Advertisement
E-Paper

ঘরে জল ঢুকবে, ভয়ে উড়েছে ঘুম

সমস্যার মূল যে মজে যাওয়া নিকাশি নালা, তা বোঝে সকলেই। বুঝতে চায় না শুধু পুরসভা। আবর্জনায় শহরের প্রধান নিকাশি নালা দ্বারিবাঁধ খাল কার্যত বুজে যাওয়ায় ধর্মা, পালবাড়ি, শরৎপল্লির মতো মেদিনীপুরের নীচু এলাকাগুলো সামান্য বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৭ ০০:৪৭
জলবন্দি: বেহাল নিকাশিতে ভেসেছে মহাতাবপুর। নিজস্ব চিত্র

জলবন্দি: বেহাল নিকাশিতে ভেসেছে মহাতাবপুর। নিজস্ব চিত্র

ভারী বৃষ্টি হলে যদি ঘরে জল ঢুকে যায়! এই ভয়ে বর্ষা এলে রাতে জেগেই কাটান কাজল পাল, সুস্মিতা রাউতরা!

কাজলদেবীর ছেলে আদৃত পাল জ্বরে ভুগছে। বছর পাঁচেকের আদৃতকে ডাক্তার দেখাতেও নিয়ে যেতে পারছেন না কাজলদেবীরা। বাড়ি থেকে বেরোলেই যে হাঁটু জল। কোনও গ্রাম নয়, মেদিনীপুর শহরের মহাতাবপুরের ছবিটা এমনই।

কাজলদেবীর স্বামী পিনাকীরঞ্জন পালের কথায়, “খালের জল উপচে পুরো এলাকা ভাসছে। বাড়ির কেউ বেরোতে পারছে না। আমিই জল ঠেলে দোকান-বাজার করছি। ডাক্তারকে বলে ছেলের জন্য ওষুধও এনেছি।” আর এক গৃহবধূ সুস্মিতা রাউতের কথায়, “বছর চারেক আগেও একবার জল জমে গিয়েছিল। তবে সে বার দ্রুত জল নেমে গিয়েছিল। খাল মজে যাওয়ায় এ বার জল নামছেই না।”

সমস্যার মূল যে মজে যাওয়া নিকাশি নালা, তা বোঝে সকলেই। বুঝতে চায় না শুধু পুরসভা। আবর্জনায় শহরের প্রধান নিকাশি নালা দ্বারিবাঁধ খাল কার্যত বুজে যাওয়ায় ধর্মা, পালবাড়ি, শরৎপল্লির মতো মেদিনীপুরের নীচু এলাকাগুলো সামান্য বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত মেদিনীপুরে ৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে ওই সব এলাকায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

মেদিনীপুরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মহাতাবপুরে শনিবার সকালে আসেন স্থানীয় কাউন্সিলর সৌমেন খান। কাউন্সিলরকে দুর্দশার কথা জানান বাসিন্দারা। কয়েকজনকে দিন কয়েক অন্যত্র থাকার পরামর্শ দেন সৌমেনবাবু। সুস্মিতাদেবী অবশ্য বলেন, “বাড়ি ছেড়ে যাওয়া অসম্ভব। এলাকায় সাপের উপদ্রব রয়েছে। এক-দু’দিন বাড়ি ফাঁকা থাকলে ঘরে ঢুকে সাপ বাসা বাঁধতে পারে।”

পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক তা মানছেন সৌমেনবাবুও। তাঁর কথায়, “একে বানভাসি পরিস্থিতিই বলা যায়। পুরসভার হেলদোল নেই।”

ধর্মা, পালবাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, নিকাশি নালার সংস্কার করে জল জমা ঠেকানো সম্ভব। অথচ, সেই নিকাশি ব্যবস্থার দিকেই নজর নেই পুরসভার। শনিবার থেকে অবশ্য মহাতাবপুর এলাকায় খাল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। খাল থেকে জমে থাকা আবর্জনা সরানো শুরু হয়েছে। কিন্তু শহরবাসীর একাংশের প্রশ্ন, ‘‘এক জায়গায় খাল সংস্কার করে কী হবে। নিকাশি নালা সামগ্রিকভাবে পরিষ্কার না হলে জল জমার সমস্যা ঠেকানো যাবে না।’’

পুরসভার বক্তব্য, দ্বারিবাঁধ খালের একাংশ সংস্কার হয়েছে। বাকি অংশও সংস্কার হবে। মেদিনীপুরের উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসের কথায়, “নীচু এলাকাগুলোয় কিছু সমস্যা রয়েছে। সব এলাকায় হয়তো সমান নিকাশি ব্যবস্থা নেই। তবে পুরসভার তৎপরতার অভাব নেই।’’

drainage Waterlogged Midnapore মেদিনীপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy