হিরণ এবং দিলীপ। ফাইল চিত্র।
লড়াই ছিল খড়্গপুর পুরসভা দখলের। পুরভোটের ফল বলছে, শুধু তৃণমূলের কাছে পর্যুদস্ত হওয়াই নয়, দ্বিতীয় স্থানও ‘নিরঙ্কুশ’ করতে পারেনি বিজেপি।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বৃহত্তম পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিতে জিতে এ বার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তৃণমূল। বিজেপি এবং কংগ্রেস দু’দলই জিতেছে ৬টি করে ওয়ার্ডে। তা ছাড়া বামেরা ২টি এবং নির্দল ১টি ওয়ার্ডে জিতেছে। অর্থাৎ কংগ্রেস এবং বাম একত্রে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি-র চেয়ে।
অথচ মাত্র ১০ মাস আগে নীলবাড়ির লড়াইয়ের সময় খড়্গপুরের ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৬টিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি। পুরসভা এলাকা নিয়ে গঠিত খড়্গপুর সদর বিধানসভা কেন্দ্রে ৩,৭৭১ ভোটে জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থী হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় (অভিনেতা হিরণ)। এ বার পুরভোটে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী হয়ে হিরণ জিতলেও তাঁর দলের ফল ভাল হয়নি। অন্য দিকে, বিধানসভা ভোটে সংযুক্ত মোর্চার কংগ্রেস প্রার্থী মাত্র সাড়ে ছ’শতাংশ ভোট পেলেও এ বার ‘হাত’ চিহ্নের প্রার্থীরা ৬টি ওয়ার্ড জিতে নিয়েছেন। সেই সঙ্গে বামেরা জিতেছে ২টিতে।
বিজেপি-র এমন ফলাফল সম্পর্কে হিরণ বলেন, ‘‘পুরসভা নির্বাচন আর বিধানসভা নির্বাচন আলাদা। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কারণে আমি সেখানেই মাটি আঁকড়ে পড়েছিলাম। ২২ বছরের কাউন্সিলার তৃণমূলের জহরলাল পালের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল। মাত্র ১০ মাস খড়্গপুর এসেছি। ৭০ বছর বয়স্ক জহরলালকে হারানো চ্যালেঞ্জ ছিল। তাই ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বার হতে পারিনি। আর যিনি মুখ ছিলেন, তাঁকে প্রশ্ন করুন।’’
এ ক্ষেত্রে হিরণ ‘মুখ’ বলে চিহ্নিত করে মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষকে খোঁচা দিতে চেয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপি-র অন্দরে দু’জনের সম্পর্ক যথেষ্টই ‘মধুর’। ঘটনাচক্রে, খড়্গপুর সদরের প্রথম বিজেপি বিধায়ক ছিলেন দিলীপ। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জ্ঞান সিংহ সোহনপালকে হারিয়েছিলেন তিনি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে খড়্গপুর সদরে ৪৫ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিলেন দিলীপ। যদিও তার পর উপনির্বাচনে খড়্গপুর পুর এলাকা নিয়ে গঠিত এই কেন্দ্রটি গিয়েছিল তৃণমূলের দখলে।
বিধানসভা নির্বাচনে হিরণের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ২৬৫ ভোট এগিয়ে ছিল তৃণমূল। সেখানে এ বার ১৬৯ ভোট জিতেছেন বিজেপি বিধায়ক। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের সময়টা আলাদা। তখন ২৬টা ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে ছিল। পুরসভা নির্বাচনে ৬টি আসনে বিজেপি জিতেছে। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড এগিয়ে থাকলেও মানুষ প্রার্থীকে হয়তো পছন্দ করেনি। অন্য একটি ওয়ার্ডে ওই প্রার্থীর বৌমা নির্দল প্রার্থী হওয়ায় হয়তো মানুষ ভাল চোখে দেখেনি।’’
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট ঘাটাল এবং খড়ার পুরসভা এলাকায় এগিয়ে ছিলেন। ঘাটালে ১৭টির মধ্যে ৮টি এবং খড়ারে ১০ টির মধ্যে ৮ টিতে এগিয়েছিল। পুরসভা নির্বাচনে শুধুমাত্র খড়ার পুরসভায় দু’টি ওয়ার্ডে জিতেছে বিজেপি। শীতল বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের ফল দেখে আত্মবিশ্বাসী আবেগ ছিল দলের কর্মীদের মধ্যে। তাঁরা ভেবেছিলেন এ বারেও হয়তো জিতে যাবেন। কিন্তু তা হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy