Advertisement
৩১ মার্চ ২০২৩
West Bengal Lockdown

বাজার সরলেও প্রশ্ন সেই ভিড়েই 

এই সময়ে দূরত্ব রেখে বাজার করা উচিত। কিন্তু অনেকে তা করছিলেন না।

রাজাবাজার উঠে এল কলেজ-কলেজিয়েট মাঠে। তবে কমল না ভিড়। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

রাজাবাজার উঠে এল কলেজ-কলেজিয়েট মাঠে। তবে কমল না ভিড়। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০ ০১:৫৪
Share: Save:

ভিড় এড়াতে মাঠে সরল বাজার। কিন্তু ভিড় কি এড়ানো যাচ্ছে। প্রশ্নটা রয়েই গেল!

Advertisement

প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত মতো রবিবার মেদিনীপুর শহরের কয়েকটি বাজার আশেপাশের মাঠে সরে যায়। কিন্তু ওই মাঠেও গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আনাজপাতি কিনেছেন অনেকে। মাঠের বাজার পরিদর্শনে এসে সেই ছবি দেখেছেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরা। তবে মাঠের মতো খোলামেলা জায়গায় বাজার সরায় খুশি শহরবাসী।

এই সময়ে দূরত্ব রেখে বাজার করা উচিত। কিন্তু অনেকে তা করছিলেন না। ঘিঞ্জি বাজারগুলি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রশাসনের কাছেও। সব দিক দেখে শনিবার এক প্রশাসনিক বৈঠকে বাজারগুলি আশেপাশের মাঠে সরানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো শহরের বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠের (বালক) মাঠে সরেছে কোতোয়ালি বাজার। বাজার করতে এ দিন মাঠে এসেছিলেন শহরের প্রাক্তন নির্দল কাউন্সিলর বিশ্বেশ্বর নায়েক। বাড়ি ফেরার পথে বিশ্বেশ্বর বলছিলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া উচিত ছিল।’’

রবিবার থেকে রাজাবাজার সরেছে কলেজ- কলেজিয়েট স্কুল মাঠে। গেটবাজার সরেছে বিধাননগর মাঠে। স্কুলবাজার সরেছে ধর্মশালার মাঠে (হীরক শিশু সঙ্ঘ)। মির্জাবাজার অবশ্য সরানো হয়নি। প্রশাসনের দাবি, এখানে দোকানগুলির মধ্যে অন্তত ২০ ফুট দূরত্ব রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

শনিবার বৈঠকেই ঠিক হয়েছিল, রবিবার সকালে মাঠে গিয়ে বাজারগুলির পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখবেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। সেই মতো মাঠের বাজারগুলি পরিদর্শন করেছে জেলা প্রশাসনের দল। সঙ্গে ছিল পুলিশও। দলে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক উত্তম অধিকারী, মহকুমাশাসক (সদর) দীননারায়ণ ঘোষ, বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, পার্থ ভৌমিক, পার্থপ্রতীম দাস প্রমুখ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। ওই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটদেরই কালোবাজারি রুখতে বাজারে নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

পরিদর্শনে গিয়েও দূরত্ব রাখার আর্জি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক উত্তমকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘ফাঁকা ফাঁকা করে দাঁড়ান। একসঙ্গে ভিড় করবেন না।’’ পরে উত্তম বলছিলেন, ‘‘সবদিক দেখেই আমরা বাজারগুলি আশেপাশের মাঠে সরিয়েছি। জনস্বার্থেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’

কিন্তু ক্রেতাদের সকলে কি সচেতন? উত্তম বলেন, ‘‘এ নিয়ে সর্বস্তরে সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, খড়্গপুর, ঘাটালের মতো শহরগুলির বাজারও আশেপাশের মাঠে সরানোর পরিকল্পনা চলছে।

পাশের জেলা ঝাড়গ্রামে অবশ্য অন্য ছবি। অরণ্যশহরের ঘিঞ্জি আনাজ বাজার ও মাছের বাজার সরানোর দাবি তুলেছেন একাংশ বাসিন্দা। তাঁরা জানাচ্ছেন, শহরের অদূরে জামদায় কিসান বাজার তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। সেখানে জেলা কৃষি দফতরের কার্যালয় রয়েছে। বড় বাজার চত্বরটি ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। শহরের ঘিঞ্জি বাজার সেখানে সরানোর দাবি উঠেছে৷

বছর চারেক আগে দহিজুড়ি- ঝাড়গ্রাম সড়কের ধারে কিসান বাজারটি তৈরি করা হয়েছিল। এদিকে ঝাড়গ্রাম শহরের জুবিলি বাজারে রয়েছে মাছের পাইকারি ও খুচরো দোকান। লাগোয়া রেল মার্কেটে রয়েছে আনাজের সার সার দোকান। লকডাউনের মধ্যেও সকাল হলেই ঘিঞ্জি বাজারে ক্রেতারা ভিড় করছেন। পুলিশের নজরদারি সত্ত্বেও আনাজ ও মাছের বাজারের সরু গলিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনও উপায় কার্যত নেই। শহরে বাজার বসানোর মতো ফাঁকা জায়গা নেই। তাই কিসান বাজারটি ব্যবহার করা হবে কি না তা নিয়ে প্রশাসনিকস্তরেও আলোচনা শুরু হয়েছে। জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘বাজার সরানোর এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সবদিক বিবেচনা করে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.