের এক আদিবাসী ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল তাঁরই রুমমেট, দ্বিতীয় বর্ষের দুই ছাত্রীর বিরুদ্ধে। রবিবার মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন মেদিনীপুর শহরের নরেন্দ্রলাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের (গোপ কলেজ) ওই ছাত্রীটির বাবা। পুলিশ ছাত্রীর পাশাপাশি কলেজের অধ্যক্ষা ও কয়েক জন শিক্ষিকার সঙ্গেও কথা বলেছে।

বাঁকুড়ার রাইপুর থানা এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রী রবিবার বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। মেয়েটির বাবা, পেশায় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “হস্টেলে আসার পর থেকেই মেয়ের উপর নির্যাতন শুরু হয়। এই ভাবে মেয়ে হস্টেলে থাকবে কী করে?” অভিযোগপত্রে তাঁর দাবি, হস্টেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রিনা পালকে সব জানানো হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রিনাদেবী অবশ্য র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ মানতে চাননি। অধ্যক্ষা কৃষ্ণা মাইতি বলেন, “আমার কাছে ওই ছাত্রী বা তার পরিবারের কেউ আগে অভিযোগ করেনি। করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতাম।”

বরাবরের মেধাবী ওই আদিবাসী ছাত্রী গোপ কলেজে শারীরবিদ্যার অনার্সে ভর্তি হয়েছিলেন। ৯ জুলাই থেকে তিনি কলেজ চত্বরেই ছাত্রীদের হস্টেলে থাকা শুরু করেন। তাঁর অভিযোগ, গোড়া থেকেই তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করতে থাকেন ওই দুই রুমমেট। চুল ধরে টানা, চড়-থাপ্পড় মারা-সহ নানা ভাবে তাঁকে নির্যাতন করা হত। ছাত্রীটি পুলিশকে জানিয়েছেন, তৃতীয় বর্ষের কয়েক জন আবাসিক ছাত্রী র্যাগিংয়ের প্রতিবাদ করেছিলেন। শুক্রবার সকালে তাঁরা অভিযুক্তদের ডেকে সতর্কও করেন। তার পর ফের তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ।

এর পর ওই ছাত্রী বাড়িতে ফোন করে তাঁকে হস্টেল থেকে নিয়ে যেতে বলেন। আর ঝুঁকি নিতে চায়নি পরিবার। রবিবার মেদিনীপুরে এসে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ছাত্রীটির বাবা। তিনি বলেন, “আমি চাই, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক। না হলে কলেজ হস্টেলে এমন ঘটনা চলতেই থাকবে।”

ঘটনাটি নিয়ে সরব হয়েছে আদিবাসী সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি মাড়োয়া জুয়ান গাঁওতা’। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর মুর্মু বলেন, “কলেজ ক্যাম্পাসে এমন ঘটনা নিন্দনীয়। ছাত্রীটি বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মেদিনীপুরে এসেছে। সেই স্বপ্ন এ ভাবে ভেঙে গেলে আদিবাসী পড়ুয়াদের কাছে ভুল বার্তা যাবে।”

গোপ কলেজের ছাত্র সংসদ রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর দখলে। হস্টেলেও তাদের আধিপত্য। যে দুই ছাত্রীর বিরুদ্ধে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা টিএমসিপি সমর্থক বলেই পরিচিত। যদিও এমন ঘটনার কথা তাঁর জানা নেই বলেই দাবি করেছেন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদিকা উপাসনা গুরুঙ্গ। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “এই ঘটনা আমরা সমর্থন করি না। কেউ র‌্যাগিং করে থাকলে শাস্তি পেতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tribal student ragging gope college
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE