উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হল কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া। এ বারও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত সব কলেজে অনলাইনে স্নাতকে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। বিষয়টি কলেজগুলোকে জানানো হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বৈঠক হয়। সেখানে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে কলেজগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, স্বচ্ছতার সঙ্গে ভর্তি প্রক্রিয়া চালাতে হবে। এ নিয়ে কোনও রকম অভিযোগ যাতে না ওঠে সেই দিকে নজর রাখতে হবে। ভর্তি সংক্রান্ত সূচিও কলেজগুলোকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সূচি অনুযায়ী শুক্রবার থেকে সব কলেজে স্নাতকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, “স্বচ্ছতার সঙ্গে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। এ বারও অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। এ জন্য যে পদক্ষেপ করার কলেজগুলো তা করেছে। আগের দু’বছরও অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চলেছে। আশা করি, এ বার তেমন সমস্যা হবে না।” সূচি অনুযায়ী, ২-১২ জুন পর্যন্ত ফর্ম দেওয়া ও জমা নেওয়া চলবে। ১৩-১৫ জুনের মধ্যে মেধা তালিকা তৈরির কাজ করতে হবে। প্রাথমিক মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে ১৬ জুন। চূড়ান্ত মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে ২০ জুন। কলেজে ভর্তি শুরু হবে ২১ জুন থেকে। প্রথম বর্ষের পঠনপাঠন শুরু হবে ১১ জুলাই। বস্তুত, দু’বছর আগেও কলেজে ভর্তি ছিল একটা ঝক্কির ব্যাপার। ফর্ম তোলার লাইনে দাঁড়ানো, ফর্ম তোলা এবং পরে তা পূরণ করে জমা দেওয়া। সমস্যা খুব কম হত না। এই ঝক্কি এড়াতেই অনলাইনের ভাবনা। পাশাপাশি, এরফলে ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতাও থাকে।
ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য, অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালুর দাবি দীর্ঘদিনের। কারণ, সকলেই চান মেধার ভিত্তিতে কলেজগুলোয় ভর্তি হোক। অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চললে স্বচ্ছতা থাকবে। ফি বছরই কলেজে ভর্তি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। গত বছরও উঠেছে। এ নিয়ে একাংশ ছাত্রছাত্রীর অভিজ্ঞতা খুব তিক্ত। একাংশ কলেজ মেধা তালিকার বাইরে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করে বলে অভিযোগ। অবশ্য এ ক্ষেত্রে শাসক দলের চাপ থাকে। শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যারা যুক্ত, মেধা তালিকায় নাম না- থাকলেও তাদের ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ফলে, মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা বঞ্চিত হন। এ বার উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ এক পড়ুয়ার কথায়, “অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চললে যে দুর্নীতি হয় না তা নয়। তবে এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির সুযোগ কম থাকে।” ২০১৪ সালেই কলেজগুলোয় অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করার পরিকল্পনা করেছিল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। অবশ্য ওই বছর সব কলেজে তা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। ২০১৫ সালে কার্যকর হয়।
গত বছরও কলেজে ভর্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ বার কি অভিযোগ এড়ানো যাবে? জেলার এক কলেজের অধ্যক্ষের বক্তব্য, “ভর্তির সময় ছাত্র সংসদ একটু তত্পর হয়ই। সংসদের অতি-তৎপরতা ঠেকানোর জন্য অনলাইন পদ্ধতি চালু করাই উপযুক্ত দাওয়াই! এই পদ্ধতি চালু হয়েছে।” তাঁর আশ্বাস, “ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর পর বেশ কিছু অভিযোগ উঠতে থাকে। আমাদের কাছে অনেক দাবিপত্র- অভিযোগপত্র জমা পড়তে থাকে। এটাই দস্তুর! আমরা ভর্তিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ঠেকিয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখার সব রকম চেষ্টা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy