Advertisement
E-Paper

একে প্রার্থী বদল, তায় বহিরাগত কাঁটা

বদলটা শুরু হয়েছিল নন্দীগ্রামের ঢেউ দিয়েই। সেই নন্দীগ্রামের জেলায় তৃণমূল এখন নিরঙ্কুশ। কিন্তু শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এ বারও জেলা বিরোধী-শূন্য থাকবে তো!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৬ ০১:৪৭

বদলটা শুরু হয়েছিল নন্দীগ্রামের ঢেউ দিয়েই। সেই নন্দীগ্রামের জেলায় তৃণমূল এখন নিরঙ্কুশ। কিন্তু শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এ বারও জেলা বিরোধী-শূন্য থাকবে তো!

এই আশঙ্কার অন্যতম জেলার প্রার্থীদের আসন বদল এবং বহিরাগতদের গুরুত্ব দান। শুভেন্দু অধিকারীকে নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড় করানোর কথা মমতা আগেই ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু এ বার মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে তমলুক কেন্দ্র থেকে সরিয়ে তিনি দাঁড় করিয়েছেন পাশের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা কেন্দ্রে। আর এক শুভেন্দু বিরোধী হলদিয়ার বিধায়ক শিউলি সাহাকে টিকিট দেওয়া হয়েছে পশ্চিমেরই কেশপুর কেন্দ্রে। শিউলি অনুগামীদের প্রভাব পূর্ব মেদিনীপুর জেলা রাজনীতিতে তেমন নেই। তবে শুভেন্দু-গোষ্ঠীর সঙ্গে রীতিমতো পাল্লা দেয় সৌমেন অনুগামীরা। ফলে, এই সিদ্ধান্তে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠরা ক্ষুব্ধ। তার প্রভাব ভোটের ফলে পড়বে বলেও তৃণমূলের একাংশ আশঙ্কা করছেন।

তৃণমূলের দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুক বিধানসভায় মন্ত্রী সৌমেনবাবুকে প্রার্থী করার ক্ষেত্রে দলের একাংশের আপত্তি পৌঁছেছিল তৃণমূল নেত্রীর কাছে। তমলুক বিধানসভার অধীন শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে সৌমেন-অনুগামী চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে ক’দিন আগেই অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল সৌমেন বিরোধী শিবিরের দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যরাই। ঘটনাচক্রে শুক্রবারই ওই চার প্রধানের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হয়েছে। তৃণমূলের অন্দরে এই গোষ্ঠী-বিরোধের জেরে সৌমেনবাবুকে ফের তমলুক বিধানসভায় প্রার্থী করা হলে তাঁর জেতা নিঃসংশয় ছিল না।

ক্ষোভ রয়েছে বহিরাগত প্রার্থী নিয়েও। মহিষাদল থেকে জেতা সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার গত পাঁচ বছরে এলাকায় বিশেষ না আসায় স্থানীয় স্তরে ক্ষোভ ছিল। তবে এ বারও তাঁকে ওই কেন্দ্রেই প্রার্থী করা হয়েছে। আর তমলুকে প্রার্থী করা হয়েছে আর এক বহিরাগত নির্বেদ রায়কে। তবে নির্বেদবাবু এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছেন। সম্পর্কে তিনি আবার তমলুকের জামাই। তবু তাঁর বহিরাগত তকমা থাকছেই।

দীর্ঘ ১০ বছর পরে এ বার ফের বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। আর জেলার ১৬টি আসনের মধ্যে নন্দীগ্রাম, তমলুক, হলদিয়া, ময়না আসনে প্রার্থী বদল হয়েছে। ফিরোজা বিবির বদলে এ বার নন্দীগ্রামে প্রার্থী হচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। ফিরোজা বিবিকে প্রার্থী করা হয়েছে পশ্চিম পাঁশকুড়ায়। তমলুকের বিধায়ক তথা রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে এবার প্রার্থী করা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায়, হলদিয়ার বিধায়ক শিউলি সাহাকে এবা র প্রার্থী করা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে। জেলার বাকি বিধানসভাগুলিতে বর্তমান বিধায়করাই ফের প্রার্থী হচ্ছেন।

এ বারের ভোটে তৃণমূল শিবিরের উদ্বেগ ইতিমধ্যে বাড়িয়েছে সিপিএম-কংগ্রেসের হাত ধরাধরি। তবে নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট করা নিয়ে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।’’

নির্বাচন কমিশনের কড়াকড়িতে বিরোধীরা অবশ্য আশান্বিত। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি অবলেন, ‘‘পুরভোটে তৃণমূলের সন্ত্রাসে জনগণের রায় প্রতিফলিত হয়নি। এ বার নির্বাচন কমিশন যে ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করার কথা বলছে তা কার্যকর হলে সাধারণ মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে বলে আশা করা করছি।’’ একই সুরে জেলা কংগ্রেস সভাপতি আনোয়ার আলির বক্তব্য, ‘‘নির্বাচন কমিশন যে ভাবে ভোটগ্রহণ করার জানিয়েছে এতে তৃণমূলের সন্ত্রাস কিছুটা হলেও বন্ধ হবে। ’’

TMC east midnapore election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy