Advertisement
E-Paper

পুনরুদ্ধারে সন্দিহান শুভেন্দু!

লোকসভা ভোটে ধাক্কার পরে জঙ্গলমহলের জেলা পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব বর্তেছে শুভেন্দুর উপরে। সেই সূত্রে জেলায় কর্মী বৈঠকে এসে ‘পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের সর্বনাশ করে দেওয়ার’ দায় ভারতীর ঘাড়েই চাপালেন শুভেন্দু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৯ ০০:১৮

তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দূরত্বের শুরু বছর দেড়েক আগে। একসময় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের ‘সর্বেসবা’ হিসেবে পরিচিত সেই প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে এতদিনে সরব হলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সরাসরিই আনলেন একগুচ্ছ অভিযোগ।

লোকসভা ভোটে ধাক্কার পরে জঙ্গলমহলের জেলা পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব বর্তেছে শুভেন্দুর উপরে। সেই সূত্রে জেলায় কর্মী বৈঠকে এসে ‘পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের সর্বনাশ করে দেওয়ার’ দায় ভারতীর ঘাড়েই চাপালেন শুভেন্দু।

সোমবার মেদিনীপুরে দলের এক বৈঠকে ভারতীর নাম না করে তিনি দাবি করেন, ‘‘ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী, তিনিই এ জেলায় দলের মূল সর্বনাশটা করে দিয়ে গিয়েছেন। ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী বালির গাড়ি থেকে টাকা তুলতেন। তাঁর অফিস রাত দু’টো পর্যন্ত খোলা থাকত। আমাদের দলের নেতাদের তাঁকে ‘মা’ পর্যন্ত বলতে হত। তিনি শুভেন্দু অধিকারীকে এ জেলায় আসতে আটকে দিয়েছিলেন। আমি এলে টাকা তুললে সেটা দেখব। নেত্রীকে বলে দেবো। তাই আটকে দিয়েছিলেন।’’

শুভেন্দুকে পাল্টা বিঁধে ভারতী বলেন, ‘‘এ বার লোকসভায় শুভেন্দু অধিকারী জেলার দায়িত্বে ছিলেন। বিশেষ করে কেশিয়াড়ির। উনি চরম ব্যর্থ হয়েছেন। ওঁর জনপ্রিয়তাও কমে গিয়েছে। নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই এখন ভারতী ঘোষকে দুষছেন।’’ বস্তুত কেশিয়াড়িতে দলের অবস্থা যে ভাল নয়, হারানো শক্তি কতটা পুনরুদ্ধার সম্ভব তা নিয়ে শুভেন্দু নিজেও সন্দিহান। এ দিনের বৈঠকে লোকসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা হয়। সেখানে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এখন কেশিয়াড়ি আর খড়্গপুর সদরে খারাপ অবস্থায় রয়েছি। বাকিগুলো আমরা সবাই মিলে নামলেই রিকভারি করতে পারব। চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ভারতীকে। তারপর ইস্তফা দেন তিনি। পরে বিজেপিতে যোগ দিয়ে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হন তিনি। জেলা পুলিশ সুপার থাকাকালীন তিনি তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে বার বার অভিযোগ করত বিরোধীরা। তিনি চাকরি ছাড়ার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির একের পর এক অভিযোগ আনা হয়। এ বার শুভেন্দু সরাসরি দলের ক্ষতি করে দেওয়ার অভিযোগ করলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘নেপাল সিংহ (শালবনি ব্লক সভাপতি) ওঁর এলাকায় জয়পুরে একটা স্কুলে আমাকে ডেকেছিল। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সম্পাদককে ডেকে বলা হয়, শুভেন্দুকে ডাকবে কেন। শালবনির একটা ক্লাব আমাকে ডেকেছিল। সেই ক্লাবের সম্পাদককে তুলে এনে বলা হয়, শুভেন্দুকে ডাকবে কেন। মেদিনীপুরের কাউন্সিলর বিশু নায়েক বিদ্যাসাগরের মূর্তি বসাবে বলে আমাকে শিক্ষক দিবসে ডেকেছিল। কোতোয়ালি থানার আইসি-কে ওই অনুষ্ঠানের মাইকের তার কেটে দেওয়া হয়। আজকে তার পরিণতি দেখছেন। আমি কিন্তু আমার জায়গায় রয়েছি। আমার মাথা উঁচু করে রয়েছে।’’

ভারতী অবশ্য এ দিনও দাবি করেছেন, ‘‘ভারতী ঘোষ কখনও তৃণমূলের কোনও দায়িত্বে ছিলেন না। ভারতী ঘোষ যে দায়িত্ব নেন, সেখানে একশো শতাংশ সফল হন।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘দলের বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী আমাকে নিয়ে যে সব কথা বলেছেন তা শুনে আমার হাসি পাচ্ছে। খুব দুর্বল মনের মানুষই এই সব কথা বলেন।’’

ভারতীকে দোষারোপের পাশাপাশি এ দিন পুরনো দিনের লড়াইয়ের কথাও মনে করিয়ে দেন শুভেন্দু। ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘বিশ্বাসঘাতক, বেইমান, গদ্দাররা সরকারের ভাল সময়ে সব মধু খেয়ে সময়ে মতো তৃণমূল ও নেত্রীকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিয়েছে।’’ একই সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের আশ্বাস দিয়ে তিনি জানান, ছাত্র রাজনীতি করতে করতেই তাঁর উঠে আসা। তাঁর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করেন। তাই তিনি কর্মীদের ছেড়ে যাবেন না। পুরনো দিনের কথা মনে করিয়ে তিনি জানান, ২০১০ সালে লালগড়ের মিছিলে ৭ জন লোক ছিল। এখন লালগড়ে গেলে ৭ হাজার লোক থাকবে। হাজার হাজার লোক, সাজানো-গোছানো মঞ্চ, ব্যারিকেড, কার্পেট সব সময়ে থাকবে না।

Suvendu Adhikari Bharati Ghosh TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy