E-Paper

ভাসল রাস্তা, তিন পঞ্চায়েত যেন দ্বীপ

দীর্ঘ বছর ধরে কার্যত বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো বসবাসকারী এই তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের দাবি ছিল, টাবাগেড়িয়ায় নদীর উপর সেতু গড়তে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৩০
শুক্রবার সকালে ডুবেছে পারাপারের অস্থায়ী সাঁকো।

শুক্রবার সকালে ডুবেছে পারাপারের অস্থায়ী সাঁকো।

কাঁসাই নদীতে জল বাড়ায় জলের তোড়ে ভেসে গেল অস্থায়ী রাস্তা। বন্ধ যান চলাচল। আপাতত ভরসা নৌকো। ব্লক সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অসহায় কার্যত ‘দ্বীপবাসী’ তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষ!

ডেবরা ব্লকের টাবাগেড়িয়া সেতুর অভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে। শুক্রবার এই সত্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের টাবাগেড়িয়া ও ভরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মকারিনপুরের মাঝে কাঁসাই নদীর উপরে অস্থায়ী রাস্তা জলে ভেসে গিয়েছে। এত দিন এই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করছিলেন টাবাগেড়িয়ার উল্টো দিকের ভরতপুর, ভবানীপুর, মালিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা। দীর্ঘ বছর ধরে কার্যত বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো বসবাসকারী এই তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের দাবি ছিল, টাবাগেড়িয়ায় নদীর উপর সেতু গড়তে হবে। এই নিয়ে রাজনৈতিক তরজা কম হয়নি। গত ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এলাকায় গিয়ে এই টাবাগেড়িয়া সেতু গড়তে না পারলে তিনি আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে জানিয়েছিলেন দেব। তার পরে কেটে গিয়েছে পাঁচবছর। সেতু গড়ার কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে দেব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এই টাবাগেড়িয়া সেতু নিয়েই সরব হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী হিরণ। চাপের মুখে এলাকায় গিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী দেব।

এ বার দেব তৃতীয়বার তৃণমূল সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পরে গত ৮ জুলাই কাঁসাই নদীর দু’পারে টাবাগেড়িয়া ও মকারিনপুরে বোর্ড লাগায় প্রশাসন ও পূর্ত দফতর। হয় একটি বৈঠকও। সেখানে প্রশাসন দাবি করে, টাবাগেড়িয়া সেতুর পরিকল্পনা অনুমোদনের পথে। সেতু গড়তে আহ্বান করা হয় জমি বিক্রির সম্মতিপত্র। যদিও দিন কয়েক আগে অস্থায়ী রাস্তায় ধ্বসের পরে এ দিন ওই রাস্তার মধ্যবর্তী অংশ পুরোপুরি জলের স্রোতে ভেসে যাওয়ায় নতুন করে সেতুর দাবি ঘিরে শোরগোল শুরু হয়েছে। ডেবরার বিডিও প্রিয়ব্রত রাঢ়ী বলেন, “নদীতে জল বেড়ে যাওয়ায় টাবাগেড়িয়ার ওই অস্থায়ী রাস্তাটির মধ্যবর্তী অংশ ভেসে গিয়েছে। আমরা দু’পারে জরুরি পারাপারে দু’টি নৌকো রেখেছি। তা ছাড়া আপাতত পাটা দিয়ে মোটরসাইকেল পারাপার করানো হচ্ছে। প্রয়োজনে উঁচু করে বাঁশের সাঁকো করা হবে।”

অবশ্য এভাবে রাস্তা ভেসে যাওয়ায় ব্লক সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ওই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা বিপাকে পড়েছেন। কারণ ওই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কেউ অসুস্থ হলেও তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যাওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১১কিলোমিটার ঘুরপথে লোয়াদা সেতু হয়ে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া
সম্ভব রোগীদের।

সেতু গড়তে প্রাথমিক ভাবে একটি পরিকল্পনা করা হলেও তা অনুমোদন হয়নি। খরচ হবে প্রায় ৩২কোটি টাকা। প্রয়োজন ৩৫৪ জনের জমি। এর মধ্যে ১০৬জন জমি বিক্রির জন্য ইতিমধ্যেই সম্মতিপত্র দিয়েছেন। তবে অধিকাংশ সম্মতিপত্র এসেছে টাবাগেড়িয়ার অপরপ্রান্ত ভরতপুরের দিক থেকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kharagpur Heavy Rainfall

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy