E-Paper

দেবী দুর্গার আরাধনায় ভরসা লক্ষ্মীর ভান্ডার

স্থানীয় সূত্রের খবর, কেশাপাটে বড় আকারে দুর্গা পুজো হয়। সেখানে যেতে যশোড়ার গ্রামবাসীকে বাসে জিয়াখালি পেরিয়ে কেশাপাট যেতে হয়।

সৌম্য প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:২১
কাজ শুরু হয়েছে পুজোর মণ্ডপ বানানোর।

কাজ শুরু হয়েছে পুজোর মণ্ডপ বানানোর। নিজস্ব চিত্র।

সরকারি প্রকল্পের ভাতার টাকা দিয়ে ‘উমা’কে ঘরে আনার তোড়জোড় শুরু করেছেন ‘মা লক্ষ্মী’রা!

রাজ্যের মহিলাদের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পে আর্থিক সাহায্য করে সরকার। এই প্রকল্পে প্রতি মাসে মহিলাদের এক হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। ওই টাকা দিয়েই পাঁশকুড়ার যশোড়া এলাকার একটি ক্লাবের পুজোর আয়োজনে সাহায্য করছেন মহিলার।

স্থানীয় সূত্রের খবর, কেশাপাটে বড় আকারে দুর্গা পুজো হয়। সেখানে যেতে যশোড়ার গ্রামবাসীকে বাসে জিয়াখালি পেরিয়ে কেশাপাট যেতে হয়। প্রায় তিন কিলোমিটার ওই পথ পেরিয়ে পুজো দিতে আসা ঝক্কির। গ্রামবাসীর সুবিধার্থে ২০২৩ সালে যশোড়ার স্থানীয় ক্লাবের উদ্যোগে বাস স্ট্যান্ড এলাকায় একটি পুজো শুরু হয়। গত দু’বছর গ্রামবাসী চাঁদা তুলে পুজো করেন। তবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে এ বার অর্থ সঙ্কটে পড়ে পুজো কমিটি।

ওই পুজোটি তুলনামূলক ভাবে নতুন হওয়ায় মিলছে না সরকারি অনুদান। কারণ, অনুদান পেতে হলে পুজো কমিটিকে অন্তত ১০ বছরের পুরনো হতে হবে। এই পরিস্থিতিতে দিন কুড়ি আগে ক্লাবের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এ বছর পুজো বন্ধ রাখা হবে। পুজো কমিটির সভাপতি অনিল বেরা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা অনুদান দিচ্ছেন। আমাদের পুজোর ১০ বছর না হওয়া, তা পাব না। এ দিকে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সমস্যায় পড়েছি।’’

পুজো বন্ধ হওয়ার কথা জানতে পারেন এলাকার মহিলারা। তখন ত্রাতা হিসাবে তাঁরা আসরে নামেন। জানান, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পে নিজেদের পাওয়া টাকা পুজোর আয়োজনে দিয়ে দেবেন। মহিলাদের এই সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষ ফের পুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। এক পুজোর উদ্যোক্তা শীলা বেরা বলেন, ‘‘এ বছর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা থেকে সকল মহিলা এক হাজার টাকা করে পুজোর জন্য অনুদান দেব। অনেক মহিলাই তার চেয়ে বেশি টাকা দেবেন বলেছেন।’’

পুজো কমিটি সূত্রের খবর, এ বছর তাঁরা প্রায় চার লক্ষ টাকা বরাদ্দ ধরেছে। এর মধ্যে অর্ধেক টাকাই আসছে মহিলাদের কাছ থেকে। স্থানীয় বাসিন্দা মৌসুমী মাঝির কথায়, ‘‘গত বছরগুলিতে নিজেদের বাড়ির পুজোর মতো করে এই পুজো আমরা উপভোগ করতাম। অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা শুনে মন খারাপ হয়েছিল। তখনই আমরা এগিয়ে এসে পুজোটাকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’’

আপাতত শেষ বেলায় জোরকদমে চলছে মণ্ডপ বাঁধার কাজ। সেই সমস্ত কাজের দেখভালে নেমে পড়েছেন গ্রামের মহিলারা। খুব বড় না হলেও সাবেকি ভাবে এই পুজো হওয়ায় খুশি এলাকাবাসীও। পুজো কমিটির সভাপতি অনিলের কথায়, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডারের দৌলতেই এ বছরের পুজোটা করা সম্ভব হল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panskura Durga Puja 2025

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy