পানের-অযোগ্য: নিজস্ব চিত্র
বাড়ি থেকে এক টুকরো কাপড় নিয়ে পাড়ার ট্যাপকলে জল আনতে এসেছিলেন বর্ণালি মান্না। জল আনতে কাপড় কেন? প্রশ্ন শুনে বর্ণালিদেবী বলেন, ‘‘দাঁড়ান দেখতে পাবেন।’’ বলেই ট্যাপকলের মুখে কাপড়টা বেঁধে দিলেন। বালতি ভরার পর কাপড়টা খুলতে দেখা গেল তাতে বাদামী গাঢ় ছোপ। জানালেন, রোজ এমন ঘোলা জলই তাঁদের খেতে হচ্ছে।
শুধু বর্ণালীদেবী নয়, সরকারি জলপ্রকল্প থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা এমন জলই পান করতে বাধ্য হচ্ছেন চণ্ডীপুরের বাজার সংলগ্ন এলাকার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, কয়েক কিলোমিটার দূরে বৃন্দাবনপুরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জল সরবরাহ প্রকল্প থেকে চণ্ডীপুর বাজারে জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে পাইপ লাইনের সংস্কার না হওয়ায় জলের মান খুবই খারাপ। এ নিয়ে প্রশাসনের তরফেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার সুদীপ সেন বলেন, ‘‘ঘোলা জলের বিষয়টি খতিয়ে দেখে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, চণ্ডীপুর বাজারে বর্তমানে প্রায় দু’হাজারের বেশি দোকানপাট রয়েছে। এ ছাড়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় কয়েক’শো বাড়িঘর রয়েছে। ব্যবসায়ী, কর্মচারি, ক্রেতা ছাড়াও বাসিন্দাদের পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে ভরসা সরকারি ভূগর্ভস্থ জলপ্রকল্প থেকে পাইপলাইনে সরবরাহ করা জল। ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের অভিযোগ, একে তো গরমে জলস্তর নেমে যাওয়ায় জল ঠিকমতো পাওয়া যায় না। তার উপর যা পাওয়া যাচ্ছে তাও পানের অযোগ্য। বাধ্য হয়ে অনেকে নিজেদের খরচে সাব-মার্সিবল পাম্প বসিয়ে পানীয় জলের চাহিদা মেটাচ্ছেন।
এলাকার মানুষের পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক অমিয়কান্তি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সরকারি জল সরবরাহ প্রকল্পটি বহু পুরনো। কয়েক বছর আগে ওই জলপ্রকল্প একবার সংস্কার হয়েছিল। তবে এখন ফের জলের মান নিয়ে বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’ তিনি জানান, নন্দীগ্রামে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর যে বৃহৎ জল সরবরাহ প্রকল্প গড়ছে তাতে চণ্ডীপুর ব্লককে যুক্ত করা হচ্ছে। ফলে আগামী বছরের মধ্যে এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা মিটে যাবে বলে তাঁর আশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy