সরেজমিন: ঘাটালের প্রতাপুরে সেচ কর্তাদের নিয়ে বাঁধ পরিদর্শন করছেন সেচমন্ত্রী। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
এক সপ্তাহের মধ্যে ভাঙা বাঁধ মেরামতি করতে দফতরের কর্তাদের নির্দেশ দিলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন নদীর বাঁধ গুলি কী অবস্থায় আছে তার বিস্তারিত রিপোর্ট চাইলেন তিনি।
ঘাটালের প্রতাপপুরে শিলাবতী নদীর ভেঙে যাওয়া বাঁধের মেরামতির কাজ দেখতে শুক্রবার ঘাটালে এসেছিলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঁধ মেরামতির তদারকিতে এখন সেচ র্তারা ঘাটালেই ক্যাম্প করে রয়েছেন। এদিন সকাল সাড়ে বারোটা নাগাদ সেচ দফতরের বাংলোয় দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন সেচমন্ত্রী। বৈঠকে দু’টি কাজের উপর জোর দেওয়া হয়। এক, প্রতাপপুরের ভাঙা বাঁধ দ্রুত মেরামতি এবং দুই, নতুন করে যাতে আর এই পরিস্থিতি তৈরি না হয় তার জন্য সমস্ত নদীবাঁধগুলি এখনই শক্তপোক্ত করতে নির্দেশ দান। মন্ত্রীর নির্দেশে আগামী সোমবার থেকেই দফতরের একটি বিশেষ টিম ঘাটালকে ঘিরে থাকা মোট ১৫৩ কিলোমিটার নদীবাঁধের হাল পরিদর্শনের কাজ শুরু করবেন। বাঁধগুলি উঁচু করে বাঁধার পাশাপাশি বাঁধের উপর দখলদারদের সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টিতেও এ দিনের বৈঠকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেচ মন্ত্রী ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দলুই এবং মহকুমা শাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধানকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন। পরে তিনি বলেন, “আশা করছি বাঁধ ভেঙে ঘাটালের মানুষকে আর দুর্ভোগে পড়তে হবে না। আমরা আগেও সতর্ক ছিলাম। কিন্তু নাগাড়ে বৃষ্টি ও সেইসঙ্গে ডিভিসির জল ছাড়ার কারণেই এই পরিস্থিতি হয়েছে।” এ দিন ফের ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রী বলেন, ‘‘জনপদ বাঁচাতে গেলে ওই প্ল্যানের কাজ শুরু করা জরুরি। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও উদ্যোগী। আমি ফের কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলব।”
এদিন নৌকায় চেপে সেচমন্ত্রী প্রতাপপুরে যান। সেখানে ঘণ্টখানেক থেকে কাজের তদারকি করেন। সেচ দফতর সূত্রে খবর, আপাতত ১৬০ মিটার বাঁধ বাঁধা হচ্ছে। আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে কাঠের গুঁড়ি নদীতে পোঁতা হচ্ছে। ২৬ ফুট কাঠের গুঁড়িকে আঠারো থেকে কুড়ি ফুট মাটির নীচে ঢুকিয়ে তার উপর নাইলনের দড়ির নেট করা হচ্ছে। নেটের উপর মাটির বস্তা দিয়ে বাঁধা হবে বাঁধ। রাতে কাজের জন্য নদীর দুই পাড়ে এবং নৌকাতেও জেনারেটর দিয়ে আলোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে। দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (দক্ষিণ-পশ্চিম বিভাগ) অনীশ ঘোষ বলেন, “ভেঙে যাওয়া অংশ উঁচু করেই বাঁধা হচ্ছে। এবার নদীর জল বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইলেও বাঁধ জল ধরে রাখতে সক্ষম হবে। নদীপাড় থেকে সবাই সরে গেলে সমস্ত বাঁধই এরকম করে বাঁধা হবে।”
সেচমন্ত্রী বলেন, “দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। মাঝেমধ্যে বৃষ্টিতে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তবে দিনরাতই কাজ হবে। সাতদিনের মধ্যেই যাতে মেরামতির কাজ শেষ হয় তার নির্দেশ দিয়েছি। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই মেরামতি হয়ে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy